জেনে নিন শরীর সুস্থ রাখার কিছু উপায়


 

Odd বাংলা ডেস্ক:বিশ্বে সবচেয়ে জনপ্রিয় সুগন্ধি ও ঔষধি গাছের অন্যতম হলো রোজমেরি। রোজমেরিতে আছে কয়েকটি যৌগ, যেমন কেফিক ও রোজমেরিনিক অ্যাসিড, আর এর এসেনশিয়াল তেল হলো এপিনন, ক্যামফর ও লিনালুল। অ্যারোমাথেরাপিতে ব্যবহৃত হয় রোজমেরি। স্মৃতি উন্নয়নে সহায়ক, সজ্ঞান সতর্ক ভাব রাখতে সহায়ক। রোজমেরি চা চাপ উপশম করে, হ্রাস করে বিষণ্নতা।রোজমেরি একটি বহুবর্ষজীবী ঔষধি।

এটি অন্যান্য হার্বস যেমন, ওরেগানো, পুদিনা, থাইম, ল্যাভেন্ডার, ঋষির পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। গাঢ় সবুজ পাতা ও ছোট বেগুনি, সাদা, নীল বা গোলাপী ফুলের রোজমেরির বাস ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে। আজকাল অনেক মানুষের নিজস্ব বাগানে এই হার্বসের দেখা মেলে। জেনে নেওয়া যাক রোজ মেরির উপকারিতা সম্পর্কে—

স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে:– রোজমেরিতে উপাদানগুলির কারণে মস্তিষ্কের ক্ষতির বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেয়। স্মৃতি শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে রোজমেরির গন্ধ। এটি বার্ধক্য জনিত স্মৃতিশক্তি লোপ বা ডিমেনশিয়া প্রতিরোধ করে৷

লিভার ভালো রাখে :– প্রাথমিক গবেষণায় দেখা গেছে যে রোজমেরি লিভারের স্বাস্থ্য এবং কার্যকারিতা উন্নত করতে পারে। এটি আরও জানা যায় যে রোজমেরি চা তার মূত্রবর্ধক বৈশিষ্ট্যের জন্য শরীরকে পরিষ্কার করতে সহায়তা করে।

ক্যান্সার প্রতিরোধ করে :– বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে, রোজমেরি ক্যান্সারের কোষ গঠন ও বিস্তার হ্রাসে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। আরও সুনির্দিষ্টভাবে বলা যেতে পারে যে রোজমেরি টিতে সমস্ত ধরণের ক্যান্সার, বিশেষত স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ বা ধীর করার প্রভাব রয়েছে।

রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে:– রোজমেরির চা সংবহনতন্ত্রের জন্য একটি উত্তেজক হিসাবে পরিচিত কারণ এটিতে অ্যাসপিরিনের মতো অ্যান্টিকোয়্যাগুল্যান্ট বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা দেহে রক্ত ​​প্রবাহকে বাড়িয়ে তুলতে পারে। এই চাটি পান করার ফলে শরীরে রক্ত ​​সঞ্চালন ত্বরান্বিত হতে পারে, কোষগুলিতে আরও অক্সিজেন বহন করা যায় এবং শরীরকে নিজেই মেরামত করতে সহায়তা করে।

হজমে সহায়তা করে:– রোজমেরি চা এর অ্যান্টি-স্প্যাসমডিক বৈশিষ্ট্য এটি বদহজম, কোষ্ঠকাঠিন্য, ফোলাভাব এবং ক্র্যাম্পে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য আদর্শ করে তোলে। এই ভেষজ চা হজমজনিত সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে প্রজন্ম ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

চুল পরার সমস্যা প্রতিরোধ করে :– চুলের যে কোনো সমস্যায় দারুণ কাজ করে রোজমেরি। এর তেল ব্যবহারে চুলের গোড়া মজবুত হয়। এটি চুল পড়া কমায় ৩ গুণ পর্যন্ত।

