ডিম পাড়তে ব্যস্ত মা, বাবার স্নেহেই বড় হয় জলময়ূর



Odd বাংলা ডেস্ক: চোখ জুড়ানো সুদর্শন পাখি জলময়ূর। জলে ভাসা পদ্মপাতায় যাদের জীবন। ভাসতে ভাসতে জন্ম, জীবনযাপন আর মৃত্যু। জলে ভাসা পদ্মপাতা, আর সেই পাতায় বড় বড় পা ফেলে সতর্ক চলাচল জলময়ূরের। 

স্ত্রী জলময়ূর ডিম দিয়েই অনেকটা স্বার্থপরের মতো আপন মনে উড়ে চলে যায়। তখন পুরুষ জলময়ূরের কাজ ডিমে তা দিয়ে ছানা ফুটানো এবং বাচ্চা লালন পালন করে বড় করা। আর সে পাতায় বড় বড় পা ফেলে সতর্ক চলাচল জলময়ূরের। 

পুরুষ জলময়ূররা প্রেমিকাকে কাছে ডাকতে নানা কর্মকাণ্ড করে থাকে। এরপর কাছে আসা এবং খড়কুটো দিয়ে পদ্মপাতার উপর ঘর বাঁধে পুরুষ জলময়ূর। সে ঘরেই ৪ টি ডিম দিয়ে স্ত্রী ময়ূর চলে যায়। এরপর ডিমের দায়িত্ব নেয় পুরুষ ময়ূরটি। টানা ২৬ দিন ডিমে তা দিয়ে ছানা ফোটায় সে।


জলময়ূরের জীবনধারণ বিষয়ে পাখি বিশেষজ্ঞ শিবলী সাদিক বলেন, ডিম থেকে একে একে বেরিয়ে আসে জলময়ূরের ছানা। স্ত্রী ময়ূর এখান থেকে অন্য জায়গায় বাসা বানিয়ে অন্য পুরুষ জলময়ূরকে আবার এভাবে ৪ টি ডিম দেয়। এরপর অন্য আরেক পুরুষের কাছে চলে যায় সে। এভাবেই স্ত্রী জলময়ূররা তাদের বংশবৃদ্ধি এবং তা রক্ষা করে থাকে। 



কারণ যদি সে এক জায়গায় থেকে যায় তাহলে এক বছরে তার এতো ছানা জন্ম দেয়া সম্ভব হতো না। মূলত তারা তাদের বংশবৃদ্ধির জন্যই এমনটা করে থাকে। আর বাবা জলমইয়ূররা মাতৃহীন ছানাগুলোকে পরম মমতায় বড় করে তোলে। জীবনে চলার পথে টিকে থাকতে যা প্রয়োজন তা শিক্ষা দেয়। 

মাত্র দিন সাতেক পর থেকেই ছানাগুলো পোকামাকড় আর কচি পদ্মপাতার অঙ্গুর, বীজ খাওয়া শুরু করে। বেঁচে থাকার মন্ত্রও রপ্ত করে বাবার দেখদেখি। এই জলময়ূরের ছানাগুলো জন্মের পর থেকেই স্বনির্ভর। জলাশয় অঞ্চলে শিকারী পাখিদের থেকে বাঁচতে নিজেরাই কৌশল শিখে নেয়। 


কারণ বাবা জলময়ূর সব সময়তো আর পাহাড়া দিয়ে রাখতে পারে না। তাই নিজেদেরকেই শিখতে হয় উপায়গুলো। এভাবে দু’মাস পর্যন্ত বাবা জলময়ূরের ছত্রছায়ায় বড় হয় ছানাগুলো। এরপর প্রকৃতির নিয়মে তারাও একদিন বাবা মা হয়। এভাবে পদ্মপাতায় চলে জলময়ূরের জীবনচক্র।
Blogger দ্বারা পরিচালিত.