মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরও করুণ পরিণতি হয়েছিল যাঁদের
Odd বাংলা ডেস্ক: মার্কিন মুলুকে চলছে সাদা বাড়ির লড়াই। কে থাকবে এই বাড়িতে? বলছিলাম হোয়াইট হাইজের কথা। আর যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় থাকা প্রেসিডেন্টরাই কেবল থাকতে পারেন এই বাড়িতে। ক্ষমতা শেষ, তো ছাড়তে হবে বাড়ি।
প্রেসিডেন্টের পদে এ পর্যন্ত যারা নির্বাচিত হয়েছেন তাদের বেশির ভাগই দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব পালনের সৌভাগ্য হয়েছে।
কিন্তু সময়েএক যায় না কখনো। আমেরিকার ইতিহাসে ১০ জন প্রেসিডেন্টের ভাগ্যে ঘটেছিল করুণ পরিণতি। তাদের প্রথম মেয়াদেই ছাড়তে হয় হোয়াইট হাউস।
এবারো কি তাই ঘটতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে? ৫৯তম মার্কিন নির্বাচনের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের এখনো আনুষ্ঠানিক ফল ঘোষণা না হলেও, ট্রাম্পকে পেছনে ফেলে জয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন বাইডেন। আর এতেই দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট না থাকার খাতায় নাম উঠতে যাচ্ছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের।
চলুন জেনে নেই সেই হত্যভাগ্য প্রেসিডেন্টের গল্প।
শুরুটা হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় প্রেসিডেন্ট জন অ্যাডামসকে দিয়ে।
জন অ্যাডামস: (১৭৯৭- ১৮০১)
ছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি এবং প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট। তিনি ছিলেন একজন আইনজীবী, কূটনীতিক, রাজনৈতিক ভাষ্যকার, ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জনকদের মধ্যে অন্যতম। ফ্রান্সের সঙ্গে এক ছায়াযুদ্ধে তিনি লিপ্ত হয়েছিলেন, যার খেসারত তাকে নির্বাচনে দিতে হয়েছিল।
জন কুইন্সি অ্যাডামস: (১৮২৫-১৮২৯)
তিনি ছিলেন ষষ্ঠ মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় প্রেসিডেন্ট জন অ্যাডামসের জ্যেষ্ঠ পুত্র। তিনি মূলত দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে হেরে যান।
গ্রোভার ক্লেভলেন্ড: (১৮৮৫-১৮৮৯)
তিনি আমেরিকার ২২তম ও ২৪তম প্রেসিডেন্ট। তিনি ১৮৮৪ ও ১৮৯২ সালে নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৮৮ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচন করে বেনজামিন হ্যারিসনের কাছে হেরে যান। তবে, ১৮৯২ সালে তিনি বেনজামিন হ্যারিসনকে হারিয়ে আবারো প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
বেনজামিন হ্যারিসন: (১৮৮৯-১৮৯৩)
তিনি ১৮৮৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন কিন্তু দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচন করে তিনি গ্রোভার ক্লেভলেন্ডের কাছে হেরে গিয়েছিলেন। তিনি পঞ্চম প্রেসিডেন্ট, যিনি দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচন করে হেরে যান।
উইলিয়াম হওয়ার্ড টাফট: (১৯০৯-১৯১৩)
তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে একমাত্র ব্যক্তি যিনি প্রেসিডেন্ট ও প্রধান বিচারপতি এই দুই পদেই ছিলেন। তাকে বলা হতো মার্কিন প্রেসিডেন্টদের মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ মানের। তিনি ১৯০৯ থেকে ১৯১৩ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন। তিনি আফ্রো-আমেরিকানদের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন এবং নির্বাচনে হেরে যান।
হার্বার্ট হোবার: (১৯২৯-১৯৩৩)
১৯২৮ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন হোবার। ১৯২৯ সালে মহামন্দার কারণে দেশের আমেরিকার অর্থনীতি বিপর্যয়ে পড়ে। হোবারকে দেশের শাসন ব্যবস্থার চেয়ে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে বেশি মনযোগী হতে হয়। যার কারণে তিনি তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ হন। পরে ১৯৩২ সালের নির্বাচনে ফ্রাঙ্কলিন রুজভেল্টের কাছে হেরে যান হোবার।
জেরাল্ড ফোর্ড: (১৯৭৪- ১৯৭৭)
ঐতিহাসিক ওয়াটার গেট কেলেঙ্কারি মাথায় নিয়ে রিচার্ড নিক্সন যখন ক্ষমতা ছাড়েন তখন যুক্তরাষ্ট্রের দায়িত্ব নেন ফোর্ড। ১৯৭৪ থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন। ১৯৭৭ সালের দ্বিতীয় নির্বাচনে জিমি কার্টারের কাছে হেরে যান।
মি কার্টার: (১৯৭৭-১৯৮১)
একজন আমেরিকান রাজনীতিবিদ, লেখক এবং ডেমোক্রেটিক পার্টির সদস্য, যিনি ১৯৭৭ থেকে ১৯৮১ সাল যুক্তরাষ্ট্রের ৩৯তম রাষ্ট্রপতির দায়িত্বে ছিলেন। তিনি দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচন করে রোনাল্ড রিগ্যান এর কাছে হেরে যান। জিমি কার্টার ২০০২ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।
জর্জ এইচডব্লিউ বুশ: (১৯৮১- ১৯৯৩)
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ইতিহাসে সর্বশেষ প্রেসিডেন্ট যিনি দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হতে পারেননি। তিনি ১৯৯২ সালে বিল ক্লিনটনের কাছে হেরে যান। সিনিয়র বুশ রিগ্যান সরকারের ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন ১৯৮১ সাল থেকে ১৯৮৯ পর্যন্ত। তিনি নানা বিষয়ে উপসাগরীয় অঞ্চলে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লে ক্ষমতায় থাকতে পারেননি।
জন এফ কেনেডি: (১৯৬১-১৯৬৩)
১০ জন প্রেসিডেন্টের মধ্যে একজনের হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। তিনি হলেন ৩৫তম প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি। দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচনের আগেই আততায়ীর হাতে নির্মমভাবে নিহত হন।
Post a Comment