ব্যাথা নাশ করে:– রোজমেরির তেল পেশির ব্যাথা এবং জয়েন্টের ব্যাথা কমাতে খুবই উপকারী। বাজারে রোজমেরি তেল পাওয়া যায়। সুস্বাস্থ্য রক্ষায় তা ব্যবহার করতে পারেন। চাইলে ঘরের কোণায় রাখতে পারেন রোজমেরি গাছও।

মেনস্ট্রুয়েশন, মেনোপজ, অ্যাকনে, অ্যানিমিয়া, অনিয়মিত পিরিয়ড, মোটা হয়ে যাওয়া প্রভৃতি বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হয় মেয়েদের। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মহিলারা এই সমস্ত সমস্যা এড়িয়ে চলেন। কিন্তু এই সমস্ত সমস্যা এড়িয়ে না যাওয়াই উচিত্‌। এই সমস্ত সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য বেশ কিছু ঘরোয়া আয়ুর্বেদিক উপায় রয়েছে। জেনে নিন সেগুলি কী কী-

১) যন্ত্রণাদায়ক মেনস্ট্রুয়েশন- মেনস্ট্রুয়েশনের সময়ে প্রায় প্রত্যেকেই তলপেটে অসহ্য যন্ত্রণা, বমি, মাথা ঘোরা, কোষ্ঠকাঠিন্য, অরুচি, খিদে না পাওয়া প্রভৃতি সমস্যার সম্মুখীন হন। চিকিত্‌সকেরা এই সময়ে ‘সুন্দরী কল্প’ নামে একটি আয়ুর্বেদিক মিশ্রন মহিলাদের পরামর্শ দেন। এটি যেকোনও ওষুধের দোকানেই পাওয়া যায়। এই মিশ্রনের উপাদানগুলি মহিলাদের রক্ত পরিশুদ্ধ করতে এবং তাঁদের প্রজনন অঙ্গকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া ‘অশোকারিষ্ঠা’ নামে আয়ুর্বেদিক টনিকটিও মহিলারা খেতে পারেন। মেনস্ট্রুয়েশনের সময়ে যাঁদের অতিরিক্ত রক্তপাতের প্রবনতা রয়েছে, তাঁদের জন্য এটি খুবই উপকারী।

সচেতন মানুষ সবসময়ই সর্তক থাকেন তার স্বাস্থ্য নিয়ে। শরীর সুস্থ রাখতে নানারকম চেষ্টা করে থাকেন তারা। সঠিক ভাবে খাদ্য গ্রহণ থেকে শুরু করে নিয়মিত ব্যায়াম ও সরীর চর্চা করেন তারা। তবে সঠিকভাবে খাবার গ্রহণ এবং ব্যায়াম না করার কারণে অনেক কষ্টের পর সেই অনুযায়ী ফল পাচ্ছেন না ফলে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, আথ্রাইটিস, স্থূলতা, মাংসপেশির শক্তি কমে যাওয়া, হাড়ের ক্ষয়সহ এটা-সেটা আরোও কত রোগের শিকার হচ্ছেন। শরীরিক সুস্থতা নির্ভর করে নিয়মিত শরীরচর্চা এবং পরিমিত খাদ্যাভাসের উপর। শরীরকে সতেজ ও চাঙ্গা করতে নিয়মিত হাঁটার অভ্যাস করতে পারেন। শরীরের অনেক রোগ-বালাই দূর তো হবেই, পাশাপাশি ওজন কমবে এবং শরীরও সুস্থ থাকবে আজীবন।

