তিমির পেটে ৪০ সেকেন্ড, লড়াই করে ‘জ্যান্ত’ ফিরে এসেছেন ইনি!
Odd বাংলা ডেস্ক: জীবিকার তাগিদে সাগরে দিনের পর দিন কাটাতে হয় জেলেদের। চিংড়িসহ বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছ ধরাই তাদের একমাত্র লক্ষ্য। জীবন বিপন্ন করে এই কাজ করে আসছেন সমুদ্র তীরবর্তী এই পেশায় নিয়োজিত মানুষগুলো। মাইকেল প্যাকার্ড অন্যান্য দিনের মতো সেদিনও গিয়েছিলেন চিংড়ি ধরতে। কিন্তু স্কুবা গিয়ার নিয়ে নৌকা থেকে জলে নেমে ডুব দেয়ার পরেই বিশাল একটা ধাক্কা অনুভব কবেন এবং সবকিছু অন্ধকার হয়ে যায়।
কিছু বুঝে ওঠার আগেই শরীরে ব্যথা অনুভব করেন মাইকেল। প্রথমে ভেবেছিলেন তাকে হয়তো হাঙরে ধরেছে। কিছুটা সম্মতি ফিরতে দাঁতের সংখ্যা আর আকার দেখে ভুল ভাঙে দ্রুতই। বুঝতে পারেন, তিনি হাঙর নয়, তিমির মুখে পড়েছেন। তিমিটি তাকে গিলে খেতে চেষ্টা করছে। এরপর শুরু হয় প্রাণপণ লড়াই। আর সেই লড়াইয়ে জিতে শেষপর্যন্ত বাইরে বেরিয়ে আসেন সাহসী জেলে।
এ ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্য ম্যাসাচুসেটস উপকূলে। মাইকেল সেই সময় তিনি সাগরের নীচে লবস্টার বা বড় আকারের চিংড়ি মাছের খোঁজ করছিলেন। তখন বিশাল ওই তিমিটি তাকে গিলে ফেলে। এরপর প্রায় ৩০-৪০ সেকেন্ড তিনি তিমির পেটের মধ্যে থাকেন। এরপর তিমিটি এক পর্যায়ে তাকে মুখ থেকে লালার সঙ্গে বের করে দেয়। প্যাকার্ডের গোড়ালি একটু মচকে যাওয়া ছাড়া তার আর কোনো ক্ষতি হয়নি।
হ্যাম্পব্যাক তিমি ৫০ ফিট পর্যন্ত লম্বা হতে পারে এবং একেকটির ওজন হতে পারে প্রায় ৩৬ টন। ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ড লাইফ ফান্ডের তথ্য অনুযায়ী, এখন বিশ্বে এরকম তিমির সংখ্যা প্রায় ৬০ হাজার।
৫৬ বছরের মাইকেল প্যাকার্ড বলেন, তিনি এবং তার সহযোগী মিলে তাদের নৌকা নিয়ে শুক্রবার সকালে হেরিং কোভে যান। সেখানে পরিবেশ ছিল চমৎকার এবং জলে দৃষ্টিসীমা ছিল প্রায় ২০ ফিট।
তিনি ধারণা করেছিলেন, তিনি হয়তো বিশাল আকৃতির সাদা তিমির হামলার শিকার হয়েছেন, যেগুলো ওই এলাকায় সাঁতরে বেড়ায়।হ্যাম্পব্যাক তিমি ৫০ ফিট পর্যন্ত লম্বা হতে পারে এবং একেকটির ওজন হতে পারে প্রায় ৩৬ টন। ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ড লাইফ ফান্ডের তথ্য অনুযায়ী, এখন বিশ্বে এরকম তিমির সংখ্যা প্রায় ৬০ হাজার।
একসময় তিনি বুঝলেন, একটা তিমির মুখের ভিতরে চলে গেছেন তিনি। আর এটি তাকে গিলে ফেলার চেষ্টা করছে। তার মনে হচ্ছিল, এটাই শেষ, তিনি মারা যাচ্ছেন। 'আমাকে যেন বাতাসে ছুঁড়ে ফেলা হলো আর আমি আবার জলে পড়ে গেলাম। আমি মুক্ত হয়ে জলে ভেসে রইলাম। আমি সত্যি বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। আমি যেন সেই গল্প বলার জন্যই এখানে রয়েছি, তিনি সাংবাদিকদের এভাবেই বেঁচে আসার ঘটনা বর্ণনা করেন।
প্যাকার্ড বলেন, অন্য চাকরি নেয়ার জন্য তার স্ত্রীর দীর্ঘদিনের অনুরোধের পরও ৪০ বছর ধরে চালিয়ে আসা ডুবুরির পেশা তিনি ছাড়তে চান না। সেই সময় আমার স্ত্রী আর তার দুই পুত্রের কথা ভাবছিলাম। এরপর হঠাৎ করে এটি জলের ওপরে ভেসে উঠে প্রবলভাবে মাথা নাড়তে লাগলো।
তার সহযোগী, যিনি তখন পাগলের মতো জলে প্যাকার্ডের অক্সিজেনের বুদবুদ খুঁজে বেড়াচ্ছিলেন, তিনি দ্রুত তাকে ধরে নৌকায় তুলে নেন। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর তার এই অবিশ্বাস্য ঘটনার বিস্তারিত জানতে সাংবাদিকরা প্যাকার্ডের কাছে ছুটে যান। হ্যাম্পব্যাক তিমি সাধারণত মুখ যতটা সম্ভব হা করে মাছ, ক্রিল বা অন্য খাবার খেয়ে থাকে। তবে সমুদ্র বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্যাকার্ডের ক্ষেত্রে যা হয়েছে, তা সম্ভবত একটি দুর্ঘটনা।
Post a Comment