খুন না আত্মহত্যা? ১ বছর পরে আদৌ কি হল সুশান্তের মৃত্যু-রহস্যের কিনারা?

Odd বাংলা ডেস্ক: ২০২০ সালের ১৪ জুন মুম্বইয়ের বাড়ি থেকে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছিল সুশান্তে সিং রাজপুতের দেহ। অভিনেতার এই আকস্মিক মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ হয়ে পড়েছিল দেশবাসী। তবে সুশান্তের মৃত্যুতে কার্যত কাঠগড়ায় উঠেছিল বলিউড ইন্ডাস্ট্রি।

সুশান্তের মৃত্যুর পর কেকে সিংহ পুলিশে অভিযোগ করেন সুশান্তের প্রেমিকা রিয়া চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে। আত্মহত্যার প্ররোচনা এবং টাকা হাতানোর অভিযোগ আনেন তিনি। এরপর পরই শুরু হয় বলিউড ইন্ডাস্ট্রির স্বজনপোষণ নিয়ে কাটাছেঁড়া। ইন্ডাস্ট্রির বাইরের লোক হওয়ায় মানসিক চাপ, স্বজনপোষণ, মাদক ইত্যাদি ক্রমে তাঁর মৃত্যুতদন্তের সঙ্গে জড়িয়ে যায়। তদন্তের সঙ্গে জড়িয়ে যায় একাধিক বলি অভিনেতা-অভিনেত্রীর নামও। 

তবে, তাঁর মৃত্যুর এক বছর পর কোথায় দাঁড়িয়ে তদন্ত? ১৪ জুন সুশান্তের মৃত্যুর খবর সামনে আসার পর পরই নেটমাধ্যমে কার্যত ঝড় ওঠে। তারকা থেকে সাধারণ মানুষ- কেউ দুঃখপ্রকাশ করেছেন, কেউ বিচার চেয়েছেন।

সবথেকে উল্লেখযোগ্য, সুশান্তের মৃত্যুর এক দিন পর ইন্ডাস্ট্রির স্বজনপোষণ নিয়ে বিস্ফোরক পোস্ট করেন কঙ্গনা রানাওত। সুশান্তের মৃত্যুর জন্য মূলত স্বজনপোষণকেই দায়ী করেন তিনি। তত দিনে সুশান্তের বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে দিয়েছে পুলিশ।

আত্মহত্যা না খুন- এই দুইয়ের মাঝে যখন ঝুলে রয়েছে সুশান্ত মৃত্যুরহস্য সে সময়ই, ২৪ জুন সুশান্তের ময়নাতদন্তের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট হাতে আসে তদন্তকারীদের। তাতে স্পষ্ট উল্লেখ ছিল, শরীরে কোনও আঘাতের চিহ্ন নেই। তাঁর নখ থেকেও কোনও প্রমাণ মেলেনি খুনের। মূলত শ্বাসরোধ হয়েই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে জানান তদন্তকারীরা।

কিন্তু এতে নিশ্চিন্ত হননি অনুগামীরা। নেটমাধ্যমে #জাস্টিসফরসুশান্ত লিখে ‘সুবিচার’ চাইতে শুরু করেন সকলে। সিবিআই তদন্তের দাবি জানাতে শুরু করেন সকলে। রিয়া নিজেও টুইটারে অমিত শাহের কাছে সিবিআই তদন্তের আর্জি জানান।

গত ৫ অগস্ট সুশান্ত মৃত্যুরহস্যের তদন্তভার যায় সিবিআইয়ের হাতে। সিবিআইয়ের এফআইআর-এ রিয়া, তাঁর মা-বাবা এবং ভাইয়ের নাম ছিল। পাশাপাশি অভিনেতার আর্থিক তছরূপ সংক্রান্ত যাবতীয় অভিযোগ খতিয়ে দেখতে থাকে ইনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)।এরপর ২২ অগস্ট, ২০২০ সালে সিবিআইয়ের একটি বিশেষ দল সুশান্তের বান্দ্রার বাড়িতে যায়। সিবিআই যখন সুশান্তের মৃত্যুরহস্য উদঘাটনের চেষ্টা করছিল, ইডি সুশান্তের আর্থিক তছরূপ সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয় দেখছিল। এর মধ্যে নারকোটিকস কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি) সুশান্তের মৃত্যুর সঙ্গে মাদকযোগের তদন্ত শুরু করে।

রিয়া, তাঁর বাবা এবং ভাইকে দফায় দফায় জেরা করা হয়। ৪ সেপ্টেম্বর প্রথমে গ্রেফতার হন রিয়ার ভাই এবং সুশান্তের বাড়ির ম্যানেজার। টানা ৩ দিন জেরার পর ৮ সেপ্টেম্বর রিয়াকে গ্রেফতার করে এনসিবি। মাদকযোগ তদন্তে একাধিক বলি তারকার নামও জড়িয়ে পড়ে।

৩ অক্টোবর একপ্রকার মৃত্যু রহস্যের কিনারায় পৌঁছে যান সিবিআই। দিল্লি এমস-এর ফরেন্সিক দল সুশান্তের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দেখে জানিয়ে দেয় তাঁকে খুন করা হয়নি, এটি আত্মহত্যাই ছিল। ৭ অক্টোবর জামিন হয় রিয়ার। ২০২১-এর ৮ মার্চ নেটমাধ্যমে সুশান্তের মাকে মাতৃদিবসের শুভেচ্ছাও জানান রিয়া।

ময়নাতদন্তের রিপোর্ট সামনে আসার পরও আজও যেন কোথাও যেন সুশান্তের মৃত্যুকে নিছক আত্মহত্যা বলে মানতে নারাজ তাঁর বহু অনুরাগী।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.