Odd বাংলা ডেস্ক: নারীদের নিত্যদিনের ব্যবহৃত একটি জিনিস হচ্ছে সেপটিপিন। কাপড় আটকে রাখতে মূলত এর ব্যবহার। শাড়ি, সেলোয়ার কামিজ কিংবা হিজাপ সব ক্ষেত্রেই এর ভূমিকা অসামান্য। তবে নারীদের এই প্রয়োজনীয় জিনিসটি আবিষ্কার করেছিলেন একজন পুরুষ। তবে এখন যে উদ্দেশ্যে সেপটিপিন ব্যবহার করা হয়। সেটা লক্ষ্য ছিল না উদ্ভাবকের।
১৮৪৯ সালের কথা। যুক্তরাষ্ট্রের যন্ত্রকৌশলী ওয়াল্টার হান্ট তার এক বন্ধুর কাছ থেকে ১৫ ডলার ধার করেছিলেন। কিছুতেই সে ধার শোধ দিতে পারছিলেন না। ভাবছিলেন, এমন কিছু একটা তৈরি করা যায় কি না, যার উপার্জিত অর্থ দিয়ে ধারটা শোধ করা যায়। ভাবতে ভাবতে লম্বা তারের টুকরা বেঁকিয়ে দিলেন সেফটিপিনের আকার। মাথার দিকটায় লাগিয়ে দিলেন একটা খাপ, যাতে গায়ে ফুটে না যায়। ব্যস, তৈরি হয়ে গেল সেফটিপিন। নিত্য নতুন ছোট ছোট জিনিস আবিষ্কার করতে পছন্দ করতেন তিনি।
১৮৪৯ সালের ১০ই এপ্রিল রীতিমতো পেটেন্ট করিয়ে নিলেন চার্লস রোউলি। সেই পেটেন্ট বিক্রি করে পেলেন ৪০০ ডলার। ধার শোধ তো হলোই, দিনে দিনে লাখ লাখ ডলারের মালিক হয়ে উঠলেন। ওয়াল্টার হান্ট তার বন্ধুর ১৫ ডলার দেনা পরিশোধে তাকে সর্ব প্রথম তৈরী সেফটিপিনটি উপহার দেন। এটি ৮ ইঞ্চি লম্বা ছিল যার একপাশে দন্ড দুটিতে তারের কয়েল লাগিয়েছিলেন যেটি স্প্রিংয়ের ভূমিকা পালন করেছিল এবং অন্যপাশে একটি দন্ড সূচালো ছিল যেটি আবদ্ধ রাখতে (বারবার আবদ্ধ-অনাবদ্ধ যোগ্য) অপর দন্ড একটি সিলভারের আবরণ লাগিয়েছিলেন।
তবে সেপটিপিনের ব্যবহার আরো আগে। খ্রিস্টপূর্ব ১৩০০-১৪০০ শতকের দিকে মাইসেনিয়ান গ্রীসের পেলোপন্নিয়াসরা ফিবুলা নামের এক ধরনের ব্রোচ বা রূপককাঠি ব্যবহার করতো। যেটিকে সেফটিপিন এর পূর্বসূরী ইতিহাস স্বীকৃত। গ্রীকরা কাপড়ের এটি ব্যবহার করতো।
এটির সূচালো অংশ লক্ষ্য (কাপড়,কাগজ, চামড়ার পাতলা অংশ) ভেদ করে অনেক গুলো অংশকে এক করে এবং অংশ গুলো লুপের ভেতর আবদ্ধ থাকে বলে চাহিদা মাফিক সজ্জা করা যায়, সূচালো মাথাটা অন্য দন্ডে থাকা সিলভার,টিন, সোনার তৈরী আবদ্ধক আবরণে আটকে থাকে। সেফটিপিনের অপর পাশে একটি স্প্রিং থাকে যেটি আবদ্ধক থেকে সূচালো দন্ডটি আলাদা করলে সমগ্র লুপ বা সেফটিপিনকে প্রসারিত করে।প্রাচীনকাল থেকে এটি কাপড়ের সাজসজ্জার অন্যতম সহায়ক উপকরণ। বিশেষ করে শাড়ির বিভিন্ন ধরনের পরিধান শৈলীতে এটি ব্যবহার করা হয়। আরব দেশগুলো বোরকা ও হিজাবের স্তরগুলো সুসজ্জিত বা মার্জিত রাখতে এটি বহুল ব্যবহৃত।
Post a Comment