এক ঝলক দেখে মনে হবে দক্ষিণেশ্বর মন্দির, কিন্তু এখানে বিরাজ করছেন মা অন্নপূর্ণা, জেনে নিন তার কাহিনি
Odd বাংলা ডেস্ক: দুটি হুবহু একইরকম জিনিস দেখলে কোনটা আসল, কোনটা নকল যেমন গুলিয়ে যেতে পারে, সেরকমই এরাজ্যেই রয়েছে দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দিরের রেপ্লিকা, যাকে এক ঝলকে দেখলে দক্ষিণেশ্বর মন্দির বলে ভুল হতে পারে। একেবারে দক্ষিণেশ্বরের মা ভবতারিণীর মন্দিরের আদলে নবরত্ন শৈলীতে নির্মিত হয়েছে ব্যারাকপুরের শিবশক্তি অন্নপূর্ণা মন্দির। রয়েছে দক্ষিণেশ্বরের মতোই নাটমন্দির, সঙ্গে শিবমন্দিরও। তবে এখানে শিবমন্দিরের সংখ্যা ৬টি।
ব্যারাকপুর সংলগ্ন বয়ে চলা হুগলী নদীর রাসমণি ঘাটের খুব কাছেই অবস্থান করছে শিবশক্তি অন্নপূর্ণা মন্দির। কৌতুহল থেকে তো অবশ্যই পাশাপাশি এখানকার নিত্য পুজো দর্শন করতেও অসংখ্য মানুষের পা পড়ে এই পূন্যভূমে।
আরও পড়ুন- শ্যামা কালী, কৃষ্ণ কালী, ক্ষ্যাপা কালী, শ্মশান কালীর নাম তো শুনেছেন, 'চানাচুর কালী'র নাম শুনেছেন কি?
মন্দিরের ইতিহাস-
বলা বয়, কাশী ধামে মা অন্নপূর্ণার দর্শন করতে যাচ্ছিলেন রানি রাসমণি। বর্তমান হুগলি নদীর ওপর দিয়েই বয়ে চলেছিল তাঁর বজরা। কিন্তু দক্ষিণেশ্বরের কাছে গিয়ে এক ভয়ানক দুর্যোগের কবলে পড়েন রানিমা ও তাঁর বজরা। ফলে সে রাতের জন্য সেখানেই নোঙর ফেলা হয়। সেই রাতে রানি স্বপ্নাদিষ্ট হন যে, কাশীতে না গিয়ে তিনি যেন ভাগীরথীর পাড়ে ওই স্থানে নির্মাণ করেন এক মন্দির এবং আয়োজন করেন নিত্য পুজোর। সেইভাবে গড়ে ওঠে দক্ষিণেশ্বরের কালী মন্দির।
আরও পড়ুন- পাগল সাধক দেখা পেয়েছিলেন মায়ের, তাঁর জন্যই শান্ত হয়েছে মা গঙ্গা, রইল মালদহের পাগলী কালীর গল্প
রানি রাসমণির অন্নপূর্ণা দর্শনের সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন জামাই মথুরামোহন বিশ্বাসও। ফলে তাঁরও কাশির অন্নপূর্ণা দর্শন হয়নি। এবং সেই সাধ পূরণ করার জন্য বাংলার মাটিতেই তিনি এক অন্নপূর্ণা মন্দির নির্মাণের পরিকল্পনা করেন। আর তাঁর সেই কাজ সফল করেন স্ত্রী জগদম্বা দেবী। জানা যায়, দক্ষিণেশ্বর মন্দির নির্মাণে যে কারিগররা নিযুক্ত ছিলেন, তাঁদেরই অনেকেই জগদম্বা দেবীর অন্নপূর্ণা মন্দির তৈরির সময়ও ছিলেন। যদিও, দক্ষিণেশ্বর মন্দির তৈরির প্রায় ২০ বছর পরে নির্মাণ করা হয় এই অন্নপূর্ণা মন্দিরটি। প্রসঙ্গত, দক্ষিণেশ্বরের কালী মন্দিরের পৌরহিত্য করার জন্য রানি রাসমণি নিয়ে এসেছিলেন রামকুমার চট্টোপাধ্যায়কে। তাঁর মৃত্যুর পরে, মন্দিরের দায়িত্ব এসে পড়ে তাঁর ছোট ভাই রামকৃষ্ণ চট্টোপাধ্যায়ের উপর। যিনি হয়ে ওঠেন যুগাবতার শ্রী শ্রী ঠাকুর রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব। পরবর্তীকালে, রানিমার মেয়ে, জগদম্বা দেবীর অন্নপূর্ণা মন্দিরের দ্বারোদঘাটন হয় শ্রী শ্রী ঠাকুরের হাতেই।
Post a Comment