স্বেচ্ছায় পুরুষ হয়ে যান যে দেশের নারীরা, খেয়ে থাকেন নানা অদ্ভুত খাবার

Odd বাংলা ডেস্ক: পৃথিবীতে এমন একটি দেশ আছে যারা ভয় কিংবা পাগলামি যে কারণেই হোক না কেন নিজেদের যুদ্ধকালীন সুরক্ষার জন্য তাদের ১১ লাখ বর্গ মাইলের মধ্যে প্রায় সাত লাখ বাঙ্কার তৈরি করে রেখেছে। এই দেশটির আরো একটি মজার বিষয় হলো এখনকার মানুষরা না বলতে গেলে মাথা উপর-নিচে নাড়ায় আর হ্যাঁ বলতে গেলে মাথা ডানে-বামে নাড়ায়। 

আর এই সব অদ্ভুত ব্যাপার আপনি দেখতে পাবেন আলবেনিয়া নামের দেশটিতে। এই দেশের লোকেরা তাদের দেশকে নিজেদের ভাষায় সিপারি বলে। যার অর্থ দাঁড়ায় ঈগলের দেশ। আর এই কারণেই হয়তো এই দেশের পতাকায় দুই মাথা ওয়ালা ঈগলের ছবি দেখা যায়। তারা এই ঈগলকে তাদের সার্বভৌমত্বের প্রতীক মনে করে। ৩০ লাখ মানুষের ছোট এই দেশ আলবেনিয়া, ইউরোপ মহাদেশের দক্ষিণে অবস্থিত। এই দেশটির মোটামুটি চার ভাগের তিন ভাগই হয়তো পর্বতমালা অথবা বনাঞ্চলে ঘেরা।

দেশটিতে প্রায় তিন হাজার প্রজাতির গাছ দেখতে পাওয়া যায়। যার প্রায় বেশিরভাগই ভেষজ গুণসম্পন্ন। একটা সময় দেশটিতে তুর্কিদের শাসন থাকলেও আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন, আলবেনিয়া ছিল পৃথিবীর প্রথম এবং একমাত্র নাস্তিক দেশ। দেশটিতে একসময় নাস্তিকতার অজুহাত দেখিয়ে প্রায় দুই হাজার ১৮৯টি মসজিদ এবং চার্চ বন্ধ করে দেয়া হয়। দেশটিতে ধর্মীয় নামের শহরগুলোর নাম বদলে দেয়া হয়। মানুষের নামের জন্য সেখানে আলাদা ডিকশনারি বা অভিধান ব্যবহার করা হয়।

এখানকার মানুষেরা সন্ধ্যায় হাঁটার জন্য সাংবিধানিক একটি নিয়ম মেনে চলে। যাকে স্থানীয় ভাষায় জিরো বলা হয়। এই সময়টিতে সবার হাঁটার সুবিধার জন্য কিছু জায়গায় যানবাহন বন্ধ রাখা হয় কয়েক ঘণ্টার জন্য। আজ থেকে প্রায় কয়েকশ’ বছর আগে দেশটির আলবেনীয় আওস নামক পর্বতের গভীরে একটি নিয়ম প্রচলিত ছিল। যেখানে নারীরা তাদের জীবনকে উদ্দেশ্যহীন ভাবতো। যেসব নারীরা বিয়ে করতে চাইতো না তার বুন্নেসা নামক শপথ গ্রহণ করতেন। এটি ছিল পুরুষ হয়ে বেঁচে থাকার শপথ। এই প্রথা অনেক আগেই বন্ধ হওয়ার পরেও এখনো দেশটির অনেক পাহাড়ে পুরুষরুপী নারীকে দেখতে পাওয়া যায়।

অনেক ঘাত-প্রতিঘাত আর যুদ্ধ পার করার পরেও দেশটি তাদের শিল্প-সাহিত্য এবং সাংস্কৃতিক দিক থেকে বেশ সমৃদ্ধ। এছাড়াও আলবেনিয়ার লোকনৃত্য, স্থাপত্যকলা এবং চিত্রকলা যথেষ্ট শৈল্পিক এবং সারা পৃথিবীতে সুপরিচিত। এখানকার খাবার জিভে জল আনার মতো হলেও সেই সব খাবারের পাশাপাশি রয়েছে বেশ কিছু অদ্ভুত খাবার। যেমন ধরুন, ব্যাঙের পায়ের স্যুপ বা ব্যাঙের ফ্রাই, যা কিনা দেশটির প্রায় সকল খাবারের দোকানেই পাওয়া যায়।

যারা ভ্রমণ পছন্দ করেন আলবেনিয়া তাদের জন্য উপযুক্ত জায়গা। এখানকার সবচেয়ে দর্শনীয় স্থান হলো এখানকার বাঙ্কারগুলো। এছাড়াও তিরানা নামক শহর স্ট্রিট আর্টের জন্য পৃথিবী বিখ্যাত। এছাড়াও রয়েছে পাহাড়ের গায়ে বেড়ে ওঠা পেরাজ শহর, যাকে জানালার শহর বলে জানা যায়। ঐতিহাসিক নিদর্শন এবং মনোরম সৌন্দর্যের কারণে এই শহরটিকে আলবেনিয়ার সবচেয়ে সুন্দর শহর বলে মনে করা হয়।

দেশটিতে চলার সময় যেই জিনিসটি আপনাকে সবচেয়ে বেশি ভাবাবে তা হলো কাকতাড়ুয়া। দেশটিতে প্রায় প্রত্যেকটি নতুন বাড়ি এবং স্থাপনার সামনেই কাকতাড়ুয়া ঝুলানো থাকে। এখানকার মানুষের বিশ্বাস কাকতাড়ুয়ার মাধ্যমে যেকোনো নতুন জিনিসকে অন্যদের কুদৃষ্টি থেকে রক্ষা করা যায়। 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.