ভারতের এই নৃশংস উৎসবে চলে রক্ত ঝরানোর প্রতিযোগিতা



Odd বাংলা ডেস্ক: ভারত একটি পৌরাণিক কাহিনী, ইতিহাস ও ঐতিহ্যের দেশ। ভারতবর্ষের অনেক মানুষ হাজারো দেব-দেবীদের উপাসনা করে। আর এই উপাসনা করার জন্য এই দেশে প্রতি বর্গ কিলোমিটার অন্তর একটি মন্দির রয়েছে। 

এসব মন্দিরে বিভিন্ন ধরণের উৎসব হয়ে থাকে। যার বেশিরভাগই বিষ্ময়কর। তেমনি এক উৎসব সম্পর্কে আজ আপনাদের জানাবো। এই উৎসবে মাথা থেকে রক্ত ঝরিয়ে প্রতিমাকে খুশি করা হয়। হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছেন। তেমনটাই হয়েছে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের কর্নুল জেলার দেবরগট্টু মন্দিরে। 

১৯২০ সাল থেকে এই মন্দিরের ভক্তরা তাদের শরীরের রক্ত ঝরিয়ে প্রতিমাকে খুশি করেন। প্রতি দশমীর রাতে, এই মন্দিরে প্রচণ্ড উদ্দীপনা দেখা যায়। শত শত মানুষ মন্দিরে জড়ো হয়ে জ্বলন্ত মশাল এবং লম্বা লাঠি নিয়ে একে অপরের মাথায় আঘাত করে।

ঠিক রাত ১২টায় অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। সেখানে ভক্তরা একে অপরের মাথায় লাঠি দিয়ে আক্রমণ শুরু করে। লাঠির লড়াইয়ে আহত ব্যক্তিদের যে রক্ত মাটিতে ছড়িয়ে পড়ে তা প্রভুর কাছে নৈবেদ্য হিসেবে বিবেচিত। ভোর অবধি তারা এই নৃশংস উৎসবে মেতে উঠে। ভগবান শিবের হাতে এক অসুরের নিধনকে কেন্দ্র করে এই উৎসব পালিত হয়। 


এই উৎসব সম্পর্কে মন্দিরের পুরোহিত জানান, ১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এই উৎসবটি চলে আসছে। যেখানে পূর্বে লাঠির বদলে অক্ষ এবং বর্শা ব্যবহার করা হত। বর্তমান রূপে, দেবরগট্টু দশমীর উৎসবটি উদযাপিত হয় কেবল লাঠি দিয়ে। যদিও পুরো অনুষ্ঠানটি দর্শকদের বিস্মিত করে। 

বছরের পর বছর ধরে স্থানীয়রা এই উৎসব অত্যন্ত উৎসাহ ও আনন্দের সঙ্গে পালন করে। কর্ণাটক ও অন্যান্য জায়গা থেকে লাখো ভক্তরা এই অনুষ্ঠান দেখতে ভিড় জমায়। অনুষ্ঠানের মাঝামাঝি সময় মন্দিরের পুরোহিত প্রতিমাকে রক্ত দান করার জন্য তার উরুর মাংস কেটে চন্দন কাঠের সঙ্গে লাগিয়ে বানি গাছের দিকে এগিয়ে যান।


পুরোহিত মন্দিরের সামনে দাঁড়িয়ে উৎসবের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করে এবং ভবিষ্যদ্বাণী করেন। এদিকে ভক্তরা মারাত্মকভাবে লাঠি লড়াই করে জখম হতে থাকে। তারপর মূর্তির পালকি সিংহাসনে স্থাপন করা হয় এবং বনি উৎসবের সমাপ্তি উপলক্ষে পূজা অর্পণ করা হয়। এই পূজা শেষে সব ভক্তরা নিজ নিজ গ্রামে ফিরে যায়।

এই উৎসব চলাকালীন সময়ে প্রতি বছর কমপক্ষে ৫৬ জন আহত হয়। আশ্চর্যের বিষয় হলো, এই উৎসব চলাকালীন সময়ে এখানে বিভিন্ন চিকিৎসক ও পুলিশ সদস্যদের মোতায়েন করা হয়।
Blogger দ্বারা পরিচালিত.