শ্রীকৃষ্ণের বাঁশিতে থাকে মকর মাছ , জানুন কৃষ্ণের বাঁশির অজানা রহস্য



Odd বাংলা ডেস্ক: জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে ঘরের গোপালকে রসে বশে রেখে, তাঁর পুজো উপলক্ষ্যে বহু গৃহস্থেই শুরু হয়েছে তোড়জোড়। ৩০ অগাস্ট জন্মাষ্টমী তিথিতে শ্রীকৃষ্ণের জন্ম তিথিকে স্মরণ করে আয়োজিত হবে পুজো পাঠ। জন্মাষ্টমীতে শ্রীকৃষ্ণকে ঘিরে রয়েছে নানা পৌরাণিক কাহিনী। তারমধ্যে অন্যতম হল কৃষ্ণের বাঁশিতে মকর মাছ কেন থাকে ?


এই ধরাধামে কতই না লীলা করেছিলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ। তাঁর লীলা অন্তহীন। এমনই এক লীলা নিয়ে আলোচনা করবো আপনাদের সঙ্গে। খেয়াল করে দেখবেন ভগবান বাসুদেবের বাঁশির একটা মাথা একটু মোড়ানো থাকে। অনেকেই ভাবেন এই মোড়ানো বা পেঁচানো অংশটি ময়ূর। কিন্তু আসলে তা নয়। এই পেঁচিয়ে থাকা অংশটি মকর মাছ। মকর মাছকে এক প্রজাতির মাছ মানা হয়, যা জলে থাকে। 


গোবিন্দ, তার লীলা করতে করতে বেড়ে উঠছিলেন মা যশোদা ও নন্দরাজের গৃহে। সবার আদরের কানাই। একবার মা যশোদা ভুল করে একাদশীর দিন ভাত রান্না করেছিলেন। রান্নার পর মনে পড়ে একাদশীতে কেউ অন্নগ্রহণ করবেন না। চিন্তিত হয়ে মা যশোদা অন্ন নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়লেন। মানুষ তো দূর কোনো পশু-পাখিও এই অন্নগ্রহণ করল না। ভারাক্রান্ত মনে একটি জলাশয়ের কাছে বসে থাকলেন। আর ভাবতে লাগলেন একাদশীতে ভাত রান্না করে খুব বড় ভুল করে ফেলেছেন। এমন সময় তিনি দেখতে পেলেন জলাশয়ের মধ্যে একটি মকর মাছ লাফালাফি করছে। তখন তিনি ভাবলেন একবার মকর মাছকে জিজ্ঞাসা করি। তারপর মা যশোদা মকর মাছকে বললেন, হে মকর মাছ আমি ভুল করে অন্ন রান্না করেছি। আজকের দিনে এই অন্ন ভক্ষণ মানে সহস্র পাপ ভক্ষণ করা। কিন্তু আমি নিরুপায়। কেউ গ্রহণ করতে চায় না। হে মকর মাছ তুমি কি গ্রহণ করবে? তখন মকর মাছ উত্তরে বলে, হ্যাঁ আমি ভক্ষণ করবো তবে আমার একটি শর্ত আছে। মা যশোদা জানতে চাইলেন কী সেই শর্ত। উত্তরে মকর মাছ জানায় একাদশী তিথিতে অন্ন ভক্ষণ করলে সহস্র পাপ হবে। আর সেই পাপ থেকে মুক্তি দেবে তোমার গোপাল। আমাকে গোপালের বাঁশিতে স্থান দিতে বলো। গোপালের বাঁশি আমি স্পর্শ করলে আমরা সহস্র পাপ পুণ্যে পরিণত হবে। তুমি কি পারবে মা যশোদা গোপালের বাঁশিতে আমার স্থান দিতে। তাহলে আমি এই অন্ন গ্রহণ করবো। তারপর মা যশোদা বললেন, ঠিক আছে তুমি এই অন্ন গ্রহণ করো। আমি কথা দিলাম গোলাপের বাঁশিতে তোমার স্থান হবে। এরপর মকর মাছ সব অন্ন গ্রহণ করলো এবং মা যশোদার সঙ্গে শ্রীকৃষ্ণের কাছে গেল। 


মা যশোদা গোপালকে বললেন একাদশী তিথিতে আমি অন্ন রান্না করে পাপের ভাগীদার হয়েছি। এই মকর মাছ সমস্ত অন্ন গ্রহণ করে আমাকে পাপমুক্ত করেছে ,আর নিজে সহস্র পাপের অধিকারী হয়েছে। তুমি এই মকর মাছকে তোমার বাঁশিতে স্থান দাও। আর মকর মাছকে পাপমুক্ত কর। তখন শ্রীকৃষ্ণ বলেন, আজ থেকে মকর মাছ সর্বদা আমার বাঁশিতে স্থান পাবে। যেখানেই কৃষ্ণের বাঁশি থাকবে সেখানেই মকর থাকবে। মকর ছাড়া কৃষ্ণের বাঁশি সম্পন্ন হবে না। আর এই কারণে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের বাঁশিতে সর্বদা মকর থাকে। 



কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.