ধর্ষিতদের পোশাক নিয়ে প্রদর্শনী, উদ্দেশ্য মহৎ


Odd বাংলা ডেস্ক: চলতি বছরের‌ ১৪ সেপ্টেম্বর ভারতের উত্তরপ্রদেশের হাথরসে মায়ের সঙ্গে ক্ষেতে কাজ করছিলেন ১৯ বছরের তরুণী। গলায় ওড়না পেঁচিয়ে তাকে টানতে টানতে পাশের বাজরার ক্ষেতে নিয়ে যায় উচ্চবর্ণের চার যুবক। সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর তাকে মেরে ঘাড়ের হাড় ভেঙে দেওয়া হয়, জিহ্বা কেটে নেওয়া হয়। যদিও পুলিশ তা মানেনি। মানেনি ওই এলাকার উচ্চবর্ণরাও। তথাকথিত ব্রাহ্মণ এবং ঠাকুররা দাবি করেছে, তরুণী আসলে মিথ্যা বয়ান দিয়েছে। সারা গ্রামের নাম ডুবিয়েছে। 

আর কেউ ওদের পরিবারের মেয়েকে বিয়ে করবে না। ২০১২ সালের ডিসেম্বরে দিল্লির রাস্তায় চলন্ত বাসে গণধর্ষণের শিকার প্যারামেডিক্যালের ২৩ বছরের ছাত্রী। অপরাধী ছয়জন। দিন কয়েক পর মৃত্যুর হয় তার। সেই ঘটনায়ও একাংশ আঙুল তুলেছিল ধর্ষিত নির্ভয়ার দিকেই। তারা বলেছিল, এত রাতে বাড়ি থেকে বন্ধুর সঙ্গে বেরিয়েছিল কেন? ‌ প্রত্যেক ধর্ষণের ঘটনায় ঘুরিয়ে ফিরিয়ে নির্যাতিতার দিকেই আঙুল তোলে সমাজের একাংশ। কখনো প্রশ্ন তোলা হয় তার চরিত্র নিয়ে, আবার কখনো পোশাক নিয়ে, কখনোবা স্থান–কাল নিয়ে। কেন ওই সময় সে সেখানে ছিল? ‌ এই ধর্ষণের সঙ্গে আসলে পোশাকের কোনো সম্পর্ক নেই। 

এ কথা প্রমাণ করতেই ব্রাসেলসে ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে একটি প্রদর্শনী হয়। তাতে রাখা ছিল, ধর্ষিতদের পোশাক। চোখে আঙুল দিয়ে দেখানো হয়েছিল, যে ধর্ষণের সময় নির্যাতিতারা কী পোশাক পরেছিল। সারি সারি করে রাখা ফুল প্যান্ট, জামা, টি-শার্ট, এমনকী এক শিশুর গোলাপি ফ্রক। 

সেসব একবার দেখলে কেউ আর পোশাক–ধর্ষণ সম্পর্ক নিয়ে মন্তব্য করতে পারবেন না। বলতে পারবেন না, পোশাকের কারণে প্ররোচিত হয় ধর্ষক। ধর্ষিতদের পাশে দাঁড়ায় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সিএডব্লিউ ইস্ট ব্রাবান্ট। তারাই পোশাকগুলো সংগ্রহ করে দিয়েছিল উদ্যোক্তাদের। সংস্থার কর্মী লিশবেথ কেনস জানান, ‌পোশাকগুলো দেখলেই বোঝা যায়, এগুলো প্ররোচণা দেওয়ার মতো নয়। প্রতিদিন একজন মানুষ যা পরে থাকেন, এগুলোও তাই।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.