Odd বাংলা ডেস্ক: দেশভাগের পর পাকিস্তানে যখন সংখ্যালঘুরা অত্যাচারিত হচ্ছেন, দিনের আলোয় খুন হচ্ছেন, বাধ্য হয়েই বিধান নেহেরুকে চিঠি দিয়ে বলেন, পাকিস্তান পূর্ববঙ্গে হিন্দুদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হলে, পুনর্বাসনের জন্য পূর্ববঙ্গের কিছু অঞ্চল দখল করুক ভারত। এই প্রস্তাবে সহমত পোষণ করেছিলেন শ্যামাপ্রসাদ মুখ্যোপাধ্যায়, সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল। তবে পণ্ডিত নেহেরু এই প্রস্তাবে সায় দেননি। তিনি হেঁটেছেন পাক প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলীর সঙ্গে আলোচনার পথে। যা বিখ্যাত হয়ে আছে নেহরু-লিয়াকত্ চুক্তি নামে। যে চুক্তিতে ভারত-পাকিস্তানের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা, অধিকার সুরক্ষিত করার কথা বলা হয়েছে। এই চুক্তির তীব্র বিরোধিতা করে ইস্তফা দেন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। ১৯৫০ সালে ১৪ এপ্রিল পার্লামেন্টে তাঁর পদত্যাগের জন্য বিবৃতি দিয়ে কলকাতায় যখন ফেরেন, তাঁকে সংবর্ধনা জানাতে প্রচুর লোকের সমাগম হয়। বিধান রায়ও এই চুক্তির সাফল্য নিয়ে সংশয়ে ছিলেন। কিন্তু শ্যামাপ্রসাদের মতো সরাসরি যুদ্ধ ঘোষণা করতে পারেননি।
কাশ্মীরে গৃহবন্দি অবস্থায় ১৯৫৩ সালে ২৩ জুন মৃত্যু হয় শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের। তাঁর মৃত্যুতে কলকাতায় ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়। জানা যায়, ভাঙচুর চালানো হয় বিধানচন্দ্রের বাড়িতেও। শ্যামাপ্রসাদ ভুল চিকিত্সা মারা গিয়েছিলেন বলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। তা জানতে নিজেই তদন্ত শুরু করেন বিধানচন্দ্র রায়। ‘ডাঃ বিধানচন্দ্র রায়: জীবন ও সময়কাল’ শীর্ষক বইয়ে জানা যায় তত্কালীন কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী শেখ আবদ্দুলার কাছে চিঠি লিখে প্রেসক্রিপশন চেয়ে পাঠান তিনি। প্রেসক্রিপশন দেখে চমকে ওঠেন বিধান। কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জানতে চান, হাই ব্লাড প্রেসারে ভুগছিলেন শ্যামাপ্রসাদ, সেখানে কেন রক্তচাপ না কমিয়ে রক্তচাপ বাড়ানোর ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়। কেন তাঁকে খবর দেওয়া হয়নি বলে জোর সওয়াল করেন বিধানচন্দ্র রায়। ভবানীপুরের বাড়িতে শ্যামাপ্রসাদের মরদেহ যখন পৌঁছয়, তাঁর মা বিধান ডেকে বলেছিলেন, “বিধান তুমি থাকতে আমার শ্যামা ভুল চিকিতসায় মারা গেল।” সে দিনও নিরুত্তর ছিলেন ডাক্তার বিধানচন্দ্র রায়।
Post a Comment