জানেন কি, এখানে দশমীর পরে শুরু হয় দুর্গাপুজো


Odd বাংলা ডেস্ক:
'ঠাকুর থাকবে কতক্ষণ, ঠাকুর যাবে বিসর্জন।'-এই বার্তাই মনে করিয়ে দেয় এবার মায়ের বিদায় নেওয়ার পালা। মর্ত্যবাসীর মন খারাপ করে মা ঊমা ফিরে যাবের শ্বশুরবাড়ি।  মায়ের কৈলাসে ফিরে যাওয়া নিয়ে যখন মর্তবাসীর মন খারাপ, তখন উত্তর দিনাজপুরের করণদিঘি ব্লকের সিঙ্গারদহ গ্রামের সকলে মেতে ওঠেন পুজোর আনন্দে। বিস্ময়কর হলেও এটাই সত্যি। 
 
দীর্ঘ ৬০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এমনটাই নিয়ম চলে আসছে এই গ্রামের। এখানে বোধন হয় দশমীর ৯দিন পর। পুজো চলে চারদিন ধরে অষ্টমী পুজো, সন্ধি পুজো সমস্ত নিয়ম-কানুন একেবারে দুর্গাপুজোর মতোই। এখানকার দেবী অত্যন্ত জাগ্রত। পশুবলি দেওয়ারও রেওয়াজ রয়েছে এখানে। বিশেষত রাজবংশী যাঁরা তাঁরাই এই পুজো করে থাকেন। 


কথিত আছে, এই পুজো সম্রাট অশোকের আমলের। এই এলাকায় একদল কুম্ভ (কুমোর) বাস করতেন। কোনও এক কুমোরের পুত্রবধূ দশমীর মেলা দেখতে যাওয়ার জন্য ঘরে সাজগোজ করছিলেন। প্রতিবেশী মহিলারা তার জন্য অপেক্ষা করছিলেন এক সঙ্গে মেলায় যাবেন বলে। দেরি হওয়ায় ওই কুম্ভকারকে পুত্রবধূর কথা জিজ্ঞাসা করতেই তিনি মজা করে বলেন, "তোমরা আমার ঘরের বউমাকেই দুর্গা রূপে দেখে নাও। প্রতিবেশীরা ঘরে গিয়ে দেখেন কুমোরের পুত্রবধূ সত্যিই দেবীর রূপে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। কুমোরের ওই পুত্রবধূর নাম ছিল সোনামতি কুম্ভরানি। সেই থেকেই সিঙ্গারদহের দুর্গাপুজো 'সোনামতি কুম্ভরানি' নামে অনুষ্ঠিত হয়।

এলাকার প্রবীণ বাসিন্দাদের কথায়, তাঁদের পূর্বপুরুষদের আমল থেকেই গ্রামে সোনামতি কুম্ভরানির পুজো হয়ে আসছে। পাঁচ দিন ধরেই চলে এই পুজো। পুরনো রীতি রেওয়াজ মেনে আজও, প্রথম দিনে পাঁঠাবলি ও পায়রা ওড়ানো হয়। পাঁচ দিনের পুজো শেষে গ্রামের পুকুরেই বিসর্জন হবে দেবীর। পুজোকে কেন্দ্র করে চলে মেলাও।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.