রহস্যময় দুই সৌরবালক, সূর্যাস্ত যাদের প্রাণ শুষে নেয়!
Odd বাংলা ডেস্ক: পৃথিবী বড়ই রহস্যময়। এখানে প্রতিনিয়ত এমন সব ঘটনা ঘটে যা রহস্যে ঘেরা। কিছু রহস্য রয়েছে প্রকৃতিতে আবার অনেক রহস্য লুকিয়ে থাকে মানুষের মধ্যেই। তেমনই রহস্যঘেরা দুই শিশুকে নিয়ে সাজানো আমাদের আজকের প্রতিবেদন। যারা দিনের আলো নিভে যাওয়া সঙ্গে সঙ্গেই নিজের সব ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। চলুন জেনে নেয়া যাক রহস্যময় সেই ঘটনাটির বিস্তারিত-
ঘটনাটি ২০১৬ সালের, পাকিস্তানের বালুচিস্তানের একটি গ্রামে ১৩ বছর বয়সী শোয়েব এবং ৯ বছর বয়সী রাশেদ ছিল রহস্যময় দুটি ভাই। দিনের বেলা সূর্যের আলোতে তারা স্বাভাবিক দুটি শিশু, কিন্তু রাত হলে দুজনেই সম্পূর্ণ প্যারালাইজড হয়ে যেত। হাটা-চলা, খাওয়া-দাওয়া এমনকি কথা পর্যন্ত বলতে পারত না। পরদিন সূর্য উঠলে আবার সব ঠিকঠাক। এমনকি দিনের বেলা অন্ধকার ঘরেও তাদের কোনো সমস্যা হতো না।
তাদেরে এই সমস্যা চিকিৎসাবিজ্ঞানে রীতিমত এক গোলোকধাঁধার সৃষ্টি করে। পাকিস্তানের এই অদ্ভুত দুই ভাইকে পৃথিবী চেনে সোলার কিডস নামে।
শোয়েব ও রাশেদের পিতা-মাতা হলেন আপন চাচাত ভাই-বোন। তাদের আট সন্তানের মধ্যে দুজন খুব অল্প বয়সেই মারা যায়। জীবিত সন্তানদের মধ্যে তিন জনের দেহ কেবল দিনের বেলাতেই সক্রিয় থাকে। শোয়েব-রাশেদ ছাড়া আক্রান্ত অন্যজনের বয়স মাত্র ১ বছর।
২০১৬ সালে আন্তর্জাতিক গবেষকদের একটি দল পৌঁছে যায় তাদের গ্রামে। সংগ্রহ করে ওই এলাকার মাটি, বায়ু এবং দুই ভাইয়ের রক্তের নমুনা। নমুনা পরীক্ষার পর তারা জানান, লক্ষণগুলো অনেকটা মায়াসথেনিক সিনড্রোমের মতো। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির পেশী বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে দুর্বল হতে থাকে। এটি একটি জিনগত রোগ, যার কারণে দেহের মাংসপেশী এবং স্নায়ুর জাংশনে গোলযোগ দেখা দেয়। জাংশনের কার্যক্রমের জন্য যে প্রোটিন দায়ী তা নির্দিষ্ট সময় পর পর কাজ করা বন্ধ করে দেয়। ফলে রোগী সেই সময়ে ধীরে ধীরে প্যারালাইজড হয়ে যায়।
চিকিৎসকেরা প্রাথমিকভাবে নিউরো- ট্রান্সমিটার ব্যবহার করে চিকিৎসা শুরু করেন দুই ভাইয়ের। কৃত্রিমভাবে রাসায়নিক প্রয়োগে তাদের স্নায়ু ও পেশীতে সংকেত প্রেরণ করা হয়। সৌভাগ্যজনকভাবে এই চিকিৎসাতেই আশার আলো দেখতে পায় শোয়েব ও রাশেদ। তারা প্রথমবারের মতো রাতের বেলাতেও নিজের পায়ে চলতে সক্ষম হয়। প্রথমবারের মতো নিজ হাতে গ্লাস তুলে জল পান করেছিল দুজনই।
তবে এই রোগ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানার জন্য আরো বিস্তর গবেষণা প্রয়োজন। তাই সম্পূর্ণ সরকারি অনুদানে সুই ভাইকে কিছুদিন চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়।
Post a Comment