২৯০ বছর ধরে ভট্টাচার্য পরিবারে পুজো করা হচ্ছে কালো দুর্গা


Odd বাংলা ডেস্ক: বনেদী বাড়ির দুর্গাপুজোগুলির একটা আলাদা ঐতিহ্য রয়েছে। কয়েকশো বছরের পুরনো এইসব বনেদী পরিবারের দুর্গাপুজোর কাহিনি জানলে কার্যত অবাক হতে হয়। তেমনই খাস কলকাতার ভট্টাচার্য পরিবারের দুর্গাপুজোর কাহিনি একেবারে অন্যরকম। ২৯০ বছরের পুরনো এই ভট্টাচার্য বাড়ির দুর্গোপুজো। 

তবে এই পুজোর সূচনা হয়েছিল বাংলাদেশের পাবনা জেলার স্থলবসন্তপুরে। নাটরের রানি ভবানীর সময়ে হরিদেব ভট্টাচার্য প্রথম এই দুর্গাপুজোর আয়োজন করেছিলেন। আদতে নদিয়া দেলার বাসিন্দা হরিদেব ভট্টাচার্যকে জমি প্রদান করেছিলেন নাটোরের রানি ভবানি। এরপর তিনি স্থলবসন্তপুরের জমিদার হন। এই পরিবারের দুর্গাপুজোর বিশেষত্ব হল এবাড়ির মায়ের গায়ের রঙ কালো। তার নেপথ্যে রয়েছে এক রোমাঞ্চকর ইতিহাস। হরিদেব ভট্টাচার্য নিজে ছিলেন কালীভক্ত। দুর্গাপুজোর আগে থেকেই তাঁদের বাড়িতে কালী পুজো হয়ে আসছিল। এরপর স্বপ্নাদেশ পেয়ে দেবী দুর্গার আরাধনা শুরু করেন তিনি।

দেবী মা স্বপ্নাদেশ পেয়ে বলেছিলেন তাঁকে দশভূজারূপে পুজো করতে। সেই কারণে মা দুর্গার গায়ের রঙ এখানে কালো। সেই চিরাচরিত রীতিতেই শ্যামবর্ণা প্রতিমা পূজিতা হয়ে আসছেন ভট্টাচার্য পরিবারে। বেলেঘাটার ধীরেণ চারু সংঘ-এর পুজো মণ্ডপের খুব কাছেই অনুষ্ঠিত হয় ভট্টাচার্য বাড়ির কালোবরণ দেবী মায়ের পুজো। বিস্ময়করভাবে মা দুর্গার গায়ের রঙ কালো হলেও লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশের গায়ের রঙ স্বাভাবিক। ওসুরের গায়ের রঙ হল সবুজ। 

দেবীর দুর্গার গায়ের রঙের পাশপাশি মায়ের সন্তানদের অবস্থানগত ভিন্নতাও বিশেষ উল্লেখযোগ্য। দেবীর ডানদিকে থাকেন লক্ষ্মী-কার্তিক এবং দেলবীর বামদিকে থাকেন সরস্বতী-গণেশ। বছর কুড়ি আগে পর্যন্তও সেখানে মহিষ বলি হতো,কিন্তু এখন তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে, এখন চালকুমড়ো বলি দেওয়া হয়। কালিকাপূরাণ মতে এই পরিবারের পুজো সম্পন্ন হয়। দেবীর সমস্ত পুজার্চনা করা হয় তন্ত্রমতে। আগে নিজেদের বাড়িতে পুজো করা হলেও এখন তা ফ্ল্যাটবাড়ির নীচেই পুজো করা হয়। 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.