কোন পাপে কী শাস্তি নরকে! বর্ণনা রয়েছে হিন্দুশাস্ত্রে
Odd বাংলা ডেস্ক: প্রাচীনতম গ্রন্থ ‘ঋগ্বেদ’ নরক সম্পর্কে উল্লেখ করলেও বিশদ কিছু জানায়নি। কিন্তু, ‘অথর্ববেদ’ এই বিষয়ে বিস্তারিত জানায়। আরও পরে ‘শতপথ ব্রাহ্মণ’-এর মতো শাস্ত্রে এবং ‘মনুস্মৃতি’-তে নরকের শ্রেণিবিভাগ করা হয় এবং জানানো হয় কোন পাপের জন্য কী শাস্তি সেখানে অপেক্ষা করে।
দেখে নেওয়া যেতে পারে সেই বর্ণনার কয়েক ঝলক।
তমিস্রা— পরের দ্রব্য অপহরণ, পরস্ত্রী অথবা অন্যের সন্তান হরণের মতো পাপের শাস্তি এই নরকে গমন। এই নরক নিশ্ছিদ্র অন্ধকার। এখানে যমদূতরা পাপীদের আত্মাকে নিরন্তর প্রহার করে।
অন্ধতমিস্রা— নাম শুনেই বোঝা যায়, এই নরকে তমিস্রার চাইতেও অন্ধকার। প্রতারণার শাস্তি এই নরকে গমন।
রৌরব— স্বার্থপরতার কারণে এই নরকে যেতে হয়। এখানে ‘রুরু’ নামধারী এক প্রকার সর্প জাতীয় দানব নিরন্তর নির্যাতন চালায়।
তপ্তমূর্তি— অবৈধ যৌন সম্পর্কের জন্য বরাদ্দ রয়েছে এই নরক। এখানে এক উত্তপ্ত লৌহমূর্তিতে পিছমোড়া করে বেঁধে বেত্রাঘাত করা হয় পাপীদের।
বজ্রকণ্ট-শল্মলী— যে ব্যক্তি পশু-সহবাস করে তাদের এখানে যেতে হয়। এখানে বজ্রের মতো কাঁটাওয়ালা একটি গাছে তার আত্মাকে বেঁধে রাখে যমদূতরা।
বৈতরণী— পৃথিবী ও নরকের মধ্যবর্তী এক নদী। এতে জল নেই। তার বদলে রয়েছে দুর্গন্ধময় সব বস্তু। যে সব ক্ষত্রিয় তাঁর কর্তব্যে অবহেলা করেছেন, তাঁদের এই নদীতে চুবিয়ে রাখা হয়।
রক্ষগণ-ভোজনম— নরবলি দেওয়ার মতো পাপের কারণে এই নরকে যেতে হয়। এখানে রাক্ষসরা পাপীদের আত্মাকে ভক্ষণ করে।
সূচিমুখ— অতিরিক্ত সন্দেহ প্রবণতার কারণে এই নরকে যেতে হয়। তা ছাড়া যাঁরা অতিমাত্রায় গর্বিত, অর্থের কারণে উদ্ধত, তাঁদের আত্মাকে যমদূতরা সূচ দিয়ে সেলাই করে।
কুম্ভীপাক— এই নরকে পশুহত্যার কারণে যেতে হয়। এখানে এক বিশাল কুম্ভে পাপীদের সূক্ষ্ম শরীরকে সিদ্ধ করে যমদূতরা।
কালসূত্র— ব্রহ্মহত্যার কারণে এই নরকে স্থান পায় আত্মারা। এই নরক তামা দ্বারা নির্মিত এবং তা অত্যন্ত উত্তপ্ত। এখানে তৃষ্ণার্ত আত্মারা হাহাকার করে।
শূকরমুখ— যে সব রাজকর্মচারী নিরীহ মানুষের উপরে নির্যাতন করেন, তাঁদের এই নরকে গমন করতে হয়। এখানে আখমাড়াই কলের মতো একটি যন্ত্রে তাকে নিষ্পেষণ করে যমদূতরা।
অন্ধকূপ— অন্যের ক্ষতিসাধন করার জন্য বরাদ্দ রয়েছে এই নরক। এখানে একটি কুয়োয় আত্মাদের রাখা হয়। সেই কুয়োর ভিতের বিবিধ হিংস্র প্রাণী আত্মাকে নিরন্তর আক্রমণ করে।
Post a Comment