পৃথিবীর সবচেয়ে বিপজ্জনক লাজুক প্রকৃতির এই পাখি!
Odd বাংলা ডেস্ক: পৃথিবীর সবচেয়ে বিপজ্জনক পাখিটির নাম 'কেসোয়ারি।' কেসোয়ারির পরিবারের অন্তর্ভুক্ত বিশাল দেহী কেসোয়ারির দেখা পাওয়া যায় নিউগিনি এবং তার নিকটবর্তী দ্বীপের বর্ষাঘন অঞ্চলে। এ ছাড়া উত্তর অস্ট্রেলিয়ার নিরক্ষীয় বনাঞ্চলেও এদের দেখা মেলে। উচ্চতার নিরিখে অস্ট্রিচ এবং এমুর পরেই কেসোয়ারির স্থান। এরা উড়তে পারে না। সাউদার্ন নর্দার্ন বা ডোয়ার্ক বা বামন- এই তিন প্রজাতির পাখিই বেশি দেখা যায়। মূলত গভীর অরণ্যের বাসিন্দা কেসোয়ারি একাকী স্বভাবের এবং লাজুক প্রকৃতির।
সাউদার্ন কেসোয়ারির বিজ্ঞানসম্মত নাম ঈধংত্রর্ডং। প্রায় ছয় ফুট লম্বা। ওজন প্রায় ষাট থেকে সত্তর কেজি। এক একটি কেসোয়ারির চেহারা দেখার মতো। মাথা থেকে ঘাড়ের দিকে নীল ও বেগুনি রঙের। চামড়া বাদ দিলে এদের সারাটা শরীরই খরখরে ও কুচকুচে কালো পালক দিয়ে ঢাকা থাকে। পায়ের উপরের অংশে নীলচে এবং সবুজাভ ধূসর রঙের। গলার দিকে লাল এবং ঘাড়ের পেছনে কমলা রঙের ছোপ থাকে। এদের মুখে অত্যন্ত ধারালো একজোড়া ঠোঁট এবং মাথার ওপর ছাই রঙের ঝুঁটি দেখা যায়।
ঝুঁটিটি কেরাটিন জাতীয় প্রোটিন দিয়ে তৈরি এবং নরম ও ইলাস্টিক প্রকৃতির। কেসোয়ারির তিন আঙ্গুলবিশিষ্ট পায়ের পাতায় প্রতিটি আঙ্গুল নখযুক্ত। তবে এর মধ্যে মাঝের আঙ্গুলের সঙ্গে যুক্ত পাঁচ ইঞ্চি লম্বা অনেকটা ছুরির মতো দেখতে নখটি সবচেয়ে মারাত্মক। প্রচণ্ড জোরে ছুটে এসে প্রায় পাঁচ ফুট লাফিয়ে উঠে শিকারের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এই ধারালো নখের সাহায্যে এরা শিকারকে ফালা ফালা করে দেয়। কেসোয়ারির এই খুনে স্বভাবই এদের সবচেয়ে বিপজ্জনক প্রাণীর তকমা দিয়েছে। এমনিতে লাজুক স্বভাবের হলেও যদি এদের উত্ত্যক্ত করা হয় তবে এরা সহজেই উত্তেজিত হয়ে পড়ে এবং আক্রমণ করে।
মূলত মানুষ এবং গৃহপালিত পশুরাই কেসোয়ারির আক্রমণের সম্মুখীন হয়। এ কারণেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নিউগিনির সামরিক ঘাঁটির সেনাদের কেসোয়ারির নজর এড়িয়ে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল আর এই পাখির মাংস খাওয়া প্রায় অযোগ্য। এতটাই শক্ত যে দুই থেকে তিন ঘন্টা সিদ্ধ করার পরেও এতটা শক্ত থাকে মনে হয় দাঁত ভেঙ্গে যাওয়ার উপক্রম। ছবিতে হঠাৎ দেখে কাঁচা আম মনে হলেও এগুলা কাচা আম না এগুলা হচ্ছে কেসোয়ারি পাখির ডিম।
Post a Comment