ধর্ষকদের যমদূত ছিলেন ফুলন দেবী, জানুন এক অজানা ইতিহাস

Odd বাংলা ডেস্ক: পুরুষদের হাতে গণধর্ষণ বা নির্যাতনের শিকার কিংবা নির্যাতন থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর এক সাহসী নারী ফুলন দেবী। এক সময়ের নির্যাতিত নারী কঠিন বাস্তবতার স্রোতে পড়ে হয়ে উঠেন ধর্ষকদের যমদূত। তাই ফুলন দেবীকে নারী নির্যাতন ও বর্ণবাদের বিরুদ্ধে সফল বিজেতা হিসেবে মনে করা হয়। আর নারী নির্যাতন ও বর্ণবাদের বিরুদ্ধে সফল যোদ্ধা হিসেবে তার নাম প্রথম কাঁতারে রয়েছে। তেজি এই নারী নির্যাতিতদের সাহস যোগাতে তার জীবনের গল্প বই আকারে প্রকাশ করেছেন। জানিয়েছেন তার বদলে যাওয়া জীবনের গল্পও।  

এক সময় ভারতীয় আইনের চোখে ফুলন দেবী ছিলেন দস্যুরাণী। কিন্তু নিচু জাতের মাল্লাদের কাছে ছিলেন ত্রাণকর্তা। কথিত ভদ্র সমাজের চোখে বা সমাজের উচ্চবর্ণের কাছে ‘ম্লেচ্ছ’ আখ্যা পাওয়া ফুলন জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ভদ্র সমাজের বিরুদ্ধে সংগ্রাম জারি রেখেছিলেন। তার এ সংগ্রামকে থামিয়ে দিতেই আজ থেকে ১৯ বছর আগে দিল্লিতে নিজ বাসভবনের সামনে যাকে গুলি করে হত্যা করা হয় ভারতীয় ইতিহাসের সাহসী এই নারীকে। 

ফুলন দেবীর ছোটবেলা

উত্তর প্রদেশের ছোট্ট একটি গ্রাম ঘুরা কা পুরয়া। সেই গ্রামের মাল্লা সম্প্রদায়ের একটি ঘরে ১৯৬৩ সালের ১০ আগস্ট জন্ম নেন ফুলন দেবী। মেয়ে হিসেবে ওই সম্প্রদায়ে জন্ম নেয়া তখন ছিল আজন্ম পাপ। সেই সম্প্রদায়ে জন্ম নেয়া মেয়েরা হতো মা-বাবার ঘাড়ের বোঝা। নিম্নবর্ণের মাল্লা সম্প্রদায়ের প্রধান পেশা হচ্ছে নৌকা চালানো। মাঝির ঘরের আদরের কন্যা ফুলের দেবী ফুলন আর তার ছোট বোনের বিয়ের জন্য এক একর জায়গাজুড়ে নিমের বাগান করেছিলেন তাদের বাবা। কারণ জামাইদের খুশিমতো যৌতুক না দিলে মেয়েদের কপালে শান্তি নেই। 

কিন্তু ফুলনের বাবার সেই সম্বলটুকুতেও থাবা বসায় তারই আপন বড় ভাই। সব সম্পত্তি নিজের বলে ঘোষণা দিয়ে ছেলে মায়াদিনকে দিয়ে বাগানের গাছ কেটে বিক্রি করা শুরু করা হয়। ছোটবেলা থেকেই জ্বলন্ত আগ্নেয়গিরির মতো ফুটতে থাকা ফুলন গাছ বিক্রির ঘোর বিরোধিতা শুরু করেন। মায়াদিনকে জনসম্মুখে চোর সাব্যস্ত করেন। এর প্রতিশোধস্বরূপ, ৩০ বছর বয়সী পুট্টিলাল নামক এক লোকের সঙ্গে মাত্র ১১ বছর বয়সী ফুলনের বিয়ে ঠিক করে মায়াদিন।

