মৃত প্রাণীর হাড় খেয়েই বাঁচে রহস্যময় দাড়িওয়ালা শকুন !

Odd বাংলা ডেস্ক: সিমিয়েন পার্বত্যাঞ্চল, ইথিওপিয়া, এখানে এমন এক পাখির বসবাস, যারা সবদিক থেকেই অদ্ভুত। দাড়িওয়ালা বা শ্মশ্রুধারী শকুন! এরা পৃথিবীর সব শকুনদের থেকে প্রায় সব ক্ষেত্রেই আলাদা। এরকম নাম হওয়ার প্রধান কারণ, এদের ঠোঁটের নিচে কিছু দাড়ি রয়েছে।

গলা, ঘাড় ও মাথায় কোনো পালক থাকে না। প্রশস্ত ডানায় ভর করে আকাশে ওড়ে। মহীরুহ বলে পরিচিত বট, পাকুড়, অশ্বত্থ, ডুমুর প্রভৃতি বিশালাকার গাছে সাধারণত লোকচক্ষুর অন্তরালে শকুন বাসা বাঁধে। সাধারণত গুহায়, গাছের কোটরে বা পর্বতের চূড়ায় এক থেকে তিনটি সাদা বা ফ্যাকাশে ডিম পাড়ে।

সারা বিশ্বে প্রায় ১৮ প্রজাতির শকুন দেখা যায়। এর মধ্যে পশ্চিম গোলার্ধে সাত প্রজাতির। পূর্ব গোলার্ধে (ইউরোপ, আফ্রিকা ও এশিয়া) ঈগলের সঙ্গে সম্পর্কিত ১১ প্রজাতির শকুন দেখা যায়। দক্ষিণ এশিয়ার দেশ বাংলাদেশে প্রায় ছয় প্রজাতির শকুন রয়েছে। এর মধ্যে ৪ প্রজাতি স্থায়ী আর দুই প্রজাতি পরিযায়ী।

বাংলা শকুনসহ আরো আছে রাজ শকুন, গ্রীফন শকুন বা ইউরেশীয় শকুন, হিমালয়ী শকুন, সরুঠোঁট শকুন, কালা শকুন ও ধলা শকুন। এসব প্রজাতির শকুনই সারা বিশ্বে বিপন্ন। স্থায়ী প্রজাতির মধ্যে রাজ শকুন মহাবিপন্ন। এটি ডিম থেকে বাচ্চা ফোটানোর জন্যে ঠোঁটে পাথরের টুকরো বহন করে ও ডিমের উপর নিক্ষেপ করে।

এই অভিজ্ঞ শ্মশ্রুধারী, পাহাড়ি উপত্যকা চোষে বেড়ায় খাবারের খোঁজে। তার লক্ষ্য পাহাড়ের চূড়ায় ওই জটলার দিকে। মৃত প্রাণীর পরিত্যক্ত হাড়। শকুনই একমাত্র প্রাণী, যা রোগাক্রান্ত মৃত প্রাণী খেয়ে হজম করতে পারে। এগুলোই এদের প্রিয় খাবার। তবে হাড় কীভাবে খায় তারা? এরা হাড় সংগ্রহ করে, অনেক উপর থেকে পাথরে ভূমিতে নিক্ষেপ করে। ফলে হাড় ভেঙে ছোট ছোট টুকরো হয়ে যায়। 

এরপর এরা সরাসরি টুকরোগুলো গিলে ফেলে। তরুণ শকুনরা এই কৌশল রপ্ত করতে বদ্ধ পরিকর। তবে কাজটি অতটা সহজ নয় প্রথমবার কেউই সফল হয় না। দ্বিতীয় চেষ্টাও ব্যর্থ। তৃতীয়টিও, ব্যর্থ চতুর্থটিও, অবশেষে সফলতা। যদি ব্যর্থতা আপনাকে থামিয়ে দেয় তবে সফলতা আপনার জন্য নয়, ব্যর্থতাই সেই শিক্ষা যা সফল হওয়ার জন্য অত্যাবশ্যকীয়। সারা বিশ্বে শকুনকে বিলুপ্তির হাত থেকে বাঁচাতে প্রতি বছর সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম শনিবার আন্তর্জাতিক শকুন সচেতনতা দিবস পালিত হয়ে থাকে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.