Odd বাংলা ডেস্ক: বরফ গলছে, আর বাড়ছে সমুদ্রের উচ্চতা। উষ্ণায়নের ফলে দক্ষিণ মেরুর পশ্চিমাঞ্চলের বিশাল বরফ খন্ড গলে পড়ছে আর সেটি ঘটছে খুব দ্রুত গতিতে, অনেক আগেই এমন সতর্কতা জানানিয়েছিল বিজ্ঞানীরা।
গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষকরা এক বিবৃতিতে জানিয়েছিলেন, ১৯৫০ থেকে এখন পর্যন্ত অ্যান্টার্কটিকার তাপমাত্রা বেড়ে গেছে ২.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পরিবেশের সাধারণ যে রূপান্তর ঘটে থাকে, এটি তার চেয়েও প্রায় তিনগুণ বেশি দ্রুত গতিতে ঘটছে।
জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে বেশি কুপ্রভাব অ্যান্টার্টিকায়। বরফ গলে দ্রুত ভ্যানিশ হয়ে গেছে। গত দু বছর ধরে এর প্রভাব দেখা যাচ্ছে কুমেরুতে। ২০১৯ সালে অ্যান্টার্টিকায় একটি হ্রদ কার্যত রাতারাতি গায়েব হয়ে গিয়েছিল। বিজ্ঞানীদের মতে ওই ঝিলের আইসবার্গটি গায়েব হয়ে গিয়েছিল। ঝিল কী করে এভাবে রাতারাতি গায়েব হয়ে গেল তা জানতে বিজ্ঞানীরা স্যাটেলাইট পিকচারের সাহায্য নেন।
শুরুতে বৈজ্ঞানিকরা ও আশ্চর্য হয়ে গিয়েছিলেন কিন্তু এর কারণ বুঝতে পারেননি। হঠাৎ কী করে এরকম ভাবে ৬০ থেকে ৭৫ কিউবিক মিটার বরফের স্তুপ গলে গেল। সেই বরফ গলে মহাসাগরে মিশে যায়। একবার ঝিলের নিচের বরফে রাস্তা তৈরি হয়ে যায়। তারপর সেই পথ ধরে বরফ গলে বেরিয়ে মহাসাগরে মিশে যায়। স্যাটেলাইট দিয়ে এই রহস্যের ছবি উন্মোচিত হয়। সেখান থেকেই বোঝা যায় বরফের নিচে কোনো রাস্তা হয়েছে যেখান থেকে বরফ জল হয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে।
শুরুতে বৈজ্ঞানিকরাও আশ্চর্য হয়ে গিয়েছিলেন কীভাবে ৬০ থেকে ৭৫ কিউবিক মিটার বরফের স্তুপ গলে গেল
শুরুতে বৈজ্ঞানিকরাও আশ্চর্য হয়ে গিয়েছিলেন কীভাবে ৬০ থেকে ৭৫ কিউবিক মিটার বরফের স্তুপ গলে গেল
এই সমীক্ষা অনুযায়ী ঝিলের উপরের জলের চাপে নিচের বরফ গলে যাচ্ছে। আর এ থেকে বরফের চাঁইতে ফাটল ধরে নিচ দিয়ে তা নেমে যায়। একে হাইড্রো ফ্যাকচারিং বলে। যখন ওপরের ঘন বরফ নিচে চাপ দেয়। আর তার থেকেই রাস্তা খুলে যায় বরফ গলে পানি হয়ে যাওয়ার রাস্তা।
নাসা-র আইসিইএসএটি- ২ স্যাটেলাইটে ধরা পড়ে আসল ঘটনা। বরফের চাদরে ক্ষতি হলে বিশাল গর্ত তৈরি হয় বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এমন হওয়ার মূল কারণ হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তন। এর ফলে খুব দ্রুত গলছে বরফ। এতে পৃথিবীর বিভিন্ন সমুদ্র উপকূলও দ্রুত গায়েব হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা।
নাসার স্যাটেলাইটের চিত্র এই রহস্যের সমাধান বের করে
নাসার স্যাটেলাইটের চিত্র এই রহস্যের সমাধান বের করে
এত দ্রুত বরফ গলার কারণে হাইড্রো ফ্র্যাকচরের ঘটনাও বাড়বে। যার ফলে মহাসাগর গুলোতে পানির পরিমাণ বেড়ে যাবে। মহাসাগরের জলস্তর যত তাড়াতাড়ি বাড়ার কথা এই মুহূর্তে জলস্তর তার চেয়ে বেশি গতিতে বাড়ছে। গত মাসে জিওলজিক্যাল রিসার্চ লেটার জার্নলে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ি ২০২৫০ সালে তা দ্বিগুণ হয়ে যাবে।
Post a Comment