কাচের জানালায় আছড়ে পড়ে বাদুড়! কেন জানেন?

Odd বাংলা ডেস্ক: বাদুড়। রাতের অন্ধকারে চোখে দেখতে না পেলেও বন বাদাড়ের মধ্য দিয়েও অতি দ্রুত উড়ে উড়ে খাবার ধরতে পারে তারা। ফাঁকা স্থানে হোক আর ঘন গাছপালা কিংবা দালান-কোটার মধ্যে হোক গভীর অন্ধকারেও ধাক্কা না খেয়ে ছুটে চলে তারা। 

কিন্তু জার্মানির মিউনিখের একদল গবেষক বলেছেন, বাদুড় তার সামনের সব বাধা অন্ধকারে বুঝতে পারলেও বাড়িঘরের কাচের জানালায় গিয়ে আছাড় খায়। এর কারণ অনুসন্ধানের দাবি করেছেন তারা।

গবেষকরা বলেছেন, রাতের বেলায় বাদুড় চোখের ব্যবহার করে না। তাদের ‘দেখার’ কাজটা করতে হয় কান দিয়ে। এ সময়ে এরা একধরনের শব্দ তরঙ্গ বাতাসে ছড়িয়ে দেয়। সেই শব্দ ঘরবাড়ি, গাছপালা, পাহাড়-পর্বত কিংবা বড় কোনো বাধার প্রতিফলিত হয়ে আবার ফিরে আসে বাদুড়ের কানে। বাদুড়ের মস্তিষ্ক প্রতিফলিত শব্দ বিশ্লেষণ করে বুঝতে পারে সামনের বাধাটা কত দূরে কিংবা কত বড়। শব্দ ছুঁড়ে দেওয়ার কতক্ষণ পর সেটা আবার কানে ফিরে এলো তার ওপর নির্ভর করেই বাদুড় বাধা ও খোলা পথের কাল্পনিক ‘ম্যাপ’ তৈরি করতে পারে। সেই ম্যাপ অনুযায়ী দ্রুতগতিতে ডানে-বায়ে সরে গিয়ে বাধা এড়ায়। বাদুড়ের মস্তিষ্ক এখানে কম্পিউটারের  মতো কাজ করে।

 

মিউনিখের ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট ফর অরনিথোলোজির গবেষক ড. স্টেফান গ্রিফ বলেন, বাদুড় খাবার খুঁজতেও শব্দতরঙ্গ ব্যবহার করে। ফিরে আসা শব্দ বিশ্লেষণ করেই তারা বুঝে ফেলে সামনে কোন ধরনের ফলমূল বা সবজি সামনে আছে। কিন্তু একটি ব্যাপারে তাদের ‘কম্পিউটার’ ব্যর্থ। আর তা হলো তাদের ছুড়ে দেয়া শব্দতরঙ্গ যদি খাড়া কাচ কিংবা একই জাতীয় খুব মসৃণ তলে গিয়ে আঘাত করে তাহলে সেটির বেশ খানিকটা বিচ্যুতি ঘটে। 

ফলে এই বিচ্যুত তরঙ্গ ব্যবহার করে বাদুড় বেশ বিভ্রান্ত হয়। তার ম্যাপ তাকে জানায় সামনে ‘কিছু নেই’। ফলে সোজা উড়ে গিয়ে কাঁচের জানালায় বাড়ি খায়। পরীক্ষা চালানোর সময় তারা বেশ কয়েক প্রজাতির ২১ টি বাদুড় ব্যবহার করেন। এদের মধ্যে ১৯টি বাদুড়ের ক্ষেত্রেই দেখা গেছে কাঁচের জানালায় গিয়ে তারা সজোরে আছাড় খেয়ে পড়ে যাচ্ছে। কিভাবে জানি দুটি বাদুড় ওই বাধা অতিক্রম করে গেছে। অথচ ওই একই স্থানে অন্য কোনো জিনিস দিয়ে আড়াল করলে বাদুড়রা ঠিকই সেটি শনাক্ত করে বাধা এড়িয়ে চলে যাচ্ছে।

বাদুড় যে শব্দ করে সেগুলো আমরা শুনতে পাই না কেন? পথচলা ও খাদ্য খোঁজার জন্য বাদুড় ইনফ্রাসনিক কিংবা আল্ট্রাসনিক শব্দ ব্যবহার করে। এসব শব্দ আমাদের কান ধরতে পারে না। তাই সেসব শব্দ মানুষের শুনতে পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.