বিশ্বের মধ্যে এটাই প্রথম দেশ, যেখানে মহিলাদের জন্য স্যানিটারি ন্যাপকিন দেওয়া হবে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে


Odd বাংলা ডেস্ক: বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে মেয়েদের ঋতুস্রাবকালীন প্রয়োজনীয় পণ্য বিনামূল্যে সরবরাহ করার আইন পাস করেছে স্কটল্যান্ড সরকার। মঙ্গলবার সেদেশে পার্লামেন্টে 'পিরিয়ড প্রোডাক্টস (ফ্রি প্রভিসন) বিল' পাস হয়।  এই আইনের মাধ্যমে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করবে যে, এখন থেকে যদি কারওর ঋতুস্রাবকালীন কোনো পণ্যের (যেমন: তুলো ও স্যানিটারি প্যাড) প্রয়োজন হয়, তাহলে তিনি যেন সেগুলো বিনামূল্যে ও সহজে সংগ্রহ করতে পারেন। 

বিলটি উত্থাপন করেন স্কটিশ পার্লামেন্টের সদস্য মনিকা লেনন। ২০১৬ সাল থেকে তিনি মেয়েদের 'পিরিয়ড পোভার্টি' দূরীকরণে প্রচার চালিয়ে আসছেন। মনিকা লেনন বলেন, করোনা মহামারীর কারণে এর আগে তৈরি সব আইনের মতোই এটি পাস করা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল। কারণ মহামারীর কারণে তো আর মেয়েদের ঋতুস্রাব থেমে থাকে না। এছাড়া এ সময় প্রয়োজনীয় তুলো, প্যাড ও অন্যান্য পণ্যগুলো সহজে পাওয়ার ব্যবস্থার বিষয়টির আগে কখনওই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠেনি।

মেয়েদের ঋতুসাব সাধারণত তিন থেকে পাঁচ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হয়। এ সময় তুলো, প্যাড ও অন্যান্য পণ্য কিনতে যে খরচ হয়, তা বহন করতে অনেক মেয়েকেই হিমশিম খেতে হয়। কারণ প্রতিটি দেশেই স্যানিটারি পণ্যের মূল্য বেশ চড়া, যার জন্য প্রতিমাসে একটি বড় অঙ্কের টাকা খরচ করতে হয়।

দু'হাজার নারীর ওপর পরিচালিত ইয়ং স্কট-এর এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, স্কটল্যান্ডের স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ঋতুস্রাবকালীন প্রয়োজনীয় পণ্য পেতে প্রতি চারজনে একজন সমস্যার সম্মুখে পড়েন। গবেষণায় দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যে শতকরা ১০ শতাংশ মেয়ের ঋতুস্রাবকালীন প্রয়োজনীয় পণ্য কেনার সামর্থ্য নেই। এছাড়া ১৫ শতাংশ মেয়েকে এসব পণ্য পেতেও অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয় এবং দামের কারণে ১৯ শতাংশ পেয়ে যথাযথ পণ্য ব্যবহার করতে পারেন না।

গবেষকরা বলছেন, বিশেষত তরুণীদের জন্য এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ১৪ থেকে ২১ বছর বয়সী ৭১ শতাংশ মেয়ে ঋতুস্রাবকালীন প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে বিব্রত বোধ করেন। গবেষকরা আরও বলছেন, মেয়েদের পড়াশোনার ওপর ঋতুস্রাব যে প্রভাব ফেলে তা এ ধরনের আইন প্রতিরোধ করবে। কারণ, ঋতুস্রাবের সময় প্রায় অর্ধেক মেয়ে স্কুলে আসতে পারে না। গত বছরে স্কুলে মেয়েদের বিনামূল্যে স্যানিটারি পণ্য সরবারহের উদ্যোগ নেয় ইংল্যান্ড। চলতি বছরের প্রথম দিকে নিউজিল্যান্ডও একই পদক্ষেপ নেয়।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.