বৈদ্যুতিক করাত দিয়ে তরুণীকে দ্বিখণ্ডিত করলেন পি সি সরকার! জাদু দেখাতে গিয়ে একি করলেন তিনি!
Odd বাংলা ডেস্ক: জাদুসম্রাট পি. সি. সরকার। যার ম্যাজিকে হতবাক হয়ে পড়ত গোটা বিশ্ব। গোটা বিশ্বের কাছে যিনি অত্যন্ত সুপরিচিত। তার ম্যাজিকেই আঁতকে উঠেছিল ব্রিটেনের দর্শকরা।
১৯৫৬ সালের মাঝামাঝি সময়ে তিনি ব্রিটেনে গেছেন ম্যাজিক দেখাতে। বিবিসি (ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন) লন্ডন থেকে ১৫ মিনিট অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ পেলেন। এর আগে কোনোদিন বিবিসিতে তিনি খেলা দেখাননি। বৈদ্যুতিক করাত দিয়ে তরুণীকে দ্বিখণ্ডিত করার খেলাটা দেখাবেন বলে ঠিক করলেন। তার জন্য প্রথমে তিনি রিহার্সাল দিয়ে নিলেন যাতে ১৫ মিনিটের মধ্যেই খেলাটা শেষ করতে পারেন। লাইভ টেলিকাস্ট। ভুল হয়ে গেলেই বিপদ। শুধরানোর কোনো উপায় নেই। ভুল মানে ভুল। অর্থাৎ ক্যামেরার সামনে সঠিক সময়সীমার মধ্যে তরুণীটিকে কাটা এবং জোড়া দেওয়া শেষ করতে হবে। তারিখটা ছিল ৯ এপ্রিল, ১৯৫৬। বিবিসির লাইম গ্রোভ স্টুডিয়োয় ক্যামেরাম্যান-ডিরেক্টর কয়েকবার সময়-বিষয়গুলি দেখে নিলেন। তারপর শুরু হয়ে গেল টেলিকাস্ট। খেলাটা ধীরে ধীরে দেখাতে লাগলেন তিনি। তরুণীকে কাটা হয়ে গেল বৈদ্যুতিক করাত দিয়ে। জোড়া লাগানোর সময় জাদুকরের আন্তরিক চেষ্টাতেও তরুণী বেঁচে উঠলেন না। তখন প্রচণ্ড উৎকণ্ঠার সৃষ্টি হল। জাদুসম্রাট পি. সি. সরকারের নাটকীয়তা এবং পরিবেশন যেন জন্মগত প্রতিভা। তিনি তার চোখে-মুখে এমন হাব-ভাব ফোটালেন যেন বিরাট দুর্ঘটনা ঘটে গেছে। তরুণী আর প্রাণ ফিরে পেল না। সময় শেষ। এবার নতুন টেলিকাস্ট শুরু হয়ে গেল।
অনুষ্ঠানের প্রযোজক ভীষণ চটে গেলেন জাদুসম্রাটের ওপর। জাদুসম্রাটও এমন ভাব দেখালেন যেন খুবই অপরাধ করে ফেলেছেন। কিছুক্ষণ বাদে আসল নাটক শুরু হল গোটা লন্ডন শহর এবং শহরতলি জুড়ে। এক পাকা জাদু শিল্পী খেলা দেখাতে গিয়ে প্রাণ কেড়ে নিলেন সহকারিণীর! হুমড়ি খেয়ে পড়লেন সাংবাদিকরা ব্রডকাস্টিং সেন্টারে। জনগণের ঘনঘন টেলিফোন। সংবাদপত্রের অফিসে ফোন এল এত বেশি যে লন্ডন শহরে দু’ঘণ্টার জন্য টেলিফোন লাইন অচল হয়ে গিয়েছিল। পরের দিন ১৯৫৬ সালে ১০ এপ্রিল তারিখে লন্ডনের সমস্ত খবরের কাগজে বড় বড় করে প্রথম পাতায় বেরোল ‘চিন্তা করবেন না মেয়েটা সুস্থ আছে। পুরোটাই জাদুসম্রাট পি. সি.সরকারের জাদুর চালাকি।’ জাদুর ইতিহাসে এমন প্রচণ্ডরকমের প্রচার করতে এর আগে কেউ কখনও পারেনি।
Post a Comment