শুধুই রূপকথা নাকি বাস্তবেও রয়েছে মৎস্যকন্যারা

Odd বাংলা ডেস্ক: হাজার বছর ধরে মানুষের একটি বিশাল প্রশ্ন হচ্ছে মৎস্যকন্যা বাস্তবে আছে? না কি নেই! এই প্রশ্নের উত্তর আজো খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে পৃথিবীর প্রায় সব অঞ্চলের উপকথাতেই এ ধরনের প্রাণীর গল্প প্রচলিত আছে। 

মৎস্যকন্যা বা মারমেইড হচ্ছে এক ধরনের জলজপ্রাণী, যার উপরের অংশ নারীর মতো এবং নিচের অংশ মাছের মতো দেখতে। পৃথিবীর সব আদি সভ্যতার গল্পকাহিনীতে মারমেইড বা মৎস্যকন্যাদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। সেই প্রাচীনকাল থেকেই মারমেইডদের নিয়ে অনেক লেখালেখি হয়েছে। 

১। সাহিত্যে এদের সবচেয়ে পুরনো নিদর্শন হল ব্যাবিলনীয় সভ্যতায়। ওয়াল্ট ডিজনির বিখ্যাত সৃষ্টি লিটল মারমেইডের গল্পতো সবার জানা। এমনকি আধুনিক যুগেও মৎস্যকন্যাদের নিয়ে  প্রচুর লেখালেখি ও গবেষণা হচ্ছে। অনেকেই দাবি করছেন, তারা নাকি মৎস্যকন্যা দেখেছেন। তবে সত্যি কি মৎস্যকন্যা বলতে কিছু আছে? চলুন আজ জানবো সে সম্পর্কে। 

শোনা যায় বিখ্যাত গ্রীক বীর আলেকজান্ডারের সঙ্গে এই জলপরী বা মৎস্যকন্যার কোনো সম্পর্ক ছিল। কি সেই সম্পর্ক ? আলেকজান্ডারের বোন ছিলেন ম্যাসিডনের রাজকন্যা থেসালোনিকে ছিলেন একজন মারমেড বা মৎসকন্যা। তিনি এজিয়ান সাগরে বাস করতেন। কথিত আছে আলেকজান্ডারের মৃত্যুর পর তিনি মাঝেমধ্যেই এজিয়ান সাগরের কোনো চলন্ত জাহাজের পাশে জল থেকে উঠে প্রশ্ন করতেন আলেকজান্ডার কি এখনো জীবিত ? 


২। তবে এরপর কেউ যদি তাকে বলার চেষ্টা করত এবং জানাত যে আলেকজান্ডার মৃত, তবেই ঘটে যেত বিপর্যয়। মুহূর্তে জাহাজ তলিয়ে যেত সমুদ্রের তলায়। সেই কারণেই রীতি এটাই ছিল যে জলকন্যা তথা থেসালোনিকের সেই প্রশ্ন ধেয়ে এলেই উত্তর হবে আলেকজান্ডার জীবিত , তিনি রাজত্ব করছেন এবং তিনি পৃথিবী জয় করছেন। 

তবে আলেকজান্ডারের পাশাপাশি কলম্বাসেরও মৎসকন্যা বা মারমেডের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে। ১৪৯৩ সালে কলম্বাস দাবি করেছিলেন যে তিনি মৎস্যকন্যা দেখেছেন। মৎস্যকন্যার সঙ্গে জলদস্যুদের যোগাযোগ এবং মিলিতভাবে সাধারণ মানুষকে সর্বস্বান্ত করার কাহিনীও কলম্বাস লিখেছেন তার কাহিনীতে। 

৩। এমনকি ১৮৮১ সালে পেনসিলভ্যানিয়ার এক জেলে দাবি করেন যে তিনি মৎস্যকন্যা দেখেছেন। তবে মৎস্যকন্যা সম্পর্কিত সমস্ত সন্দেহের অবসান ঘটে ২০০৯ সালে। ইজরায়েলের উপকূল শহরের বাসিন্দা কিরইয়াত ইয়াম ঘোষণা করেন যারা মৎস্যকন্যা আছে এই বিষয়ে উপযুক্ত প্রমাণ দেখাতে পারবেন তাদের তিনি এক মিলিয়ন ডলার পুরস্কার প্রদান করবেন। যথারীতি এ তত্ত্বের স্বপক্ষে কেউই যথোপযুক্ত প্রমাণ দিতে সক্ষম হননি।

৪। ২০১২ এবং ২০১৩ সালে অ্যানিম্যাল প্ল্যানেট চ্যানেল থেকে মারমেডের ওপর দুটি শো প্রদর্শিত করা হয় যথাক্রমে 'মারমেইডস দ্য বডি ফাউন্ড' এবং 'মারমেইডস  নিউ এভিডেন্স '। স্বাভাবিক ভাবেই এই দুই শো দর্শকমহলে এত জনপ্রিয় হয় যে ন্যাশনাল ওশেন সার্ভিস বাধ্য হয় শো দুটিকে কাল্পনিক ঘোষণা করতে এবং মারমেড জাতীয় কোনো প্রাণীর অস্তিত্বের প্রমাণ পাওয়া যায়নি এই বিবৃতি দিতে। সুতরাং মারমেড আছে না নেই সেই তর্ক চলতেই থাকবে, তার চেয়ে বরং রূপকথার বই খুলে আরো একবার ফিরে যাওয়া যাক মৎস্যকন্যাদের রাজ্যে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.