বিশাল পাহাড়ের গায়ে ইংরেজি ‘বি’ নিয়ে রহস্য, এলিয়েনরা আঁকে নি তো!

Odd বাংলা ডেস্ক: বিশ্বের অনেক দেশেই গাছ দিয়ে নাম লেখার প্রচলন বহুকাল থেকেই। অক্ষরের আদলে নকশা করে গাছ লাগিয়ে বনাঞ্চল তৈরি করেছে অনেক দেশই। তবে সেগুলো পরিকল্পনা করে করহা হয়েছে। তবে বিশাল এই দুর্গম পাহাড়ের গায়ে খোদাই করা বিশালাকার ইংরাজি হরফ ‘বি’। এ নিয়ে তৈরি হয়েছে নানান জল্পনা কল্পনা। কে বা কারা, কবে লিখল তা নিয়ে দ্বন্দ্ব বিস্তর। নানা মুনির নানা মত চলে আসছে বছরের পর বছর ধরে।

এই ‘বি’ লেখা রয়েছে বারব্যাঙ্কের পাহাড়ের গায়ে। ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলসের সান ফারনান্ডো উপত্যকার একটি শহর বারব্যাঙ্ক। ওয়াল্ট ডিসনে স্টুডিয়ো, ওয়ার্নার ব্রস স্টুডিয়োর জন্য জনপ্রিয় এই শহর। হলিউড থেকে মাত্র কয়েক মাইল দূরে অবস্থিত এই শহর প্রচুর বিনোদনমূলক সংবাদমাধ্যমের ঘাঁটি। যে কারণে একে ‘বিশ্ব সংবাদমাধ্যমের রাজধানী’ও বলা হয়।

ডেভিড বারব্যাঙ্ক নামে এক দাঁতের চিকিৎসকের নামানুসারেই এই শহরের নামকরণ করা হয়। ওই চিকিৎসক ছিলেন নিউ হ্যাম্পশায়ারের বাসিন্দা। ১৮৬৭ সালে ৯ হাজার একরের কিছু বেশি জায়গা কিনে ভেড়ার খামার তৈরি করেছিলেন বারব্যাঙ্কে। সেখানে গম চাষও শুরু করেন তিনি।

৯ বছরের মধ্যে লস অ্যাঞ্জেলসের সবচেয়ে বেশি গম উৎপাদক অঞ্চলে পরিণত হয় এই বারব্যাঙ্ক। বারব্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠার জন্য ডেভিড বারব্যাঙ্কের অবদান অনেক। তবে ডেভিড কিন্তু ‘বারব্যাঙ্ক বি’ তৈরি করে যাননি। ঠিক কবে পাহাড়ের গায়ে এই ‘বি’ তৈরি করা হয়েছিল এবং এটি তৈরি করার উদ্দেশ্যই বা কী ছিল, তা এখনো ধোঁয়াশা। 

পাহাড়ের গায়ে ইংরেজি অক্ষর তৈরি নয়ের দশকে দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায় খুবই প্রচলিত ছিল। সে সময় এখানকার প্রচুর স্কুল-কলেজে পড়ুয়াদের দিয়ে পাহাড়ের গায়ে নানা কিছু লেখার চল ছিল। তবে এই বারব্যাঙ্ক ‘বি’ নিয়ে বিভিন্ন মত রয়েছে। ২০০৮ সালের ফিল্ম ‘বারব্যাঙ্ক হাই স্কুল: দ্য ব্লু অ্যান্ড হোয়াইট ওয়েভ’ অনুসারে, ১৯২০ সালে প্রথম এই ‘বি’ অক্ষরটি তৈরি হয়। বারব্যাঙ্ক হাই স্কুল ক্লাব সদস্যরা পাহাড়ের গায়ে পাথর দিয়ে ‘বি’ তৈরি করেন। বই অনুসারে বারব্যাঙ্ক শব্দটির ইংরেজির প্রথম অক্ষরই এই ‘বি’।

এদের প্রতিদ্বন্দ্বী স্কুল জন বারোঘোস হাই আবার এই তত্ত্ব মানতে নারাজ। বরাবরই এই দুই স্কুলের মধ্যে ‘বি’ নিয়ে ঠাণ্ডা যুদ্ধ চলে আসছে। প্রতি বছরই অক্ষরের উপর নিজেদের স্বত্ব জাহির করার জন্য ‘বি’ রং করে তারা। যে যার নিজেদের স্কুলের রঙে রাঙিয়ে তোলে ‘বি’।‘বি’ নিয়ে তর্ক-বিতর্ক, দখলদারি চলতেই থাকবে। তবে তা নিয়ে মাথা ঘামান না বারব্যাঙ্ক পার্কের অধিকর্তা জুইদি উইলকি। তার মতে, “দূর-দুরান্ত থেকে পর্যটকেরা এটি দেখতে আসেন। ‘বি’ বারব্যাঙ্কবাসীর গর্ব।” তবে তার কাছেও এই ইংরেজি অক্ষরের উৎপত্তি সম্বন্ধে আর কোনো তথ্য নেই

রহস্যজনক এই ‘বি’ -এর একাধিক বার সংস্কার করা হয়েছে। বি-এর উপরে এখন রং করা পাথর নেই। বদলে পড়েছে প্লাস্টিকের পরত। ‘বি’ উৎপত্তি নিয়ে এখন আর সে ভাবে মাথা ঘামান না পর্যটকরাও। বরং পাহাড়ের গায়ে মানব-সৃষ্ট এই শিল্প চাক্ষুষ করতে প্রতি বছর পর্যটকেরা ভিড় জমান এখানে। ট্রেকিং করে পৌঁছন ‘বি’-র কাছে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.