প্রথমত হাঁটার অভ্যাস করতে হবে। হাঁটলে সরীরের উপকার হয় এতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু হাঁটতে হবে ১০,০০০ পা! এই নিয়ে একটি প্রচলিত গল্পও রয়েছে। জাপান‘র অধ্যাপক ইয়োশিরো হাতানো ১৯৬৫ সনে এই সংখ্যাটি আবিষ্কার করেন। অলিম্পিকের মাঠে যাওয়ার জন্য হাতানো প্রতিদিন ১০,০০০ পা হাঁটতেন। এক মাস এভাবে হাঁটার পর তাঁর হৃদযন্ত্রের প্রচুর উন্নতি হতে থাকে, কমে যেতে থাকে ওজনও। তিনি পরে পরীক্ষার মাধ্যামে প্রমান করেন, প্রতিদিন যে পরিমাণ ক্যালরি ঝরানো উচিত আমাদের, তার পুরোটাই সম্ভব এই পরিমাণ হাঁটার! আর এই ১০,০০০ পা হাঁটা মানেই ৭ থেকে ৮ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করা।

হালের গবেষণায় বলছে, প্রতিদিন কমপক্ষে ৪০ থেকে ৪৫ মিনিট হাঁটলেই ভালো। এছাড়া যদি হাঁটতে ভালো লাগে তবে হাঁটার সময়টা ১ ঘণ্টা পর্যন্ত সময় নিতে পারেন। তবে যারা বেশি-বেশি হাঁটতে অভ্যস্ত না তারা ৪০ মিনিট হাঁটার সময়টাতে ১০ মিনিটের বিরতি দিতে পারেন। পাঁচ দিন ৩০ মিনিট করে ১৫০ মিনিট হাঁটলেই শরীর সুস্থ থাকবে। তবে কখনই ৩০ মিনিটের কম হাঁটা উচিত নয়।

হাঁটার সবচেয়ে ভালো সময় হচ্ছে সকাল এবং বিকেল। হাঁটার সময় অনেকে বুঝতে পারেন না যে, হাঁটার গতি কেমন হতে হবে। তবে হাঁটার জন্য তেমন সু-নির্দিষ্ট কোনো গতি নেই। প্রথমে ধীরে-ধীরে হাঁটা শুরু করার পর ক্রমশ গতি বাড়ীয়ে নিতে হবে। শরীরের সঙ্গে তাল মিলিয়ে যতোটুকু সম্ভব গতি বাড়াতে হবে। ঘুম থেকে উঠেই হাঁটতে যাওয়া ঠিক হবে না। ঘুম থেকে ওঠার কমপক্ষে ৩০ মিনিট পর হাঁটতে বের হওয়া বাঞ্চনিয়। কারোও যদি সকালে অফিসে যাওয়ার ব্যস্ততা থাকে তাহলে ঘুম থেকে একটু আগেই ওঠার অভ্যাস করুন।

সরীর সুস্থ্য থাকার কিছু পরামর্শ দেওয়া হলো:

ঘুম থেকে উঠেই ব্যায়াম নয়: ঘুম থেকে উঠেই ব্যায়াম করবেন না অন্তত ৫ মিনিট পর শুরু করুন। ঘুম থেকে ওঠার পর বিছানাতে শুয়েই ব্যায়াম করবেন না, এতে সরীর ক্ষয় হয়। ঘুম থেকে উটে ৫ মিনিট পর শুরু করুন। এই ব্যায়াম শরীর‘কে গতিশীল করবে, হজম শক্তি বৃদ্ধি করবে। এছাড়াও এটি পিঠের ব্যথা কমাতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।

সকালের নাস্তা মিস নয়: ভুলেও সকালের নাস্তা মিস করা যাবে না। সকালের সঠিক/পরিমিত নাস্তা শরীরের ওজন কমাতে ও স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। সকালের নাস্তা মিস করলে বা ঠিকভাবে না করলে সরীরের ওজন বেড়ে যায়। একটি সুষম ব্রেকফাস্ট যেমন- তাজা ফল কিংবা ফলের রস, একটি ফাইবারযুক্ত খাদ্যশস্য, কম-চর্বিযুক্ত দুধ কিংবা দই, গোটা টোস্ট ও একটি সেদ্ধ ডিম খেয়ে ব্যায়াম শুরু করুন।

