অগ্রহায়ণ মাসের রবিবার করে পালন করা হয় ইতুপুজো, জানুন এর মাহাত্ম্য

Odd বাংলা ডেস্ক: এরাজ্যের অগ্রহায়ণ মাসের প্রতি রবিবার ইতু ঠাকুরের পুজো করে থাকেন মহিলারা। ইতু পুজোর নিয়মে বলা হয়েছে, কার্ত্তিক মাসের সংক্রান্তি থেকে অগ্রহায়ণ মাসের সংক্রান্তি পর্যন্ত পুজো করা হয়। অগ্রহায়ণ মাসের প্রতি রবিবারে পুজো করে সংক্রান্তির দিন পুজো সম্পাদন করতে হয়। অর্থাৎ ইতুকে বিসর্জন দিতে হয়।

কে এই ইতু ? ইতুর এক নাম মিত্র। অগ্রহায়ণ মাসে সূর্য মিত্র নামেই পরিচিত। মূলত, রবিবার পুজো করা হয় বলে সূর্যের পুজো বলা হয়। অবশ্য ইতু পুজোকে সূর্য উপাসনা বলা হলেও এই পুজোর রীতিও উপাচার বিশ্লেষণ করে ইতুকে মাতৃকাদেবী রূপেই গণ্য করেন অনেকে। আসলে ইতুর ঘটের গায়ে পুতুল আঁকা এবং ভেতরে শস্যদানা ও দুর্বাগুচ্ছ রাখা আর প্রতীকী শষ্যক্ষেত্র মাতৃপ্রতীক বলেই মনে হয়।

কার্ত্তিক সংক্রান্তির আগে থেকেই ইতুর পাত্র ও ঘটের পসরা কেনার জন্য কুমোরের দোকানে ভিড় জমান মেয়ে-বউরা। খড়ের বিঁড়ের উপর বসানো হয় ইতুর সরা। সরাতে দেওয়া হয় মাটি। মাটিভর্তি সরা বা গামলার মাঝে একটি ঘট স্থাপন করতে হয়। বাকি অংশে কলমী, শুষনীর মূলসহ শাক, সর্ষে, ধানের বীজ, মানকচুর মূল লাগানো হয়। আর ছোলা-মটর-মুগ-তিল যব সহ আট রকমের শস্যও ছড়ানো হয়। ইতুর গাছগুলোকে বাঁচানোর জন্য সরা বা গামলার মধ্যবর্তীস্থানে রাখা ঘটটিতে জল দিতে হয়। প্রতি রবিবার পুজোর সময় এই জল দিয়ে থাকে মেয়েরা।

মেয়েরা নিজেরাই এই পুজো করে থাকেন। প্রার্থনা জানান, যে জ্যোতির দ্বারা তুমি অন্ধকার নষ্ট কর এবং যে কিরণের দ্বারা সমস্ত বিশ্ব জগৎ প্রকাশ কর, তার দ্বারা আমাদের সর্বপ্রকার দরিদ্রতা নষ্ট হোক, সকলের পাপ, রোগ ও দুঃস্বপ্ন দূর হোক। কোথাও কোথাও আবার ইতুকে সাধভক্ষণের প্রথাও রয়েছে। সেদিন নতুন গুড় ও চাল দুধ দিয়ে পরমান্ন তৈরি করে নিবেদন করা হয়।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.