বিড়ালকে হত্যা! কুকুরকে শাস্তি দিলেন ১১ বিচারক!
Odd বাংলা ডেস্ক: কুকুর বিড়ালের দ্বন্দ্ব যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। কখনোই এদের একে অপরের ঘনিষ্ঠ বন্ধু নয়। কুকুরের হাতে বিড়ালের মারা যাওয়ার ঘটনা প্রায়শই শুনে থাকেন। তবে এর জন্য সমাজের বিচারব্যবস্থাকে মাথা ঘামাতে দেখেছেন কখনো। এমনই এক ঘটনার সাক্ষী হয়েছিল ফ্রান্সবাসী।
১৯২১ সালে ফ্রান্সের আদালত এমনই এক দ্বন্দ্বের মাঝে দাঁড়ায়। সারমেয় এবং মার্জারের মধ্যে বেছেও নিতে হয় এক পক্ষকে। ওই বছর যে কুকুরটির বিরুদ্ধে বিড়াল হত্যার অভিযোগ উঠেছিল তার জীবন দাঁড়িয়েছিল সংশয়ের মুখে। আদালতের বিচারের উপরই নির্ভর করছিল তার প্রাণ। কুকুরটির নাম ছিল ডর্মি। অন্তত ১৪টি বিড়ালকে খুনের অভিযোগ মাথায় তার।
তবে যে বিড়ালটিকে খুনের পর আদালতে টেনে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তাকে তার নাম ছিল সানবিম। সানবিম ছিল একটি পার্সি বিড়াল। সানবিম খুনের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন তারই মালিক এবং মালিকের প্রতিবেশীরা। সানবিমকে তাড়া করে তার ঘাড়ে ক্যানাইন বসিয়ে খুনের অভিযোগ ওঠে ডর্মির বিরুদ্ধে। সানবিমকে বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছিলেন তার মালিকও।
বিড়ালের মালিক আদালতে মামলা করেন ডর্মি বিরুদ্ধে। এক-দু’জন নন, একেবারে ১১ জন বিচারকের এজলাসে শুনানি চলে ডর্মির। দু’পক্ষের আইনজীবীর দীর্ঘ বাদানুবাদের পর শেষে সিদ্ধান্ত নেন বিচারকেরা। এই ১১ জনের মধ্যে ১ জন বিচারক চেয়েছিলেন ডর্মির মৃত্যুদণ্ড। গ্যাস চেম্বারে ঢুকিয়ে তাকে শাস্তির পক্ষে রায় দেন তিনি। কিন্তু বাকি ১০ বিচারকের রায় ছিল উল্টো।
বেশির ভাগ বিচারকের রায় অনুযায়ী শেষমেশ মুক্তি পায় ডর্মি। শুনানির দিন সকালে পেট ভরা খাবার খেয়ে মালিক ইটনের সঙ্গে আদালতে গিয়েছিল সে। ডর্মি ছিল ধনী পরিবারের পোষ্য। তার মালিক ইটন ম্যাকমিলন ছিলেন সে সময়ের ফ্রান্সের বিত্তবান ব্যবসায়ী।
ফুরফুরে মেজাজ, মামলা নিয়ে সম্পূর্ণ অবিচলিত ছিল ডর্মি। দিনের অনেকটা সময় এজলাসেই কাটে তার। শেষ পর্যন্ত কোনো শাস্তি হয়নি ডর্মির। কেননা মুক্ত অবস্থায় কোনো প্রাণী অন্য মুক্ত প্রাণীকে আক্রমণ করলে তার দায় কারো উপর পড়ে না।
বিচার শেষে সেই একই ফুরফুরে মেজাজ নিয়ে মালিকের সঙ্গে খেলতে খেলতে বাড়ির দিকে রওনা দেয়। ১৯ শতক পর্যন্ত ইউরোপে পোষ্যদের বিচার হওয়া এবং অপরাধে সাজা পাওয়ার ঘটনা খুব দেখা যেত।
১৩৭৯ সালে ফ্রান্সে এক দল শূকরকে এজলাসে তোলা হয়েছিল। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল রাস্তায় এক ব্যক্তিকে আক্রমণ করে খুন করার। তাদের মালিক কিন্তু ছাড় পেয়ে গিয়েছিলেন।
অথচ ওই দলের তিন শূকরের মৃত্যদণ্ড হয়েছিল। ১৫৮৭ সালে আবার ফ্রান্সে আরও অদ্ভুত মামলা হয়েছিল। দানাশস্য নষ্ট করার জন্য এক ধরনের পতঙ্গের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল। ৮ মাস ধরে সেই মামলার শুনানি চলে।
১৫৮৭ সালে ফ্রান্সে দানাশষ্য নষ্ট করার জন্য এক ধরনের পতঙ্গের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিলতবে সেই মামলার ফলাফল কী হয়েছিল, বিচার কার পক্ষে গিয়েছিল, পতঙ্গের দল সাজা পেয়েছিল কি না তা জানা যায়নি। কারণ পরবর্তীকালে যখন এই অদ্ভুত বিচারব্যবস্থা নিয়ে গবেষণা হয়েছিল এত পুরনো মামলার নথি খুঁজে পাওয়া যায়নি। মনে করা হয়, সেই নথিও কোনো পোকা খেয়ে ফেলেছিল!
Post a Comment