সঠিকভাবে ব্রাশ করুন: নিয়মিত ও সঠিক ভাবে দাঁত ব্রাশ করতে হবে। অনেকে এটি সঠিকভাবে করতে পারেন না। সঠিকভাবে দাঁত ব্রাশ করলে আপনার দাঁত ভালো,শক্ত ও মজবুত থাকে। সঠিকভাবে দাঁত ব্রাশ না করলে তা দাঁত ও মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতি ক্ষতি সাধন করে। প্রতিবার কমপক্ষে দুই মিনিট ধরে দাঁত ব্রাশ করতে হবে এবং উপর নিচ করে ব্রাশ করতে হবে।

নিউরোবিক্স: মন ও মস্তিষ্কের জন্য নিউরোবিক্স আমাদের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মার্কিন গবেষকরা মস্তিষ্কের ব্যায়াম বোঝাতে নিউরোবিক্স শব্দের ব্যাবহার অনেক জায়গায় করেছেন। নিউরোবিক্স মস্তিষ্কের নিজস্ব জৈব যৌগিক পথগুলি সক্রিয় করে ও মস্তিষ্কের সার্কিটগুলিকে শক্তিশালী এবং সুরক্ষিত করে থাকে।

উপহার দিন ও গ্রহণ করুন: মনকে সতেজ রাখার অন্যতম একটি কাজ হলো উপহার দেওয়া এবং গ্রহন করা। তবে আপনি শুধু দিয়েই যাবেন,কখনো গ্রহণ করবেন না, এটি করা যাবে না। অন্যকে উপহার দিন ও অন্যদের কাছ থেকে উপহার গ্রহণ করুন। এটি আপনাকে মানসিক/মনস্তাত্তিক শান্তি প্রদান করবে। তবে উপহার পেতে হলে অবশ্যই আপনাকে বেশি-বেশী উপহার দিতে হবে তবেই আপনি উপহার পাবেন।

প্রার্থনা ও ধ্যান করুন: হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিজ্ঞানীদের গবেষণায় জানাযায়, রোগীদের মধ্যে যেসব ব্যক্তি প্রার্থনা করেন,রোগীদের মধ্যে অন্য যারা প্রার্থনা করেন না তাদের চেয়ে দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠেছেন। শরীরের সুস্থতায় তারা প্রার্থনা বা ধ্যান করার পরামর্শ দিয়েছেন।যার যার ধর্মীয় অনুশাষণ মেনে চলা এবং যার যার রিতি অনুয়ায়ী প্রার্থনা করা।

রসুনের ব্যবহার: রসুন, পেয়াজ ও পেয়াজের ফুল শরীরের জন্য খুবই ভালো। কেপ টাউনের একটি শিশু স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটের গবেষণায় দেখা যায়, নিয়মিত অল্প করে কাঁচা রসুন সেবন করলে শিশুদের বিভিন্ন রোগের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। এটি শরীরের অতিরিক্ত তাপ ধ্বংস করে দেয়। সুতরাং কাঁচা রসুন খান। কাঁচা রসুন সেক্স হরমন বাড়াতে সাহায্য করে ও মনকে প্রফুল্ল রাখে।

গ্রিন টি এবং অলিভ ওয়েল খান: নিয়মিত গ্রিন টি কিংবা অলিভ ওয়েল স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। এগুলো অন্যান্য উপকার ছাড়াও স্তন ক্যান্সারও প্রতিরোধ করে। এর এন্টিঅক্সিডেন্টগুলি ধোয়া বা এই জাতীয় দূষণ থেকে বাঁচতে সাহায্য করে।

ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার খাওয়া: শরীর ও মন ঠিক রাখতে হলে শরীরের হাড়ের প্রতিও যত্নবান হতে হবে। এজন্য নিয়মিত ব্যায়াম করার পাশা-পাশি হাড় শক্তিশালী করতে ও ক্ষয়রোধ করতে ক্যালসিয়াম গ্রহণ করুন। নিয়মিত দুধ ও দুগ্ধজাতীয় খাবার গ্রহণ করুন। এটি আপনার হাড়কে শক্তিশালী করবেই। বয়স ৩০ বছর পার হলে শরীরে হাড়ের ঘনত্ব হ্রাস পেতে থাকে। এসময় প্রতিদিন কমপক্ষে ২০০ মিলিগ্রাম দুধ পান করা খুবই জরুরী।

