ভেন্টিলেটর সাপোর্টেই যমজ সন্তান প্রসব করলেন করোনা আক্রান্ত মা!


Odd বাংলা ডেস্ক: ভেন্টিলেটর সাপোর্টেই যমজ সন্তান প্রসব করার বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপ করেছেন করোনা আক্রান্ত এক মা। কলকাতা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এমন ঘটনা ঘটেছে। 
খবরে বলা হয়, ভেন্টিলেটর সাপোর্টেই ওই অন্তঃসত্ত্বার অস্ত্রোপচার করা হয়। জন্ম হয় যমজ সন্তানের। আপাতত মা এবং দুই শিশুই সুস্থ। সদ্য দুই শিশুকে নিয়ে মা হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন বলে জানান চিকিৎসক।

ভেন্টিলেটর সাপোর্টে থাকা অবস্থায় করোনা আক্রান্তের যমজ সন্তান প্রসবের ঘটনা ভারতে নজিরবিহীন।

জুলাইয়ে করোনা সংক্রমিত হয়ে অক্সিজেন স্যাচুরেশন কমছিল জয়া মাঝির। হাওড়ার শ্যামপুরের বাসিন্দা জয়া। তখন আট সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন তিনি। ফলে দ্রুত তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। একদিকে করোনা সংক্রমণে ফুসফুসের কার্যক্ষমতা কমছিল, অন্যদিকে গর্ভস্থ শিশুদের কারণে বাড়ছিল মানসিক চাপ। দুইয়ে মিলে জয়ার অবস্থা অত্যন্ত সংকটজনক হয়ে পড়ে।

ওই অবস্থায় তাকে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়। ফুসফুসে সংক্রমণ ছাড়ানোয় শ্বাসকষ্টেও ভুগছিলেন জয়া। প্রথমে আইসিইউতে এবং পরে ভেন্টিলেটর সাপোর্টে রাখা হয় তাকে। কিন্তু অবস্থার সে রকম উন্নতি হচ্ছিল না। সেই সময় মাকে বাঁচাতে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানান চিকিৎসকরা।

গাইনি ও প্রসূতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. পার্থ মুখোপাধ্যায় বলেছেন, ‘অস্ত্রোপচার না করলে মায়ের জীবন বিপন্ন হতো। রোগীর শরীরে অক্সিজেন স্যাচুরেশন দ্রুত কমে যাচ্ছিল, ফলে গর্ভের দুই শিশুও পর্যাপ্ত অক্সিজেন পাচ্ছিল না। ওই সময় ক্রিটিক্যাল কেয়ার, অ্যানাস্থেশিয়া, শিশু বিভাগ এবং আমরা যৌথভাবে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

স্বাভাবিক অবস্থায় মায়ের পেটে ১০ মাস হলে একটি শিশুর জন্ম হয়। এ ক্ষেত্রে জয়ার শারীরিক অবস্থার কথা ভেবে আট মাস অর্থাৎ সময়ের আগেই অস্ত্রোপচার করা হয়। জন্ম হয় দুই পুত্র সন্তানের।

ডা. পার্থ মুখোপাধ্যায় আরও জানান, সাধারণত সদ্যোজাতদের ওজন আড়াই কিলোগ্রাম মতো হয়ে থাকে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে জন্মের পর দুই সদ্যোজাতের ওজন ছিল দেড় কিলোগ্রাম এবং এক কিলো দু’শো গ্রামের মতো। জন্মের পর সদ্যোজাতদের শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি থাকায় অক্সিজেনও দেওয়া হয় বলে জানান তিনি। শিশু বিভাগের দক্ষতাতেই জয়ার দুই শিশু সুস্থ হয়ে ওঠে বলে জানান পার্থ।

এর আগে আরেকটি ঘটনায় জুন মাসে ভেন্টিলেটর সাপোর্টে থাকা প্রসূতির অস্ত্রোপচার করা হলেও শেষ পর্যন্ত মাকে বাঁচানো যায়নি। তাই জয়ার ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা টেনশনে ছিলেন। এবার মা ও দুই সদ্যোজাতই সুস্থ থাকায় আনন্দিত চিকিৎসকরা।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.