Odd বাংলা ডেস্ক: শুধু মালদহই নয়, সংলগ্ন বিহার ও ঝাড়খণ্ডের বেশকিছু জায়গায় গঙ্গার জলস্তর অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে যাওয়ায় প্রভাব পড়ল রেলযাত্রাতেও। পূর্ব রেলের মালদহ ডিভিশনের বিহার ও ঝাড়খণ্ডমুখী বেশকিছু ট্রেন বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিল কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি দিল্লিগামী বেশকিছু ট্রেনের যাত্রাপথও পরিবর্তন করা হয়েছে বলে রেল সূত্রে জানা গিয়েছে। এদিকে বুধবার গঙ্গায় তলিয়ে যাওয়া তিন ভাইয়ের দেহ উদ্ধার হয়েছে বৃহস্পতিবার। এই ঘটনায় পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
পূর্ব রেলের মালদহের ডি আর এম যতেন্দ্র কুমার বলেন, এই ডিভিশনের বেশকিছু জায়গায় গঙ্গার জলস্তর অত্যধিক বেড়ে গিয়েছে। রেলপথের বেশকিছু কালভার্টের নীচ দিয়ে তীব্রগতিতে গঙ্গার জলধারা ছুটছে। কোথাও কোথাও রেললাইনও প্রায় ছুঁইয়ে ফেলেছে জল। ফলে দুর্ঘটনা এড়াতেই বেশকিছু ট্রেন বাতিল এবং অন্যান্য কিছু ট্রেনের যাত্রাপথ পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, মালদহ ডিভিশনের ভাগলপুর, জামালপুর, সাহেবগঞ্জের মধ্যে গঙ্গা বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। কোথাও নদীর জল রেল ব্রিজের গার্ডার ছুঁইয়ে ফেলেছে, আবার কিছু অংশে রেললাইনের উপরেও জল চলে এসেছে।
তাই পরিস্থিতি বিবেচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বেশ কয়েকটি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। ফরাক্কা এক্সপ্রেস, ব্রহ্মপুত্র মেইল, মালদহ – নয়াদিল্লি স্পেশাল ট্রেন, ডিব্রুগড় – নয়াদিল্লি স্পেশাল ট্রেন সহ ১৬টি ট্রেনের যাত্রাপথ পরিবর্তন করা হয়েছে। ফরাক্কা এক্সপ্রেস এখন উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের কাটিহার দিয়ে চালানো হচ্ছে। মালদহ ডিভিশনের হাওড়া– জামালপুর এবং আনন্দবিহার – ভাগলপুর ট্রেন দুটির যাত্রাপথ সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে।
এদিকে বুধবার সকালে গঙ্গায় নিখোঁজ হয়ে যাওয়া তিন ভাইয়ের দেহ উদ্ধারের পরেই কান্নার রোল উঠেছে বৈষ্ণবনগর থানার কৃষ্ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের চর সুজাপুর এলাকার অর্জুন মণ্ডল পাড়া গ্রামে। ডিঙি নৌকা নিয়ে গঙ্গা পার করে পাট কাটতে গিয়ে বুধবার নিখোঁজ হন তিন ভাই। তখন থেকেই সিভিল ডিফেন্স এবং এনডিআরএফ কর্মীদের নামিয়ে তল্লাশি শুরু করে কালিয়াচক – ৩ ব্লক প্রশাসন ও পুলিস। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা নাগাদ একের পর এক তিন জনের দেহ উদ্ধার হয়।
খোঁজ মেলে সুব্রত মণ্ডল (২২), সত্যজিৎ মণ্ডল (১৯) এবং সত্যবান মণ্ডলের (১৮)। কালিয়াচক –৩ ব্লকের বিডিও মামুন আখতার বলেন, তিনটি মৃতদেহই উদ্ধার হয়েছে। পরিবার ক্ষতিপূরণ পাবে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এদিকে, বাড়ির চার ছেলের মধ্যে একই সাথে তিন জনেরই মৃত্যু হওয়ায় এদিন কান্নায় ভেঙে পড়ে পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীরা। পুরো এলাকাতেই শোকের পরিবেশ নেমে এসেছে। কার্যত কারও বাড়িতেই এদিন শোকে হাঁড়ি চড়েনি। গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য জয়ন্তী মণ্ডল বলেন, ভাবতেও পারছি না একই পরিবারের এতগুলি ছেলেকে একসঙ্গে কেড়ে নেবে গঙ্গা!
Post a Comment