রসালো ফল সেবন: ব্লু বেরি, স্ট্রবেরি বা এই জাতীয় রসালো ফল শরীরের জন্য বেশ কার্যকরী। এসব ফলে অন্যান্য ভিটামিনসহ বেশি পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’ থাকে ৷ স্ট্রবেরিতে থাকা ফাইবার বা আঁশ মানুষকে মিষ্টি জাতীয় খাবার থেকে দূরে রাখতে অনেকটা সাহায্য করে৷ শুধু তাই নয়, স্ট্রবেরি খাওয়ার সময়ই মানুষের মনকে পুলকিত রাখে।

মশলার তরকারি সেবন: শরীর সুস্থ রাখতে উপকারী মশলাযুক্ত তরকারী সেবন করুন। অনেক মসলা রয়েছে যেগুলো শরীরের জন্য খুব ইতিবাচক । উদাহরণস্বরূপ, আদা ও হলুদ উভয়টিতে শক্তিশালী বিরোধী-প্র-দাহজনক ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রভাব রয়েছে।

কার্বোহাইড্রেট খাবার বর্জন: কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার বর্জন করুন। সব কার্ব সমানভাবে তৈরি হয় না। পরিমার্জিত কার্বস বিশেষ প্রক্রিয়ায় করা হয় ও এর থেকে সব ফাইবার সরিয়ে ফেলা হয়ে থাকে। এতে পুষ্টি কম ও শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর ভূমিকা পালন করে। গবেষণায় পাওয়া গেছে, পরিমার্জিত কার্বোহাইড্রেটগুলি অত্যধিক বিপাক ও অসংখ্য বিপাকীয় রোগের সঙ্গে সম্পর্কিত।

টমেটো ও আপেল খান: শরীরের জন্য টমেটো অত্যন্ত কার্যকরী উপাদান। তাতে রয়েছে ক্যান্সার প্রতিরোধ শক্তি ও প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। কাঁচা টমেটোর মতো রান্না টমেটোতেও প্রচুর পুষ্টি গুন রয়েছে। সুতরাং খাবারের সময় টমেটোর সালাদসহ বিভিন্ন খাবারের সাথে টমেটো ব্যবহার করুন। ব্রিটিশ থোরাসিক সোসাইটির এক গবেষণায় দেখাযায়, টমেটো এবং আপেল আপনার হাঁপানি ও দীর্ঘস্থায়ী ফুসফুসের রোগগুলি হ্রাস করতে পারে। প্রতি সপ্তাহে অন্তত পাঁচটি আপেল ও একটি টমেটো খান।

মানসিক চাপ কমান: বিভিন্ন বিষয়ে মানসিক চাপ সৃষ্টি হলে তা কমিয়ে আসার চেষ্ঠা করুন। যে বিষয়ে মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়েছে তাহা সমাধান করার চেষ্ঠা করুন। সেজন্য নিয়মিত সঠিক সময়ে খাবার গ্রহণ করুন। ফল ও সবজি প্রচুর পরিমানে খান। এছাড়া হারবাল চাও খেতে পারেন। এছাড়া বাদাম, কলা ও সবুজ ফল খেতে পারেন।

ভিটামিন সি সেবন করুন: প্রতিদিন যথেষ্ট পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’ সেবন করুন। একজন ব্যক্তির দৈনিক ৯০ গ্রাম ভিটামিন সি গ্রহণ করা একান্ত আবশ্যক। সেজন্য প্রতিদিন অন্তত পাঁচটি তাজা ফল বা সবজি এবং টক জাতীয় খাবার গ্রহণ করা উচিত। ভিটামিন সি পেতে আপনি নিয়মিত কমলা এবং পেয়ারা খেতে পারেন।

