বিক্রি হত না কোনও খাবার, সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে 'বাবা কা ধাবা'-এ এখন উপচে পড়ছে ভিড়

Odd বাংলা ডেস্ক: করোনাভাইরাস এবং তার জেরে ঘোষিত হওয়া লকডাউন হয়তো আপনার-আমার মতো কিছু মানুষের প্রাণ বাঁচিয়েছে বটে, তবে ভাতে মেরেছে অসংখ্য মানুষকে। দক্ষিণ দিল্লির একটি জায়গায় এমনই ছোট্ট একটি গুমটি দোকান থেকে ঘরে তৈরি খাবার বিক্রি করেন এক বৃদ্ধ ও বৃদ্ধা। ৩০ বছর ধরে এই ব্যবসা করছেন বৃদ্ধ ও বৃদ্ধা। করোনা পরিস্থিতিতে দুই অসহায় মানুষের স্ট্রাগেলের কাহিনি রাতারাতি ভাইরাল হয়ে গিয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। যার ফলে রাতারাতি কয়েক হাজার সাধারণ মানুষ এমনকি সেলিব্রিটি, ক্রিকেটার এবং বড় বড় কোম্পানিও তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন।   

এক ফুড ব্লগারের করা একটি ভিডিও শেয়ার করে বসুন্ধরা তঙ্খা শর্মা লিখেছিলেন যে, এই ভিডিও দেখে তিনি মর্মাহত এবং তিনি সকলকে অনুরোধ করেন যে, সকলে যেন মালব্য নগরের বাবা কা ধাবা-র খাবার খান। এরপর আজ সকাল থেকে কার্যত টুইটারে ট্রেন্ডিং ছিল বাবা কা ধাবা।


গতকাল ফুড ব্লগার গৌরব ভাসানের শ্যুট করা ওই ভিডিওতে, ৮০ বছর বয়স্ক কান্তা প্রসাদ শেয়ার করেছেন যে তিনি এবং তাঁর স্ত্রী বাদামী দেবী রোজ সকাল সাড়ে ছটায় রান্না শুরু করেন এবং সাড়ে ন'টার মধ্যে দিনের খাবার তৈরি করে ফেলেন। বড় ডেচকিতে ভাত, ডাল, সোয়াবিনের তরকারী,রুটি, মটর পনির রয়েছএ, যার দাম প্লেট প্রতি ৩০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে।  

এরপর যখন তাঁকে প্রশ্ন করা হয় যে, এতে করে তাঁর কতটাকা রোজগার হয়, তখন কার্যত কান্নায় ভেঙে পড়েন কান্তা প্রসাদ, বাক্স থেকে মাত্র কয়েকটা ১০ টাকার নোট বের করে দেখান তিনি! পরে জানা যায় বৃদ্ধ দম্পতির দুই ছেলে এবং একটি মেয়ে রয়েছে, কিন্তু তাঁদের কাছ থেকে কোনও সাহায্যই পাননা তাঁরা। ফুড ব্লগার তাঁকে সান্ত্বনা দেন এবং তাঁর খাবার কেনার ইচ্ছাও প্রকাশ করেন এবং সমস্ত নেট নাগরিকদের কাছে অনুরোধ করেন তাঁদের দোকান থেকে খাবার কেনার অনুরোধ জানান। 

এরপর মাত্র ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই এই ভিডিও ভাইরাস হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। অভিনেত্রী সোনম কাপুর থেকে শুরু করে, ক্রিকেটার আর অশ্বিন, আইপিএল টিম দিল্লি ক্যাপিটাল এবং ফুড ডেলিভারি অ্যাপ জোমাটোও তাঁর কাহিনি শেয়ার করেন। এরপরই বাবা কা ধাবা-এ দেখা যায় উপচে পড়া ভিড়। সাধারণ মানুষের কাছে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন কান্তা প্রসাদ। তাঁর স্ত্রী বাদামী দেবী বলেন, লকডাউনে তাঁরা কোনও খাবার বিক্রি করতে পারেননি, কিন্তু আজ তাঁদের গুমটিতে জনসমুদ্র। যাঁরা তাঁদের পাশে দাঁড়ালেন, তাঁদের সকলকে আশীর্বাদ করেছেন বৃদ্ধ দম্পতি। সত্যি, সোশ্যাল মিডিয়ার এটাই হয়তো ভাল দিক। 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.