অপার রহস্যে মোড়া একান্ন সতীপীঠের অন্যতম এই মন্দির! লুকিয়ে রয়েছে এক অজানা কাহিনি
Odd বাংলা ডেস্ক: দেবীর একান্ন পীঠের মধ্যে একটি পীঠস্থান হল পূর্ব মেদিনীপুর জেলার অন্তর্গত তমলুকের মা বর্গভীমা মন্দির। কালী পুজোর সময় প্রত্যেক বছর দূর-দূরান্ত থেকে অগণিত দর্শনার্থীরা আসেন এই বর্গভীমা মায়ের মন্দিরে। পূরাণে কথিত রয়েছে, বিষ্ণুর সুদর্শন চক্রে খণ্ডিত হয়েছিল সতীর দেহ। আর সেই সময়ে দেবীর দেহের বাম গুল্ফ অর্থাৎ বাম পায়ের গোড়ালি পড়েছিল তমলুকে। সেই থেকে দেবীর একান্নপীঠের অন্যতম বলা হয় তমলুকের এই বর্গভীমা মন্দির।
মন্দির কর্তৃপক্ষের কথায়, প্রতি বছর কালীপুজোয় তমলুকের বর্গভীমা মন্দিরে সাড়ম্বরে পূজিতা হন দেবী। দেবী এখানে উগ্রচণ্ডা। কথিত আছে, মন্দিরটি নির্মাণ করেছিলেন স্বয়ং বিশ্বকর্মা। আবার অনেকের মত, এটি একটি বৌদ্ধবিহার ছিল। তবে তমলুকের স্থানীয় বাসিন্দাদের কথায়, সেখানকার ময়ূরবংশীয় রাজাই তৈরি করেছিলেন ওই মন্দির। তবে যা-ই হোক না কেন অসংখ্য মানুষের বিশ্বাস এবং ভরসার আধার হল এই বর্গভীমা মন্দির।
অনেকের কথায়, এখানে দেবী এতটাই জাগ্রত যে তাঁর কাছে কিছু চাইলেই পাওয়া যায়। কালী পুজোর দিন তমলুকের যে সকল ক্লাব কালী পুজো করে তারা পুজোর দিন শোভাযাত্রা সহকারে বর্গভীমা মন্দিরে এসে পুজো দেন। জানা যায়, দেবী বর্গভীমাকে কেন্দ্র করে বেশ কিছু কাহিনিও কথিত রয়েছে। লোকমুখে শোনা যায়, এক ধীবর রমণী প্রতিদিন রাজবাড়িতে জ্যান্ত মাছের জোগান দিত। কিন্তু রোজ জ্যান্ত মাছের জোগান নিয়ে একদিন রাজার সন্দেহ হয়। কৌতূহল বাড়ে রাজার। তারপরে জানা যায়, স্থানীয় একটি জঙ্গলে একটি রহস্যময় কুণ্ড আছে। যার জল ছিটিয়ে দিলে মৃত মাছ প্রাণ ফিরে পায়। সেভাবেই রাজাকে রোজ জ্যান্ত মাছ দিত ওই ধীবর রমণী।
একদিন ওই কুণ্ড দেখবেন বলে জঙ্গলে গিয়েছিলেন রাজা। কিন্তু সেদিন তিনি কোনও কুণ্ড দেখতে পাননি। দেখেন কুণ্ডের বদলে একটি বেদি রয়েছে। আর তার উপরে রয়েছে এক দেবীর মূর্তি। তার পরে রাজা নিজেই সেখানে একটি মন্দির তৈরি করেন। তমলুকে যেহেতু দেবী বর্গভীমা বিরাজ করছেন তাই এই অঞ্চলে আগে কোনও শক্তিপূজা হত না। এখন এই তমলুক এলাকাতে শক্তি পুজো হয়। তবে এখানে বাড়ির কিংবা বারোয়ারি পুজো শুরু করার আগে দেবী বর্গভীমার কাছে পুজো দিয়ে অনুমতি নেওয়ার প্রচলন চলে আসছে বহুদিন ধরেই।
Post a Comment