পুজোর আগে শেষ রবিবার গৌড়বঙ্গের বাজারগুলি জমজমাট, উপচে পড়া ভিড়

 


Odd বাংলা ডেস্ক: নিজস্ব প্রতিনিধি এবং সংবাদদাতা :  পুজোর আগে শেষ রবিবার গৌড়বঙ্গবাসী চুটিয়ে কেনাকাটা সারলেন। এদিন মালদহ, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরের বড় বাজারগুলিতে কার্যত তিল ধারনের জায়গা ছিল না। মাসের প্রথম সপ্তাহে অনেকেই বেতনের টাকা হাতে পেয়েছেন। ফলে তাঁরা এদিন সপরিবারে পুজোর বাজার করেন। গত রবিবার বৃষ্টির জেরে বাজার পণ্ড হয়েছিল। এদিনের রোদঝলমলে আবহাওয়া অবশ্য ব্যবসায়ীদের সেই ক্ষতি পুষিয়ে দিয়েছে। 

ছুটি থাকায় এদিন সকাল থেকেই মালদহের বাজারগুলিতে ভিড় লক্ষ্য করা যায়। ইংলিশবাজার ও পুরাতন মালদহ শহরে সবচেয়ে বেশি মানুষ কেনাকাটার জন্য ভিড় করেন। দুপুরের পর থেকে বাজারগুলি কার্যত মেলার চেহারা নেয়। ইংলিশবাজার শহরের চিত্তরঞ্জন পুর বাজার, নেতাজি মার্কেটের পাশাপাশি মকদমপুর, ঝলঝলিয়া বাজার সহ সর্বত্র রাত পর্যন্ত ক্রেতাদের আনাগোনা লেগে ছিল।

ইংলিশবাজারের বাসিন্দা, শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, এদিন পরিবারের সকলের জন্য বাজার করেছি। পুজো এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ির ছোটরা নতুন পোশাকের জন্য বায়না বেশি করে ধরছিল। আমি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করি। মাস পয়লা বেতন পাইনি। বেতনের টাকা পেতে দেরি হওয়ায় বাজার করতে দেরি হল। হবিবপুরের বাসিন্দা অনিতা সরকার বলেন, আমরা প্রতিবছর ইংলিশবাজারে কেনাকাটা সারি। পুজোর দিন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে বাজারদর কিছুটা কমে। ফলে সস্তায় সামগ্রী পাওয়া যায়। কিছুটা সাশ্রয়ের জন্য শেষ মুহূর্তে বাজার করেছি। 

মালদহ মার্চেন্ট চেম্বার অব কমার্সের সাধারণ সম্পাদক জয়ন্ত কুণ্ডু বলেন, সপ্তাহ দুয়েক আগে পর্যন্ত বড় শপিংমলগুলোয় ভালো ভিড় হলেও ছোট ব্যবসায়ীদের সেভাবে বিক্রিবাটা হচ্ছিল না। তবে শেষ ১০ দিনে ছোট পোশাকের দোকানে ভালো ব্যাবসা হয়েছে। কাপড়ের পাশাপাশি জুতোর দোকানেও ভালো বিক্রি হয়েছে। তবে প্রসাধনী সামগ্রীর আশানুরূপ বিক্রি হয়নি। মহিলা পার্লারগুলিও ব্যবসায় মার খেয়েছে। 

এদিন উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ,ইসলামপুর ও ডালখোলা সহ গোটা জেলায় শেষ মুহুর্তের কেনাকাটার ব্যস্ততা ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে রায়গঞ্জের তুলনায় ইসলামপুরে ভিড় কম ছিল। এদিন ইসলামপুর বাজার ও শপিংমলগুলিতে ক্রেতাদের ভিড় দেখা যায়। কিন্তু ব্যবসায়ীদের দাবি, অন্যন্য বারের তুলনায় এবছর ভিড় একটু কম। করোনার জেরে আর্থিক মন্দা ও অনলাইন শপিংয়ের জেরে এই পরিস্থিতি বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।

কেনাকাটার ভিড়ে ব্যাপক যানজট দেখা গেল রায়গঞ্জ শহরেও। এদিন দুপুর থেকেই শহরের রাস্তাগুলিতে ভিড় বাড়তে থাকে। বিভিন্ন জামাকাপড়ের দোকানে শেষ মুহূর্তের কেনাকাটা করার জন্য ভিড় জমতে থাকে। অল্পবয়সি থেকে মাঝবয়সীরাও শেষবেলায় পুজোর কেনাকাটা করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। বিকেল গড়াতে না গড়াতেই সেই ভিড়ে কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে রায়গঞ্জের বড় বড় বাজার সংলগ্ন রাস্তাঘাট। বাসিন্দারা  বলেন, পাঁচ মিনিটের রাস্তা যেতেও অনেক বেশি সময় লেগে যাচ্ছে।

এদিন বালুরঘাটের বড় বস্ত্রের দোকান ও শপিংমলগুলিতে ভিড় উপচে পড়ল। পঞ্চমীর দিনে বাজারে শেষ মুহূর্তের কেনাকাটি করতে তোড়জোড় শুরু হয়ে যায়। জামা কাপড়, জুতো, সাজগোজ থেকে শুরু করে হোটেল ও রেস্তরাঁতেও ব্যাপক ভিড় দেখা যায়। এছাড়াও শপিংমল ও বড় দোকানগুলিতে কেনাকাটা করতে দেখা যায় বাসিন্দাদের। তবে পুজোর আগে ব্যবসা একেবারেই ছিল না বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। রবিবার পঞ্চমীর দিনে সকাল থেকে ফাঁকা থাকলেও দুপুরের পর থেকে ভিড় বেড়ে যায়। এদিকে শহরের বড় দোকান ও শপিংমলগুলিতে ভিড় থাকলেও তহবাজারের ছোট বস্ত্রের দোকানগুলিতে ভিড় কম ছিল। এছাড়াও ফুটপাতের দোকানগুলিতে আগের তুলনায় এদিন বেশি ভিড় ছিল। এছাড়াও জেলার বিভিন্ন শহর ও ব্লকের বাজারগুলিতেও এদিন আগের তুলনায় বেশি ভিড় দেখা গিয়েছে। 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.