ফুলন দেবীর ওপর প্রথম নির্যাতন 

ফুলন দেবীর আত্মজীবনীর তথ্যানুযায়ী, স্বামী পুট্টিলাল একজন অসৎ চরিত্রের লোক ছিল। শ্বশুরবাড়িতে শিশু ফুলনের সঙ্গে নিয়মিত জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করতো ১৯ বছরের বেশি বয়সী পুট্টিলাল। শারীরিক সম্পর্কের পাশাপাশি নিয়মিত চলতো নির্যাতন। এক পর্যায়ে বাধ্য হয়ে বাবার বাড়িতে চলে আসেন ফুলন দেবী। কিন্তু সমাজের দিকে চেয়ে বাবা ও তার পরিবার শ্বশুর বাড়িতে আবারো ফুলনকে পাঠান। আবারো একই কায়দায় নির্যাতনের শিকার হলে বাবার বাড়িতে একেবারে চলে আসেন ফুলন দেবী। মাল্লা সমাজের তখনকার রীতি অনুযায়ী স্বামী পরিত্যাগ করে আসা নারীকে চরিত্রহীনা বলা হতো। এরপর ফুলনের বিরুদ্ধে নানা কুৎসা রটানো শুরু হয়। তবে কুৎসা রটনা পাত্তা না দিয়েই বাবার সম্পত্তি রক্ষার লড়াইয়ে মনোযোগ দেন ফুলন। 

পুলিশের কাছে গণধর্ষিত ফুলন

১৯৭৯ সালে চুরির অভিযোগ তুলে ফুলন দেবীকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করে প্রতিপক্ষ মায়াদিন। তার তিন দিনের কারাবাস হয়। আর এই তিনদিন তাকে গণধর্ষণ করে পুলিশ সদস্যরা। সেই ঘটনার কোনো বিচার হয়নি, বরং তাকে পরিবার ও গ্রাম থেকে বর্জন করা হয়। 

ফুলন দেবীর দস্যু জীবন-ধর্ষণের শিকার-প্রেমের বিয়ে

মালা সেনের লেখা ‘ইন্ডিয়া’স ব্যান্ডিট কুইন: দ্য ট্রু স্টোরি অফ ফুলন দেবী’ বইয়ে লেখা আছে, গ্রাম থেকে নির্বাসিত হওয়ার পর স্থানীয় ডাকাত দল তাকে অপহরণ করে। আবার কেউ কেউ বলেন, ডাকাতদলে যোগ দিতেই প্রথম স্বামীকে পরিত্যাগ করেন ফুলন। সে যাই হোক, ডাকাতদলে শুরু হয় ফুলন দেবীর নতুন জীবন।

ফুলন দেবী যে ডাকাতদলে যোগ দেন সেই দলের নেতার নাম বাবু গুজ্জর। এক সময় ফুলনের ওপর চোখ পড়ে নিষ্ঠুর এই ডাকাত সর্দারের । বাবুর কাছে প্রায় কয়েক দফা ধর্ষিত হন ফুলন। তখন তাকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসেন দলের দ্বিতীয় নেতা বিক্রম মাল্লা। স্বজাতির ওপর বাবু গুজ্জরের নির্মমতার প্রতিবাদে বাবুকে খুন করে নিজেকে দলের নেতা ঘোষণা করেন বিক্রম। নিষ্ঠাবান ডাকাত লুণ্ঠিত সম্পত্তি দরিদ্রদের মাঝে বিলিয়ে দেয়ার রেওয়াজ চালু করেন। তাই মানবিক ডাকাত বিক্রমের প্রেমে পড়ে যান ফুলন। ভালোবেসে দুইজন দুইজনকে স্বামী-স্ত্রীর মর্যাদায় গ্রহণ করেন। 

নারী নির্যাতনের প্রতিশোধের প্রথম অভিযান

বিয়ের পর ডাকাত সর্দার বিক্রমকে সঙ্গে নিয়ে ফুলন তার প্রথম স্বামী পুট্টিলালের গ্রামে যান। সেখানে গিয়ে জনসমক্ষে পুট্টিলালকে গাধার পিঠে উল্টো করে বসিয়ে গ্রামের আরেক প্রান্তে নিয়ে গিয়ে মারধর করেন। কোনো বয়স্ক পুরুষ যেন অল্পবয়সী কোনো মেয়েকে বিয়ে করে তার সঙ্গে নির্যাতন করতে না পারে, তার জন্য একটি হুঁশিয়ার বাণীস্বরূপ পত্রসমেত পুট্টিলালকে প্রায় আধমরা অবস্থায় ছেড়ে দিয়ে আসেন ফুলন দেবী। 


