নিজের এলাকা ও রাণীর সঙ্গে সঙ্গম করতে যুদ্ধ করে এই মাছ
Odd বাংলা ডেস্ক: সায়ামিশ ফাইটার ফিশ পৃথিবীর সর্বাধিক আক্রমনাত্মক মাছগুলোর একটি। এর সাধারণ নাম সায়ামিস ফাইটার, সায়ামিস ফাইটিং ফিশ, বেট্টা। এদের ফাইটার বা ফাইটার ফিস নামে ডাকা হয়। থাইল্যান্ডে এদেরকে আইকান বেট্টাহ নামে ডাকা হয় যেখান থেকে বেট্টা নামটি এসেছে।
প্রাকৃতিকভাবে এদের বাস ডোবা-নালায়। বর্তমানে অ্যাকুরিয়াম ফিশ হিসেবে সারা বিশ্বে পাওয়া যায়। ডোবা-নালার জলে অক্সিজেনের পরিমাণ খুবই কম। এত কম অক্সিজেনে অন্য যে কোনো মাছের পক্ষে বেঁচে থাকা প্রায় অসম্ভব।
তবে ফাইটার ফিশ বাঁচে কীভাবে? এদের কানকোর নিচে লাবেরিন্থ নামক একটি বিশেষ অঙ্গ রয়েছে। যা ফুসফুসের মতো বাতাস থেকে সরাসরি অক্সিজেন শোষণ করে। এদের জীবনকাল সর্বোচ্চ দুই বছর। এরা তিন ইঞ্চি (সাত সে.মি.) আকারেই এরা প্রজননের উপযোগী হয়। এক বছরের কম বয়সী পরিণত মাছ প্রজননের জন্য ভালো। এদের পুরুষ ও স্ত্রী মাছ আলাদা এবং সহজেই এদের পরস্পর থেকে পৃথক করা যায়। একই বয়সের পুরুষদের দেহের বর্ণ স্ত্রীদের দেহের বর্ণের চেয়ে বর্ণিল ও উজ্জ্বল হয়ে থাকে।
অন্যদিকে পুরুষদের পৃষ্ঠ, পায়ু ও পুচ্ছ পাখনা স্ত্রীদের পৃষ্ঠ, পায়ু ও পুচ্ছ পাখনা থেকে অনেকটা লম্বা, বর্ণিল ও তীক্ষ্ণ প্রান্ত বিশিষ্ট হয়ে থাকে। প্রাকৃতিক পরিবেশে পুরুষ ফাইটার ফিশদের যুদ্ধ মাত্র কয়েক মিনিট স্থায়ী হয়। তবে অ্যাকুরিয়ামে যুদ্ধের স্থায়িত্ব কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত হতে পারে। যেখানে একজনের মৃত্যু। তবে কেন এই ছোট্ট দর্শনীয় মাছগুলো যুদ্ধে লিপ্ত হয়? যুদ্ধের প্রধানত দুটি কারণ- রাজ্য এবং সঙ্গী।
বংশ বৃদ্ধির জন্যে পুরুষ ফাইটার ফিশ বুদবুদের বাসা তৈরি করে। স্ত্রী সায়ামিশ ফিশরা এই বুদবুদের সমারোহে আকৃষ্ট হয়। বাসা বানানো হয়ে গেলে পুরুষ মাছ স্ত্রী মাছকে আলতো করে জড়িয়ে ধরে। যা স্ত্রী মাছকে ডিম পাড়তে উত্তেজনা যোগায়। ডিমগুলো নিচে পড়ার সময় পুরুষ মাছ নিষিক্ত করে সেগুলোকে মুখে সংগ্রহ করে। এরপর একটি একটি করে ডিম বুদবুদে আটকে দেয়। স্ত্রীরা এক দফায় ৪০০ থেকে ৫০০টি ডিম দিয়ে থাকে। অন্য যেকোনো ফাইটার ফিশ এমনকি স্ত্রী মাছটিও নিজের ডিম খেয়ে ফেলতে পারে। ফলে ডিম পাড়ার পর স্ত্রী মাছেরও স্থান নেই পুরুষ মাছের রাজ্যে। স্থান নেই কারোরই। ডিম পরিচর্চার দায়িত্ব সম্পূর্ণ পুরুষ মাছের। নিষিক্ত ডিম ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ডিম থেকে পোনা বের হয়। তিন থেকে চার দিন পর ডিমপোনার কুসুমথলির কুসুম শেষ হয়ে এলে এরা প্রকৃতি থেকে খাবার গ্রহণ করতে শুরু করে।
Post a Comment