৬ মাসেরও বেশি সাগরে ভাসার পর অবশেষে ডাঙা পেল ৩০০ রোহিঙ্গা শরণার্থী!
Odd বাংলা ডেস্ক: নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে অজানার উদ্দেশে পাড়ি জমিয়েছিলেন ওরা। তারপর টানা ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে কূল-কিনারাহীন উত্তাল সমুদ্রে ভেসেছিলেন। ভয়াবহ যাত্রার পথে চোখের সামনে একের পর এক সঙ্গীকে মৃত্যুর কোলে লুটিয়ে পড়তে দেখেও মনোবল হারাননি। শেষ পর্যন্ত সোমবার (০৭ সেপ্টেম্বর) ইন্দোনেশিয়ার আচেহ উপকূলে পৌঁছে ডাঙায় পা রাখার সৌভাগ্য অর্জন করলেন ২৯৭ জন রোহিঙ্গা শরণার্থী দলটি।
জীবন সংগ্রামে ক্লান্ত আর অবসন্ন হয়ে পড়া ২৯৭ জন শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়ার মতো মানবিকতা দেখানোর জন্য ইন্দোনেশিয়ার সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, গত মার্চ মাসের দিকে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় আশ্রয়ের জন্য পাড়ি জমিয়েছিল তিনশোর বেশি শরণার্থী। নৌকায় চেপে বেরিয়ে পড়েছিল নতুন আশ্রয়ের সন্ধানে। কিন্তু তারপর এক অবর্ণনীয় পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে হয়েছে তাদের। করোনার কারণে রোহিঙ্গাদের ঢুকতে দেওয়ার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল মালয়েশিয়া এবং ইন্দোনেশিয়ার সরকার। ফলে মাঝ সমুদ্রে নৌকাতেই জীবন কাটাতে হয়েছে ওই শরণার্থীদের।
অবশেষে সোমবার সকালে ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপের উত্তর অবস্থিত উজং ব্লাং গ্রামের কাছে সমুদ্র সৈকত থেকে কিছুটা দূরে একটি কাঠের নৌকা ভাসতে দেখেন স্থানীয় মৎস্যজীবীরা। খোঁজখবর নিতে গিয়ে তাঁরা জানতে পারেন, গত ৬ মাস ধরে সমুদ্রেই ভেসে বেড়াচ্ছেন নৌকার যাত্রীরা। মানবিকতা দেখিয়ে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নৌকাটিকে আচেহ প্রদেশের সৈকতে নিয়ে যান তাঁরা। খবর পেয়ে পুলিশ এসে অসহায় শরণার্থীদের উদ্ধার করে একটি অস্থায়ী ত্রাণশিবিরে নিয়ে যায়। সেখান থেকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
ওই এলাকার সেনাবাহিনীর দায়িত্বে থাকা রনি মহেন্দ্র সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, উদ্ধার হওয়া শরণার্থীদের মধ্যে ১৮১ জন মহিলা, ১০২ জন পুরুষ এবং ১৪ শিশু রয়েছে। তাদের মধ্যে একজনের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে দ্রুত স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
অসহায় রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য ইন্দোনেশিয়ার সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর-এর এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের পরিচালক ইন্দ্রিকা রাতওয়াত্তে বলেছেন, '২০০ দিনেরও বেশি সময় সাগারে কাটানো রোহিঙ্গা দলটি বারবার তীরে নামার চেষ্টা করার পরেও তা সম্ভব হচ্ছিল না। ইন্দোনেশিয়া সরকার রোহিঙ্গা শরণার্থী দলটির জীবন রক্ষা করায় তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
Post a Comment