ফুলন দেবীর দুর্ধর্ষ দস্যু জীবনে পদার্পণ 

স্বামী বিক্রম মাল্লার কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে বন্দুক চালানো, গ্রাম লুণ্ঠন, ভূস্বামীদের অপহরণ, রেল ডাকাতি প্রভৃতি কাজে বেশ পারদর্শী হয়ে ওঠেন ফুলন। প্রত্যেকবার ডাকাতি করে আসার পর দুর্গাদেবীর মন্দিরে গিয়ে প্রাণ রক্ষার জন্য দেবীকে ধন্যবাদ জানিয়ে আসতেন তিনি।

ডাকাত দলে বিভক্তি 

প্রকৃতপক্ষে বিক্রমদের দলের প্রধান ছিল এক ঠাকুর সম্প্রদায়ের ডাকাত শ্রীরাম। সে সময় ঠাকুরদের সঙ্গে মাল্লাদের ব্যবধান ছিল অনেক বেশি। তারা এক জায়গায় পানির পাত্রও রাখতে পারতো না। শ্রীরাম ও তার ভাই লালারাম জেলহাজতে বন্দি থাকায় প্রায় ৮০ হাজার টাকা খরচ করে তাদের জামিন করান বিক্রম। দলের নেতৃত্বও তাদের হাতে তুলে দিতে চান তিনি। 

কিন্তু নিচু সম্প্রদায়ের ডাকাতরা জানত, শ্রীরাম ঠাকুর সম্প্রদায়ের পাশাপাশি পুলিশের গুপ্তচর। কাজেই কেউ শ্রীরামের নেতৃত্ব মানতে চায়নি। এতে ডাকাতদল মাল্লা ও ঠাকুর দুটি দলে বিভক্ত হয়ে পড়ে। দলের মধ্যে এই বিভাজন মানতে পারেনি শ্রীরাম। তাই প্রধান প্রতিপক্ষ বিক্রমকে দুর্বল করতে পরপর দুই বার চেষ্টা চালিয়ে অবশেষে ফুলনকে অপহরণ করে শ্রিরাম বাহিনী।

ফুলন দেবীকে প্রকাশ্যে প্রায় বিবস্ত্র করে গণধর্ষণ 

কানপুর থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত উত্তর প্রদেশের একটি গ্রানের নাম বেহমাই। এ গ্রামের একটি ঘটনাই ফুলন দেবীকে ভয়ংকর ডাকাতে পরিণত করেছে। এখানের ঘটনাই ফুলন দেবীকে দস্যুরানী হিসেবে পরিচিত করে। 

অপহরণের পর ফুলন দেবীকে বেহমাই গ্রামে নিয়ে এসে প্রায় বিবস্ত্র করে পুরো গ্রামবাসীর সামনে হাজির করে শ্রীরাম। বিক্রমের হত্যাকারী দাবি করে তার ওপর চালানো হয় অত্যাচার। প্রথমে শ্রীরাম, এরপর একে একে ঠাকুর সম্প্রদায়ের বহুলোক প্রায় ২৩ দিন ধরে তার ওপরে পাশবিক নির্যাতন চালায়। গণধর্ষণের একপর্যায়ে তাকে মৃত ভেবে ফেলে দিয়ে যায় মানুষরূপী পশুর দল। কোনোমতে একটি গরুর গাড়িতে উঠে বেহমাই থেকে পালিয়ে আসে ফুলন। 

