রহস্যময় গাছ, বড় হয় ঠিকই কিন্তু বেঁকে যায়!
Odd বাংলা ডেস্ক: রহস্যময় পৃথিবীর জন্মলগ্ন থেকে বেশ রহস্যাবৃত রয়েছে। সে সবের অনেক কিছুরই কারণ এখনো বিজ্ঞানীরা বের করতে পারেনি। তেমনই এক রহস্য কানাডার স্যাসকাচোয়ানে। সেখানকার হাফর্ড শহর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে এবং আলটিকেনের ঠিক পাঁচ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত এক জঙ্গল রয়েছে।
অবাক করা বিষয় হলো, সেখানকার সব গাছের গোঁড়ার দিকটা বাঁকানো। এটি ১৯৪০ সালের দিকে প্রথম এই বিষয়টি সবার নজরে আসে। বিজ্ঞানীদের মতে, এটি গাছের একটি জিনগত সমস্যা। তবে কীভাবে এই রূপান্তরটি হয়েছে তাও বিজ্ঞানীরা নিশ্চিতভাবে বলতে পারেনি।
স্থানীয় জনশ্রুতি আছে, বজ্রপাতের কারণে গাছগুলোর এই অবস্থা। আবার অনেকের মতে, এই অঞ্চলের মানুষ পশু পালন করত। তাদের ধারণ ছিল গাছের নিচ দিয়ে গরু-ছাগল-ভেড়া ইত্যাদি নিয়ে গেলে তাদের অমঙ্গল হবে। এই ভেবে তারা সেখান দিয়ে পশু নিয়ে যাওয়ার সময় ছোট গাছগুলোর গোঁড়ায় পাড়া দিয়ে চলে যেত। এতে গাছগুলো গোঁড়া থেকে হেলে পড়ত।
গাছগুলো দেখলে মনে হবে কেউ যেন একে ইচ্ছা করে মচকে দিয়েছে। তবে বিজ্ঞানীরা মনে করেন, এখানকার মাটির জন্য আর উদ্ভিদের জিনগত বৈশিষ্ট্যের কারণে এর গোঁড়া বেঁকে গেছে। এই গাছগুলো গোঁড়ার দিক থেকে বড় হয়। তাই উপর থেকে গাছগুলো সরু হয়ে বেঁকে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দারা ১৯৪০ এর দশকে প্রথম এই গাছগুলো দেখতে পায়। এর আগে ঘন জঙ্গল হওয়ায় সেখানে কেউ যেত না। তবে এখন বছরে হাজারো দর্শনার্থীরা এই গাছগুলো দেখতে ভিড় জমায়। কৌতূহল মেটাতে গাছে বসে ছবিও তোলে।
কয়েক বছর আগে, স্থানীয় পর্যটন বোর্ডের সহায়তায় দর্শনার্থীদের জন্য কাঠের হাঁটার রাস্তা করে দেয়া হয়। যাতে হাঁটার সময় গাছের কোনো ক্ষতি না হয়। আর নতুন গাছও জন্মাতে পারে। হাফর্ডের মেয়র রন কোয়ালচুক বলেন, আমরা আশা করি লোকেরা বুঝতে পারে যে এটি সংরক্ষিত একটি অঞ্চল। তারাও এখানকার বিধি নিষেধ মেনে চলবে।
এই গাছগুলোকে বলা হয় ক্রুকড ট্রি বা ক্রুকড বুশ। একেকটা গাছ ১৫ থেকে ২০ ফুট লম্বা এবং প্রায় ৭০ বছর বয়সী। সাধারণ অ্যাস্পেন গাছ সাধারণত ১৫ বছর পরে এই উচ্চতায় পৌঁছে যায়। সত্যিকার অর্থেই উদ্বেগজনক বিষয়টি হলো, গাছগুলো স্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাদের শাখাটি সরাসরি সোজা হচ্ছে না ঠিকই কিন্তু অন্য সব দিকেই বাড়ছে।
এই গাছগুলোতে অন্যান্য গাছের মতো সব বৈশিষ্ট্যই রয়েছে। শুধু এই ভিন্নতা ছাড়া। বিজ্ঞানীরা এখনো এই গাছ নিয়ে তাদের গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিভিন্নভাবে এর কারণ ভেদ করার চেষ্টা করছেন। তারা অনুমান করে নয় বরং এর রহস্য উন্মোচন করতে চান। যাতে বিশ্ববাসী জানতে পারে কেন এই গাছগুলো এমন।
Post a Comment