কৃত্রিম চিনিতে ক্যানসার, ঠিক না ভুল?

Odd বাংলা ডেস্ক: ক্যালোরি প্রায় তৈরি করে না বলে চিনি খাওয়ার চেয়ে স্যাকারিন, অ্যাসপার্টেম, সুগার ফ্রি-র মতো কৃত্রিম সুইটেনার বা ‘নকল চিনি’ খাওয়র পক্ষে অনেক মানুষ। আবার অনেকে অস্বাস্থ্যকর এবং ক্যান্সারের ভয় আছে ভেবে এগুলো এড়িয়ে চলে। তবে সম্প্রতি একদল গবেষক বলছেন, নকল চিনি ক্যানসার তৈরি করে এই চিন্তা একেবারে অযৌক্তিক।

চিনির চেয়ে কি মানুষের পক্ষে স্বাস্থ্যকর হতে পারে ‘নকল চিনি’ খাওয়ার অভ্যাস? এই নিয়ে সম্প্রতি আমেরিকা ও ব্রিটেনে বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে একটি সমীক্ষা চালানো হয়েছে। সেই সমীক্ষায় বেশির ভাগ বিশেষজ্ঞেরই মতামত গিয়েছে ‘নকল চিনি’র পক্ষে।

বিশেষজ্ঞদের একটি অংশ জানিয়েছেন, চিনি খাওয়া হলে মানবশরীরে ঢুকে তা প্রচুর পরিমাণে ক্যালোরি তৈরি করে। যা দেহের ওজন বাড়ানোর সহায়ক হয়ে ওঠে। পক্ষান্তরে কৃত্রিম সুইটনার শরীরে ঢুকে কোনও ক্যালোরিই তৈরি করে না। তাই একে বলা হয় ‘জিরো ক্যালোরি ফুড’। সেই হিসেবে ‘নকল চিনি’-র পক্ষে মানুষের ওজন বাড়ানোর সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়। আর ‘নকল চিনি’ খেলে কোনও ক্যানসারের আশঙ্কাও থাকে না। থাকে না হৃদ্‌রোগের আশঙ্কাও।

বিশ্বে প্রথম কৃত্রিম সুইটনার ‘স্যাকারিন’-এর আবিষ্কার হয়েছিল ২৪২ বছর আগে। ১৮৭৯ সালে জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইরা রেমসেন তার গবেষণাগারে কাজ করছিলেন নানা ধরনের রাসায়নিক নিয়ে। হঠাৎ তিনি দেখেন তাঁর হাতের তালু স্বাদে মিষ্টি হয়ে গিয়েছে। সেটা কী ভাবে হল? কারণ খুঁজতে গিয়ে নতুন পদার্থ, কৃত্রিম ‘চিনি’ স্যাকারিন আবিষ্কার করেন ইরা। পরে দেখা গিয়েছে চিনির চেয়ে ২০০ গুণ বেশি মিষ্টি স্যাকারিন। দামে সস্তা বলে পরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় চিনির আকালে রীতিমতো জনপ্রিয় হয়ে ওঠে স্যাকারিন।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন কৃত্রিম সুইটনার সাধারণত দু’ধরনের হয়। সুগার অ্যালকোহল ও সুইটনার। গঠনগত দিক দিয়ে চিনির মতো হলেও সুগার অ্যালকোহল সহজে বিপাকযোগ্য নয়। কিন্তু সুইটনার চিনির অণুর চেয়ে আকারে অনেক ছোট হলেও অনেক বেশি মিষ্টি। আবার সহজে বিপাকযোগ্যও। মানবশরীরে সুইটনারগুলি কোনও ক্যালোরি তৈরি করে না বলে এটা ভাবা ঠিক না সুইটনার মানবশরীরে কারও সঙ্গে কোনও বিক্রিয়াই করে না। করে। মানুষের জিভে ‘টি-ওয়ানআর’ পরিবারের যে মিষ্টস্বাদ গ্রাহক রিসেপ্টর কোষগুলি রয়েছে, তাদের সঙ্গে বিক্রিয়া হয় সুইটনারগুলির। বিক্রিয়া করে মানুষের অন্ত্রে থাকা কয়েকটি ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গেও। এভাবেই সুইটনার মানবশরীরে বিপাকযোগ্য হয়ে ওঠে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.