ফুলন দেবী আত্মজীবনীর লেখিকা মালা সেনকে বলেছেন, “ওরা আমার সঙ্গে অনেক অন্যায়-অত্যাচার করেছে”। এই একটি লাইনকেই অবশ্য ফুলন দেবীর সার্বিক অবস্থার প্রতীকীরূপ বলে বিবেচনা করা যায়। তবে ধরে নেয়া যায়, বাইরে থেকে যতই দুর্ধর্ষ মনে হোক না কেন, লোকলজ্জার ভয়কে দস্যুরাণী নিজেও উপেক্ষা করতে পারেননি। স্থানীয়রা এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

দুস্যরাণীর জীবনের সূত্রপাত

ধর্ষণের শিকার অন্যান্য নারীদের মতো চুপ করে বসে থাকেননি ফুলন দেবী। নিজের অপমানের প্রতিশোধ নিতে তৎপর হয়ে ওঠেন। বিক্রমের এক বন্ধুর নাম মান সিংহ। এ ঘটনা ও ফুলনের খবর পায় মান সিংহ। তার সাহায্যে মুসলিম এক ডাকু সর্দার বাবা মুস্তাকিমের কাছে পৌঁছান তিনি। ।

বাবা মুস্তাকিমের সহায়তায় মান সিংহ আর ফুলন মিলে গড়ে তোলেন নতুন একটি ডাকাতদল। নির্যাতিত হওয়ার প্রায় ১৭ মাস পর ১৯৮১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি শ্রীরাম আর লালারামের খোঁজ পায় ফুলন। তাদের হত্যা করতে একটি বিয়ে বাড়িতে গিয়ে তার ওপর নির্যাতন চালানো দুই ঠাকুরকে চিনতে পারেন ফুলন দেবী। ক্রোধে অন্ধ হয়ে সেখানে উপস্থিত ২২ ঠাকুরকে এক সারিতে দাঁড় করিয়ে গুলি করে মেরে ফেলেন ফুলন। ইতিহাসে এই ঘটনা ‘বেহমাই হত্যাকাণ্ড’ বা ‘বেহমাই গণহত্যা’ নামে কুখ্যাত। এতে বেশ কিছু নিরীহ ঠাকুর মারা যাওয়ায় উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ভি.পি.সিং পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। ধীরে ধীরে লোকের কাছে ‘দস্যুরাণী ফুলনদেবী’ শব্দযুগল বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। মায়াবিনী এই ডাকু সর্দারের সমস্ত ক্ষোভ কেবল ঠাকুরদের প্রতি, মাল্লাদের মতো নিচু সম্প্রদায় বনে যান তার ঘরের লোক। তাই শহরগুলোতে দুর্গার বেশে ফুলনের মূর্তির বেচাকেনা শুরু হয়ে যায়।

ফুলন দেবীর আত্মসমর্পণ

এত বড় হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে খুব সহজে ছাড় পাননি ফুলন দেবী। ৪৮টি অপরাধকর্মের সঙ্গে জড়িত ছিলেন তিনি। এর মধ্যে ৩০টি ডাকাতি ও অপহরণের অভিযোগ ছিল। এছাড়া প্রায় দুই বছর পুলিশকে নাস্তানাবুদ করে অবশেষে কিছু শর্তসাপেক্ষে পুলিশে কাছে আত্মসমর্পণ করেন ফুলন দেবী। 

যেসব শর্তে ফুলন দেবীর আত্মসমর্পণ  

ফুলন ও তার সঙ্গীরা কেবল মধ্যপ্রদেশে আত্মসমর্পণ করবে। বিচারের জন্য তাদের উত্তরপ্রদেশে নেয়া যাবে না। তাদের ফাঁসি দেয়া যাবে না। ৮ বছরের বেশি সময় দণ্ড হবে না। মায়াদিন কর্তৃক অবৈধভাবে দখল করা জমি ফুলনের বাবাকে ফেরত দিতে হবে। ফুলনের বাবা-মাকে মধ্যপ্রদেশে পাঠিয়ে দিতে হবে। সরকার ফুলনের ভাইকে চাকরি দেয়ার নিশ্চয়তা প্রদান করবে।

