অশরীরীদের সাথে রাত কাটানো যায় এই জাহাজে!

Odd বাংলা ডেস্ক: বৃহৎ জলযান (জাহাজ) কুইন মেরি। পৃথিবীজুড়ে এর আলাদা একটা সুনাম ছিল। জাহাজটি প্রথম ১৯৩৬ সাল থেকে সমুদ্রের বুকে চলাচল শুরু করে। আর যাত্রা শুরুর অল্পদিনের মধ্যেই এটি ক্যালিফোর্নিয়ার বড় সমুদ্র রুটে সবচেয়ে বেশি চলাচলের খেতাব অর্জন করে। তবে পরে এটি ভূতুড়ে হিসেবে খ্যাতি আর আলোচনার শীর্ষে পৌঁছালেও এমন সব কাণ্ডকীর্তির আগে বিলাসবহুল জাহাজটি আলাদা নাম করেছিল। তার কারণ ছিল, এই জাহাজটি সুবিশাল অ্যাটল্যান্টিক পাড়ি দেয়ার জন্য মাত্র পাঁচ দিন সময় নিত। 

আর জাহাজটি দেখতে যেমন বড় ছিল ততটা আধুনিক এবং বিলাসবহুল, ঠিক তেমনি এটি তৎকালীন সময়ের সবচেয়ে দ্রুতগামী জাহাজ হিসেবে পরিচিত ছিল। আর যে জাহাজের প্রাপ্তির খাতায় এত সব অর্জন, সেটি ভূতুরে জাহাজ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। কারণ যাত্রা শুরুর একেবারে প্রথম দিন থেকেই জাহাজটিতে অদ্ভুত অদ্ভুত সব কাণ্ড ঘটতে শুরু করে। যাত্রার প্রথম দিনেই জাহাজটির ক্রু, যাত্রীসহ প্রত্যেকেই এর ভেতরে রহস্যময় ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছেন বলে আজো অনেকে দাবি করেন।

চলুন আজ জাহাজটির সম্পর্কে জেনে নিই। তবে তার আগে জানতে হবে, আপনি কি ভূতে বিশ্বাস করেন? অশরীরীদের সঙ্গে একরাত কাটাতে চান? তাহলে এই জাহাজ আপনার অপেক্ষায়। ভূতুড়ে এই জাহাজটি এখন আমেরিকায় অবস্থিত। কুইন মেরি নামের শিপটি মূলত একটি জাহাজ হলেও এটি এখন একটি হোটেল। অনেক আগে থেকে এই জাহাজে এক সঙ্গে মৃত্যু হয় বহু মানুষের। আর তাই ক্যালিফোর্নিয়ার সমুদ্র উপকূলে এই জাহাজ পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ। 

এই জাহাজে থাকলে নাকি অশরীরী বা ভৌতিক কর্মকাণ্ড প্রত্যক্ষভাবে পর্যবেক্ষণ করা যায়। তাই এর প্রতি পর্যটকদের আকর্ষণ একটু বেশি। তবে জাহাজটি দেখার জন্য অগণিত দর্শক আসলেও, হোটেল হিসেবে ব্যবহার এক রাত কাটাতে চান না অনেক ভীতু পর্যটকরা। কারণ ভূতুড়ে অভিজ্ঞতা এই হোটেলের প্রতি কোণে অনুভব করা যায়। বিশেষ করে ছোট একটি মেয়েকে এখানে অনেকেই দেখেছেন। পর্যটকদের হাতছানি দিয়ে ডেকে সুইমিং পুলে নাকি ফেলে দেয় সে। তারপর আর দেখা যায় না ওই মেয়েটিকে।

তবে সম্প্রতি ভূতের ভয়ে বহু বছর বন্ধ থাকার পর অবশেষে এই হোটেলের দরজা খোলা হলো পর্যটকদের জন্য। এখন থেকে মাত্র ৪০০০০ হাজার টাকা (৪৯৯ ডলার) দিয়ে এক রাত এখানে কাটাতে পারবেন যে কোনো পর্যটক

এদিকে, কুইন মেরির এই রহস্যময় ভৌতিক আচরণের কথা সর্বপ্রথম তুলে ধরেন জাহাজে কর্মরত ১৭ বছরের এক যুবক। কুইন মেরির ইঞ্জিন রুমে কয়লা সরবরাহ করা ছিল তার কাজ। তিনি জানান, জাহাজটির করিডোরে একটি অস্পষ্ট ছায়াকে ব্যাগ পাইপ নামক বাঁশি বাজাতে বেশ কয়েকবার দেখা গেছে। এরপর অনেকেই নড়েচড়ে বসেন। সবার সতর্ক দৃষ্টি থাকল কুইন মেরির দিকে। তাই বলে এদের যাত্রা কিন্তু বন্ধ হয়নি। এছাড়াও সুইমিংপুলে সাঁতার কাটার সময় অনেক যাত্রীই সাদা পোশাকধারী একজন নারী এবং আট থেকে নয় বছরের একটি মেয়েকে ডেকের ওপর দিয়ে ভেসে ভেসে চলতে দেখেছেন। জাহাজটির কেবিনে কোনো অস্পষ্ট মেয়েকে দেখা ও রহস্যময় শব্দ শুনেছেন বলেও দাবি করেন অনেকেই।

কুইন মেরিকে ঘিরে এমন রহস্যময় প্রশ্ন আর অভিজ্ঞতার পাল্লা দিনের পর দিন কেবল ভারি হয়েছে তবে এর বিস্তারিত তথ্য এখনো কেউ দিতে পারেনি। তবে এই রহস্যের কারণে জাহাজটির প্রতি মানুষের আগ্রহও অনেকে বেড়েছে। কুইন মেরি জাহাজটি আসলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকে কেন্দ্র করে তৈরি করা হয়েছিল এবং পরবর্তীতে একে সৈন্যদের জাহাজে রূপান্তরিত করা হয়েছিল। ব্রিটিশ যুদ্ধজাহাজ কিউরা কেরার সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে একবার কুইন মেরির প্রায় ৩০০ যাত্রীর প্রাণহানি ঘটেছিল।

এরপর থেকে ধারণা করা হয়, এসব মৃত ব্যক্তির আত্মা এই জাহাজটিতে ঘুরে বেড়াচ্ছে। পরবর্তীতে ১৯৬৭ সালে দ্য সিটি অফ লং বিচ নামক একটি প্রতিষ্ঠান কুইন মেরিকে কিনে নেয় এবং জাহাজটিকে একটি ভাসমান হোটেল হিসেবে গড়ে তোলে। কিন্তু হোটেল হওয়ার পরও এখানে রহস্যময় ঘটনাগুলো বারবার ঘটতে থাকে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.