আমেরিকার প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ মহিলা ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত কমলা হ্যারিস, চিনে নিন তাঁকে

Odd বাংলা ডেস্ক: মার্কিন নির্বাচনের ইতিহাসে এই প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ মহিলা ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসাবে নির্বাচিত হলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত কমলা হ্যারিস। নির্বাচনের আগে ক্যালিফোর্নিয়া থেকে নির্বাচিত সেনেটর কমলা হ্যারিসকে রানিং মেট হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জো বাইডেন। জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট হিসাবে নির্বাচিত হওয়ার পর এই প্রথম কোনও কৃষ্ণাঙ্গ মহিলা ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হলেন।

কে এই কমলা হ্যারিস?

মাস কয়েক আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কৃষ্ণাঙ্গ হত্যার প্রতিবাদে 'ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার' আন্দোলনে সোচ্চার হয়েছিলেন কমলা। তাঁর মা ভারতীয় এবং বাবা জামাইকান। মা শ্যামলা গোপালান ও বাবা ডোনাল্ড হ্যারিসের যখন বিবাহ বিচ্ছেদ হয় তখন কমলার বয়স মাত্র ৫ বছর। তাঁর একটি বোনও আছে, তাঁর নাম মায়া। মা শ্যামলা গোপালান ছিলেন একজন ক্যান্সার গবেষক। দুই মেয়েকে একা হাতে বড় করেন তাঁদের মা। শ্যামলা, কমলা ও মায়া- এই তিন জনে ‘শ্যামলা অ্যান্ড দ্য গার্লস’ নামে পরিচিত। বেড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে দুই মেয়ে যাতে তাঁদের শিকড় সম্পর্কে জানতে পারে, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করেছিলেন তাঁদের মা-ই।

আরও পড়ুন-  'ট্রাম্প-আউট'! আমেরিকার ৪৬তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন জো বাইডেন

একটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে, আত্মজীবনীতে নিজের নামের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি লিখেছেন, 'আমার নামের অর্থ পদ্মফুল, যা ভারতীয় সংস্কৃতিতে তাৎপর্যের প্রতীক। একটি পদ্ম নদীর তলদেশে বেড়ে ওঠে। একসময় এর ফুলগুলি জলের ওপরের অংসে প্রস্ফূটিত হয়। তবে, শিকড় নদীর তলায় দৃঢ়ভাবে থাকে।'

কমলা আরও লেখএন, 'আমার মা খুব ভালভাবেই বুঝতে পেরেছিলেন যে তিনি দুজন অ-শ্বেতাঙ্গ মেয়েকে বড় করছেন। তিনি জানতেন, এ দেশ আমাকে আর মায়াকে কৃষ্ণাঙ্গ হিসেবেই দেখবে। তিনি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিলেন যাতে আমরা আত্মবিশ্বাস ও গর্ব নিয়েই বেড়ে উঠি।' জনপ্রিয় মার্কিন গণমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট-এর একটি প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়েছিল যে, কমলা তাঁর ভারতীয় সংস্কৃতি গ্রহণ করেই বেড়ে হয়েছেন। কিন্তু তিনি গর্বের সঙ্গে আফ্রিকান-মার্কিন জীবনযাপন করেন।

২০১৫ সালে সেনেট নির্বাচনে লড়াইয়ের সময় ইকোনোমিস্ট ম্যাগাজিন তাকে 'একজন ভারতীয় ক্যান্সার গবেষক ও জামাইকান বংশোদ্ভুত অর্থনীতির অধ্যাপকের মেয়ে' হিসেবে বর্ণনা করে। তিনিই প্রথম আফ্রিকান-মার্কিন মহিলা যিনি ক্যালিফোর্নিয়ার প্রথম এশিয়ান অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে আইনজীবী ডগলাস এমফোফের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন কমলা। ভারতীয় এবং ইহুদি ঐতিহ্যের সঙ্গে মিল রেখেই বিয়ে করেন তাঁরা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের দাবি, আসন্ন নির্বাচনে ক্ষমতাসীন রিপাবলিকান দলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের বিপরীতে একজন আফ্রিকান-মার্কিন রাজনীতিবিদ হিসেবে শক্ত অবস্থান ধরে রাখবেন কমলা হ্যারিস। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় ও দক্ষিণ এশীয়দের মধ্যেও পূর্ণ গ্রহণযোগ্যতা পাবেন তিনি।

ইউএস ডেমোক্র্যাটিক পার্টির কর্মী শেখর নরসিমহন বলেন, তিনি মিশ্র সম্প্রদায় থেকে উঠে আসা একজন মহিলা। ভারতীয়-মার্কিনরা তাঁকে নিয়ে গর্ব করে। অনেকগুলি সম্প্রদায়ের মানুষকে তিনি খুব সহজেই আকৃষ্ট করতে পারবেন। জো বাইডেনের পক্ষে নির্বাচনে জয়লাভ করতে সহায়তা করবেন তিনি। 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.