ফুলনের সব কয়টি শর্ত মেনে নেয় সরকার। তবে ৮ বছরের বদলে তাকে ১১ বছর কারাবাস করতে হয়। বেহমাই হত্যাকাণ্ডের প্রায় দু’বছর পর ১৯৮৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রায় ৮ হাজার দর্শকের উপস্থিতিতে আত্মসমর্পণ করে ফুলন দেবী। ১৯৯৪ সালে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে জন্ম নেয় এক নতুন ফুলন।

ফুলন দেবীর রাজনৈতিক যাত্রা

১৯৯৬ সালে ফুলনকে মির্জাপুর আসনে নির্বাচন করার জন্য বাছাই করে সমাজবাদী পার্টি (এসপি)। রাজনৈতিক জগতে ফুলনের গুরু ছিলেন এসপি দলের নেতা মুলায়ম সিং যাদব। ভারতীয় জনতা পার্টি ও বেহমাই হত্যাকাণ্ডে নিহত ঠাকুরের স্ত্রীদের ঘোর আপত্তি থাকা সত্ত্বেও সেবার নির্বাচনে জয়লাভ করে ফুলন। ১৯৯৮ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনে হেরে গেলেও, ১৯৯৯ সালের মির্জাপুর লোকসভা নির্বাচনে ফের তার আসন দখল করে একসময়ের দোর্দণ্ড প্রতাপশালী দস্যুরানী। মধ্য প্রদেশের জঙ্গল ছেড়ে অশোকা রোডের ঝাঁ চকচকে বাড়িতে গড়ে তোলে তার নতুন ঠিকানা।


জীবন বদলে গেলেও অতীত তাকে তাড়িয়ে বেড়াতো। তার ব্যাপারে কারো কারো যথেষ্ট ক্ষোভ রয়েছে, তা নিজেও জানতেন ফুলন। তার সম্পর্কে বলতে গিয়ে ইন্দিরা জয়সিং জানান, ফুলন সবসময় জানত অতীত তাকে ধাওয়া করে বেড়াচ্ছে। একজন নারী হয়ে পিতৃতন্ত্রকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য অনেকের চোখেই জনমভর একজন অপরাধী বৈ আর কিছুই নয় তিনি। এ কারণেই তিনি সবসময় পুলিশি নিরাপত্তা নিয়ে চলাফেরা করতেন। 

ফুলন দেবীর জীবনবসান

২০০১ সালের ২৫ জুলাই নয়া দিল্লিতে সংসদ থেকে বের হয়ে আসার সময় ফুলন দেবীকে গুলি করে হত্যা করা হয়। তখন হত্যাকারীরা অটোরিকশা করে পালিয়ে যায়। হত্যাকারীদের মধ্যে ছিলেন শ্বের সিং রাণা, ধীরাজ রাণা ও রাজবীর। এর মধ্যে শ্বের সিং রাণা দেরাদুনে আত্মসমর্পণ করেন। 

হত্যাকারীরা স্বীকার করে যে, বেহমাই হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোধ নিতেই ফুলন দেবীকে হত্যা করা হয়েছে। এভাবেই চিরবিদ্রোহী এক নারীর ঘটনাবহুল জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটে। 

পর্দায় ফুলন দেবী 

ফুলন দেবীর জীবনী নিয়ে ১৯৯৮ সালে শেখর কাপুর পরিচালনা করেন ‘ব্যান্ডিট কুইন’ নামের একটি সিনেমা। এখানে ফুলনের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন সীমা বিশ্বাস। এর আগে ১৯৮৫ সালে অশোক রায়ের পরিচালনায় বাংলায় ‘ফুলন দেবী’ নামে একটি সিনেমা বানানো হয়। আর মালা সেন রচিত তার আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থতো রয়েছেই।

মৃত্যুর আগে সব নির্যাতনের শিকার নারীদের প্রতিবাদী রূপ দেখিয়ে গিয়েছেন ফুলন দেবী। তার জীবন নির্যাতনে শিকার নারীদের শিক্ষা দেয় যে, নারীরা নিজেদের ভাগ্য নিজেইরাই পরিবর্তন করতে পারে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.