হাঁচি দিলেই নাক থেকে বের হচ্ছে জ্যাঁন্ত পোকা

Odd বাংলা ডেস্ক: বাংলাদেশের ঘটনা। কুমুদিনী বালা নামে এক বৃদ্ধার নাক থেকে বের হয়েছে জীবন্ত পোকা। গত শনিবার সকালে তার নাক থেকে হঠাৎ একটি পোকা বের হয়ে আসে। এরপর রোববার চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে আরো ৬০টি পোকা বের করা হয়। 

সোমবার বের করা হয় আরো ২০ টি পোকা। এমন ঘটনার কথা ভাবা যায়? এমন ঘটনা অবাস্তব মনে হলেও সত্যি ঘটেছে। কারণ পোকা তার মাথার ভেতর বাসা বেঁধেছে। 

চিকিৎসকরা বলেছেন, নাক, চোখ ও কপালের অভ্যন্তরে একাংশে ফাঁকা জায়গা থাকে। কোনোভাবে পোকা সেখানে প্রবেশ করে খালি স্থানে বাসা বাঁধে। সেখানে ডিম পাড়ে। পরে সেই ডিম থেকে বাচ্চা বের হওয়া শুরু করে। কুমুদিনী বালার ক্ষেত্রে একই ঘটনা ঘটেছে। 

বর্তমানে কুমুদিনী বালা বরিশাল নগরীর ব্রাউন কম্পাউন্ড এলাকার প্রাইভেট ক্লিনিক রয়েল সিটি হাসপাতালের চার তলার ৪০২ নম্বর কক্ষে ইএনটি বিশেষজ্ঞ খান আব্দুর রউফের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। 

কুমুদিনী বালা পটুয়াখালী সদর উপজেলার কাকড়াবুনিয়া এলাকার মৃত অমূল্য চন্দ্র হালদারের স্ত্রী।

কুমুদিনী বালার ছেলে মন্টু হালদার বলেন, বেশ কয়েক বছর ধরে প্যারালাইসিসের কারণে তার মা কুমুদিনী বালার হাত-পা অবশ। সেগুলো নাড়াচাড়া করতে পারেন না। শনিবার সকালে তার নাক থেকে হঠাৎ করে একটি জীবন্ত পোকা বের হতে দেখা যায়। আমরা চিন্তায় পড়ে যাই। এটা কীভাবে সম্ভব। আমরা ঘাবড়ে যাই। পটুয়াখালীর একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে নিয়ে গেলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে দেখানোর পরামর্শ দেন। ওইদিন বরিশাল নগরীর ব্রাউন কম্পাউন্ড এলাকার প্রাইভেট ক্লিনিক রয়েল সিটি হাসপাতালে তাকে ভর্তি করানো হয়। ইএনটি বিশেষজ্ঞ খান আব্দুর রউফের তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা শুরু হয়।

মন্টু হালদার জানান, গত রোববার চিকিৎসক খান আব্দুর রউফ এক ধরনের যন্ত্র ব্যবহার করে মায়ের নাকের ভেতর থেকে জীবন্ত ৬০ টি পোকা বের করেন। একইভাবে সোমবার আরো ২০ টি পোকা বের করেন।

রয়েল সিটি হাসপাতালের চেয়ারম্যান ও ইএনটি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক খান আব্দুর রউফ বলেন, এ রোগের নাম হচ্ছে ‘ম্যাগোট ইন দ্যা নোজ এন্ড প্যারানাজাল এয়ার সাইনাস’। নাক, চোখ ও কপালের অভ্যন্তরে একাংশে ফাঁকা জায়গা থাকে। কোনোভাবে পোকা সেখানে প্রবেশ করতে পারলে খালিস্থানে বাসা বাধে। সেখানে ডিম পাড়ে। এরপর ওই ডিম থেকে বাচ্চা বের হয়। কুমুদিনী বালার ক্ষেত্রে একই ঘটনা ঘটেছে। কারণ তিনি বেশ কয়েক বছর ধরে প্যারালাইসিসের কারণে দুই হাত নাড়াচাড়া করতে পারেন না। ধারণা করা হচ্ছে সেই সুযোগে ঘুমিয়ে থাকা বা অচেতন অবস্থায় পোকা তার নাক অথবা কান দিয়ে প্রবেশ করে খালি স্থানগুলোতে বাসা বেঁধেছে।

চিকিৎসক খান আব্দুর রউফ বলেন, হনুফার অবস্থা এখন কিছুটা ভালোর দিকে। তবে মাথার মধ্যে আরো পোকা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। নাক ও ভেতরের অংশ আরো কয়েকবার ওয়াস করার প্রয়োজন হতে পারে। সব পোকা বের করা হলে সিটি স্ক্যান করে দেখা হবে। এরপর পোকার বাসাটি নির্ণয় করার পর ওই বাসা ওষুধের মাধ্যমে ধ্বংস করা হবে। তবে দেরিতে হলেও বিষয়টি তার পরিবারের সদস্যদের নজরে এসেছিল। তাদের নজরে না পড়লে রোগটি জটিল আকার ধারণ করতো। এতে তার মৃত্যুর ঝুঁকিও ছিল। আশা করা যায় সপ্তাহ খানেক চিকিৎসার পর কুমুদিনী বালা এ রোগ থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যেতে পারবেন।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.