Odd বাংলা ডেস্ক: শরীরে স্কুবা ডাইভিং পোশাক। চোখে নীল রঙের গগলস। অনায়াসে সমুদ্রের নিচে নেমে যাচ্ছে। তুলে আনছে প্লাস্টিকের জঞ্জাল। সেই সব আবর্জনা তাদের উপযুক্ত প্রক্রিয়াকরণের ব্যবস্থাও করছে নিনা গোমস। তবে আর পাঁচজন পরিবেশকর্মীর থেকে নিনার পরিচয় কিছুটা আলাদা। তার বয়স মাত্র ৪ বছর। বয়স যে কোনো কাজেই বাঁধা হতে পারে না। তা আবারো প্রমাণ করল নিনার অদম্য নিষ্ঠা আর অধ্যবসায়।
বিশ্বের কনিষ্ঠতম পরিবেশকর্মী ব্রাজিলের নিনা। বিগত কয়েকমাস ধরে নিয়মিত তার বাবার সঙ্গে ডুব দিচ্ছে রিও-ডি-জেনেরিও-র সমুদ্রের বুকে। এর আগে দীর্ঘদিন ধরে চলেছে তার প্রস্তুতি। সমুদ্রের নিচ থেকে জঞ্জাল অপসারণ তো সহজ কাজ নয়। তার জন্য উপযুক্ত প্রশিক্ষণের প্রয়োজন। নিনার বাবা রিকার্ডো ব্রাজিলের পরিবেশ সংস্থা ইনস্টিটিউটো মার আর্বানোর ডিরেক্টর। তার কথায়, নিনা নিজেই বারবার বাবার কাছে বায়না করত তাকে সমুদ্রের নিচে নিয়ে যাওয়ার জন্য। আর এই বায়নার একমাত্র উদ্দেশ্য, সেও বাবার মতো পরিবেশযোদ্ধা হতে চায়।
এই মুহূর্তে সারা পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি আলোচিত পরিবেশ সমস্যা অবশ্যই প্লাস্টিক দূষণ। বেশ কিছু সমীক্ষার মিলিত রিপোর্ট থেকে আন্দাজ করা যায়, ইতিমধ্যে ১১ মিলিয়ন মেট্রিক টন প্লাস্টিক সমুদ্রের জলে মিশেছে। আর এই প্লাস্টিক নিজে থেকে বিয়োজিত হওয়ার কোনো সম্ভাবনাই নেই। ক্রমশ তা ভেঙে মাইক্রোপ্লাস্টিকে পরিণত হলে তাদের জল থেকে আলাদা করার কাজটাও রীতিমতো কঠিন হয়ে উঠবে। তাই প্লাস্টিক জলে এসে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই তাদের সরিয়ে ফেলা সবচেয়ে নিরাপদ। তবে এর জন্য বিরাট পরিশ্রম প্রয়োজন। একদিকে একদল মানুষ ক্রমশ জলকে দূষিত করে যাচ্ছেন, আর অন্যদিকে সেই দূষণ অপসারণের জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন আর একদল মানুষ। নিনা সেই যোদ্ধাদের কনিষ্ঠতম সদস্য।
রিকার্ডর কথায়, নিনার এগিয়ে আসার পিছনে একমাত্র কারণ পরিবেশের প্রতি তার এই ভালোবাসা। এই ভালোবাসাই পারে আগামীদিনে এক সুন্দর পৃথিবী গড়ে তুলতে। আর সেই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে বিশ্বের সমস্ত শিশুর মনের মধ্যে ভালোবাসার বীজ বুনে দেওয়া জরুরি। নিনা গোমসের এই উদাহরণ আরও অনেক শিশুকে এগিয়ে আসতে সাহায্য করবে বলে আশাবাদী তিনি।
Post a Comment