ফলিক অ্যাসি‘ড: নিয়মিত ফলিক অ্যাসিড যাতীয় খাবার শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। বিশেষ করে গর্ভবতী নারী ও ক্যান্সার রোগীদের জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ফলিক অ্যাসিড অনাগত শিশুদের সুস্থ রাখতে সাহায্য করে ও ক্যান্সার প্রতিরোধে ভূমিকা পালন করে। সবুজ শাক, সবজি, কলিজা, ফল ও ভুষিযাতীয় খাদ্যে ফলিক অ্যাসিড প্রচুর পরিমানে রয়েছে।

ভিটামিন এ জাতীয় খাবার খান: ভিটামিন ‘এ” শরীরকে সুস্থ রাখতে এক অন্যতম ভূমিকা পালন করে। এটি রোগ প্রতিরোধ ও ক্ষতিকারক রোগের নিরাময় প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও এই ভিটামিনের উপকারের কথা জানিয়েছে। কলিজা, দুগ্ধজাতীয় খাবার, সবুজ এবং হলুদ শাক সবজি, পেঁপে, আম ও মরিচে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ রয়েছে।

বিশুদ্ধ জল পান করুন: যখন আপনি ব্যায়াম করবেন তখন ভুলেও কোমল পানীয় পান থেকে বিরত থাকুন। এই সময় প্রচুর বেশী বেশী করে বিশুদ্ধ জল পান করুন। এটি আপনাকে কর্মক্ষম করে তুলতে সাহায্য করবে।

আয়রন যুক্ত খাবার গ্রহন করুন: শরীরকে সুস্থ রাখতে অন্যান্য উপাদানের মতো আয়রন খুব গুরুত্বপূর্ণ। আয়রনের অভাবে শরীরে রক্তস্বল্পতা তৈরী হয়এবং ক্লান্তি ভাব, মাথাব্যথা, হার্টবিট বেড়ে যাওয়া, অবসন্নতা, ফ্যাকাসে চামড়া, ভঙ্গুর চুল, শ্বাসকষ্ট, ঘুমের অসুবিধা ইত্যাদি আয়রনের ঘাটতির প্রধানতম লক্ষণ। আয়রন- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে অনেক গুণ বৃদ্ধি করতে সহযোগীতা করে। শরীরের রক্ত চলাচল প্রক্রিয়া তরান্নিত করে হিমোগ্লোবিন আর রক্তে হিমোগ্লোবিন তৈরি করে এই আয়রন। গর্ভবতী মা এবং শিশুর সুস্থতার জন্য আয়রন সমৃদ্ধ খাবার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিশেষ করে ডিম, কলিজা, বিভিন্ন ধরনের ডাল, শুকনা ফল, নানা ধরনের সামুদ্রিক মাছ, মটরশুঁটি, টমেটো, পালংশাক, কচু শাকে প্রচুর পরিমান আয়রন রয়েছে।

মনোযোগী হওয়া: জীবনে চলার পথে বিভিন্ন বাধা আসবেই তাহা পরিহার করে চলতে হবে। এছাড়া কাজকর্মে মনোযোগের ব্যাঘাত হলেই তা দ্রুত সারিয়ে তুলুন। সেক্ষেত্রে গান শুনা, কোথাও গুরতে যাওয়া,পরিবারের সবার সাথে আনন্দে মেতে উঠা,প্রিয় মানুষের সাথে সময় কাঠানো ইত্যাদি। জীবনে চলার পথে ছোট ছোট বিষয়গুলোকেও গুরুত্ব দিন ও নিজের কর্মের প্রতি মনোযোগী হউন।

