প্রচারের আলো থেকে বীরভূমের নলহাটিতে বিরাজমান শান্ত-স্নিগ্ধ রূপে দেবী নলাটেশ্বরী
Odd বাংলা ডেস্ক: বীরভূমের নলাটেশ্বরী মন্দির। দেবীর একান্নটি সতীপীঠের মধ্যে একটি হল এই নলাটেশ্বরী মন্দির। কিন্তু প্রচারের আলো থেকে অনেকটাই দূরে থাকার কারণে এই মন্দিরের মাহাত্ম্য বেশি হলেও এনিয়ে মাতামাতি খুব একটা বেশি দেখা যায় না। কথিত রয়েছে সতীর গলার নলী পড়েছিল বলে এই থানের নাম নলাটেশ্বরী মতান্তরে নলহাটেশ্বরী মন্দির। আর সেই থেকেই সংশ্লিষ্ট এলাকার নাম হয় নলাহাটি।
তারাপিঠের খুব কাছে অবস্থিত হওয়া সত্ত্বেও নলাটেশ্বরীর মন্দির নিয়ে খুব একটা উদ্দীপনা আগে দেখা যেত না। কারণ এর অবস্থান। একটা সময়ে ঘন জঙ্গলে ঢাকা ছিল এই এলাকা, চারিদিক ছিল পাহাড় দ্বারা বেষ্টিত। একসময়ে এটি নলাটেশ্বরী পাহাড় নামেও প্রচলিত ছিল। রাজমহল পর্বতের পশ্চিমদিকে দেবীর মন্দিরটি অবস্থিত। পরে ধীরে ধীরে জনবসতি বাড়ার ফলে এই মন্দির এবং দেবীর মাহাত্ম্য সকলই সাধারণ মানুষের কানে পৌঁছেছে। এখন বীরভূমে এসে সাধারণ মানুষ তারা মা দর্শনের পাশাপাশি দেবী নলাটেশ্বরী মন্দিরও দর্শন করেন।
তবে এই নলাটেশ্বরী মন্দিরের উৎপত্তি কীভাবে হয়েছিল, তা নিয়ে কিন্তু নানারকম মতবাদ প্রচলিত রয়েছে। বলা হয় স্মরনাথ শর্মা নামে এক সাধককে মা কালী স্বপ্ন দিয়ে বলেছিলেন যে ওই স্থানে দেবীর নলি পড়েছে, সেখানে তিনি নলাটেশ্বরী দেবী রূপে অবস্থান করছেন। সাধক যেন সতীর অঙ্গ প্রতিষ্ঠা করেন। সাধকও সেই স্বপ্নাদেশ পেয়ে তাই করেছিলেন। বলা হয় এই সাধকের বংশধররাই নাকি বংস পরম্পরায় এই দেবীর পুজো করে আসছেন। নলাটেশ্বরী মন্দিরের উৎপত্তি নিয়ে আরও যে মতটি প্রচলিত রয়েছে, তা হল কাশীধামে হরগৌরির এক উপাসক ছিলেন, যাঁর নাম ছিল ব্রহ্মচারী কামদেব। তিনিই একদিন মাতা পার্বতীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে সেই স্থানে দেবী নলাটেশ্বরীকে প্রতিষ্ঠা করেন।
মন্দিরটি সনাতনী চারচালা ধাঁচে তৈরি। মন্দিরের গর্ভগৃহে অবস্থিত বিগ্রহটির উচ্চতা চার ফুট। দেবীর কেবল মুখমণ্ডলটিই প্রদর্শিত হয়। দেবী কালী রূপেই পূজিতা হন নলাটেশ্বরী। কিন্তু দেবীর চিত্ত এখানে বড়ই স্নিগ্ধ ও শান্ত। প্রতিবছর দীপান্বিতা অমাবস্যা তিথিতে এখানে প্রত্যেক বছর অসংখ্য ভক্তের ঢল নামে।
Post a Comment