রাষ্ট্রপতির নিরাপত্তা প্রটোকল ভেঙে সেবার 'দাদা' প্রণবের জন্য মাছ রেঁধেছিলেন হাসিনা



Odd বাংলা ডেস্ক: রক্তের সম্পর্ক নেই। তবুও যেন দু’জনের সম্পর্ক জন্ম-জন্মান্তরের। প্রথমজন দ্বিতীয়জনকে নিজের ছোট বোন হিসেবেই স্নেহ করতেন। আর সব পরিজন হারানো দ্বিতীয়জন প্রথমজনকে নিজের ‘বড়দা’ বলেই মান্য করতেন। দীর্ঘ সাড়ে চার দশকের সেই সম্পর্কে ইতি ঘটল সোমবার সন্ধ্যায়। অনির্দিষ্টের অচিনপুরে পাড়ি দিয়েছেন প্রথমজন। অর্থা‍ৎ ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি। প্রিয় দাদার মৃত্যুর খবর পেয়ে শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়েছেন দ্বিতীয়জন। তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রণব মুখার্জির মৃত্যুতে বাংলাদেশে একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে। ২০১৩ সালে বাংলাদেশে এসেছিলেন ভারতের ত‍ৎকালীন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি। 

প্রটোকল ভেঙে সেবার ‘দাদা’ প্রণবের জন্য নিজের হাতে রান্না করেছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দাদার পাতে সাজিয়ে দিয়েছিলেন রুই মাছের কালিয়া, তেল কই, চিতলের পেটি, সরষে দিয়ে ছোট মাছের ঝাল আর গলদা চিংড়ির মালাইকারি। শেষ পাতে ছিল পায়েস। বোন শেখ হাসিনার রান্না সেই পায়েস খেয়ে দিল্লির ফিরতি বিমান ধরেছিলেন দাদা প্রণব মুখোপাধ্যায়। তার চার বছর বাদে ২০১৭ সালের এপ্রিল মাসে রাষ্ট্রীয় সফরে দিল্লি গিয়েছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। ‘দাদার’ আতিথ্য গ্রহণ করে রাইসিনা হিলে রাষ্ট্রপতি ভবনে উঠেছিলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা। ‘আদরের’ বোনের সম্মানে ৯ এপ্রিল শনিবার এক নৈশভোজের আয়োজন করেছিলেন দাদা প্রণব মুখোপাধ্যায়। সেই নৈশভোজের আসরে হাতেগোনা কয়েকজনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তার মধ্যে ছিলেন ‘দাদা’ ও ‘বোন’ দু’জনেরই কাছের মানুষ তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। 

 তাঁর সম্মানে নৈশভোজের আয়োজন করা হলেও ‘দাদাকে’ নিজের হাতে রেঁধে খাওয়ানোর সুযোগ হাতছাড়া করতে চাননি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। ভারতের রাষ্ট্রপতিকে রেঁধে খাওয়ানোর জন্য সঙ্গে নিয়েছিলেন বাছাই করা ত্রিশ কেজি ইলিশ মাছ। আর সঙ্গে নিয়েছিলেন দেশের সেরা ছয় রাঁধুনিকে। রাইসিনার হেঁশেলে ঢুকে নিজের হাতেই দাদার প্রিয় ভাপা ইলিশ রেঁধেছিলেন শেখ হাসিনা। শুধু নিজের হাতে রান্না করে ভাপা ইলিশই খাওয়াননি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, প্রিয় দাদার হাতে তুলেও দিয়েছিলেন ঢাকাই মসলিনের পাঞ্জাবি। সোমবার সেই মধুর সম্পর্কে চিরতরে যতি পড়ে গেল।
Blogger দ্বারা পরিচালিত.