আজকের এই ভারত কি গান্ধী চেয়েছিলেন? জানুন তাঁর অজানা দর্শনের কথা


Odd বাংলা ডেস্ক: গান্ধী জানতেন, ভারতের স্বাধীনতা অর্জনে হিন্দু-মুসলিম একতা কতোটা প্রয়োজনীয়, আর তাই খিলাফত আন্দোলনেও তিনি সমান তালে আত্মনিয়োগ করেন। খিলাফত আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে গান্ধী মুসলিম সম্প্রদায়ের সমর্থন লাভ করলেও অনেক হিন্দুবাদী নেতা এতে অসন্তুষ্ট হন। ১৯৩০ সালে ব্রিটিশ সরকার লবণের উপর কর আরোপ ও ভারতীয়দের লবণ উৎপাদন বেআইনী ঘোষণা করলে গান্ধীজি লবণ সত্যাগ্রহ শুরু করেন। প্রতিবাদ হিসেবে তিনি নিজের সবরমতি আশ্রম থেকে ২৪০ মাইল দূরের সমুদ্র উপকূলবর্তী গ্রাম ডান্ডি অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করেন। ১২ মার্চ ১৯৩০, ৭৮ জন বিশ্বস্ত সহচর নিয়ে গান্ধীজি এই যাত্রা শুরু করেন। প্রতিদিন ১০ মাইল করে হেঁটে তারা ২৪ দিনে ২৪০ মাইল পথ পাড়ি দেন। এই যাত্রাপথে অগণিত মানুষ তার সঙ্গী হন। ৬ এপ্রিল গান্ধী ডান্ডি পৌঁছান এবং লবণ আইন ভঙ্গ করেন। ব্রিটিশ সরকার গান্ধীকে আবারও জেলবন্দী করে, সেই সাথে আন্দোলনে যোগ দেয়া প্রায় ৬০,০০০ মানুষকেও। এই সফল আন্দোলনের ফলে গান্ধী-আরউইন চুক্তি হয় ১৯৩১ সালে।


দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে গান্ধী শুরু করেন ‘ভারত ছাড়ো আন্দোলন’। এবার আর কোনো পরোক্ষ নীতি অবলম্বন না করে সরাসরি ব্রিটিশদের ভারত ছাড়ার দাবী জানান তিনি। এটি ছিল গান্ধীর নেতৃত্বে কংগ্রেসের সবচেয়ে মারমুখী আন্দোলন। ৯ আগস্ট ১৯৪২ এ গান্ধীকে গ্রেফতার করে পুনের আগা খাঁ প্যালেসে আটকে রাখা হয়। ১৯৪৩ এর শেষের দিকে বিশ্বযুদ্ধে ক্ষতবিক্ষত ব্রিটিশরা ভারতের স্বাধীকার প্রদানের অঙ্গীকার করলে আন্দোলনটি থামে। ১৯৪৭ সালে শেষমেষ ভারত স্বাধীন হয়। কিন্তু গান্ধী নিশ্চিত জানতেন স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে রক্ষা করা কতটা কঠিন। আর তাই তিনি বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন স্বাধীন ভারতে হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতির উপর। উপমহাদেশ জুড়ে ছড়িয়ে পড়া সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার তীব্রতা গান্ধীর সমৃদ্ধ ভারতের স্বপ্নকে চুরমার করে দেয়। দাঙ্গা থামানোর উদ্দেশ্যে আহত হৃদয় ৭৮ বছরের বৃদ্ধ গান্ধী আমরণ অনশন শুরু করেন। পার্টিশন কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পাকিস্তানকে প্রদেয় ৫৫ কোটি রুপি সত্ত্বর দিয়ে দেয়ার উপরেও তিনি গুরুত্ব দেন। রাজনৈতিক নেতারা শেষমেষ তার দাবী মেনে নিলে তিনি অনশন ভঙ্গ করেন।
Blogger দ্বারা পরিচালিত.