শরীরকে প্রসারিত করা: অফিসে কাজ করছেন কিংবা অনেকক্ষণ ধরে কোথাও বসে আছেন। শরীরে অলসতা লাগছে। তখন দুই হাত মেলে শরীরকে যথাসম্ভব প্রসারিত করুন, একটু হাটুন, সম্ভব হলে লাল চা বা কপি পান করুন। এতে আপনার শরীরকে গতিশীল করবে ও রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা বাড়িয়ে দেবে। তবে অস্বস্তি হয় এমনভাবে বসে এই কাজটি করা থেকে বিরত থাকবেন।হাত পা একটু নড়াচড়া করুন।

ওজন নিয়ন্ত্রণ করুন: শুরুতে আপনার ওজন যদি বেশি বা কম হয়ে থাকে তাহলে আগে সেটি ঠিক করতে ব্যায়াম করুন। কারণ শরীরের ওজন ঠিক রাখা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কর্মক্ষম হতে এবং সুস্থ থাকতে এটিই সবার আগে জরুরী।

সময় মেপে ব্যায়াম করুন: যদি আপনি বেশি মোটা হন, শরীরের চর্বি কমানো ও ওজন কমানো জরুরী হয়ে পড়ে। তাহলে ইন্টারভাল অনুশীলন করুন অর্থাৎ শুরুতে একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ব্যায়াম করে পরে সময় কমাতে থাকুন আবার আস্তে আস্তে শুরুর জায়গায় ফিরে আসুন। এটি আপনাকে দ্রুত ওজন কমাতে সাহায্য করবে। যেমন ধরুন আপনি প্রথম পাঁচ মিনিট অনুশীলন করলেন, এরপর ৩০ সেকেন্ড দ্রুত দৌড়লেন, এরপর এক মিনিট জোরে হাঁটলেন এবং পরবর্তী পাঁচ মিনিটে শান্ত হলেন।

পায়ের নিচে পরিষ্কার রাখুন: সারাদিন কাজ করার পর বিশেষ করে যারা বাইরে এবং খোলা পায়ে কাজ করেন তাদের পায়ের নিচে ময়লা জমে। এটি ভালোভাবে পরিষ্কার না করলে তা জমে জমে পুরু হয়ে ওঠে এটি থেকে পরে ক্ষতের সৃষ্টি হতে পারে। এজন্য নিয়মিত পায়ের নিচে ভালোভাবে পরিষ্কার করুন এবং চলাচল বা কাজের সময় পা ফেলার জায়গা দেখে নিন।

একঘেয়েমি দূরে রাখুন: প্রতিদিন একই রুটিন অনুযায়ী কাজ করলে একঘেয়েমি দেখা দেয়। এজন্য আপনার নিত্যদিনের কাজে পরিবর্তন আনুন। খাবারসহ বিভিন্ন কিছুতে কয়েকদিন পরপর ভিন্নতা আনার চেষ্টা করুন। এগুলো আপনাকে একঘেয়েমি থেকে দূরে রাখতে পারে।

বিয়ার থেকে দূরে থাকুন: ব্যায়াম করার পর শান্ত হওয়া পর্যন্ত বিয়ার থেকে দূরে থাকুন। ব্যায়াম করার কমপক্ষে এক ঘণ্টা এটি থেকে বিরত থাকুন। কারণ এসময় বিয়ার পান করলে তা শরীরকে স্থূল করে দিতে পারে। সেসময় ফলের রস পান করলেও বিয়ার এড়িয়ে চলুন।

সঠিক নিয়মে ব্যায়াম করুন: কেউ যদি জিমে গিয়ে ব্যায়াম করেন বা কোনো ব্যক্তিগত প্রশিক্ষকের অধীনে ব্যায়াম করেন, তবে আপনাকে অবশ্যই সঠিক ব্যায়াম শিখতে হবে।

ধূমপান থেকে বিরত থাকুন: আপনি যদি ধূমপায়ী হন তবে তাকে না বলুন। শরীর সুস্থ রাখতে হলে শুরুতে এই কাজ থেকে বিরত হতে হবে। এটি হার্টকে দুর্বল করে দেয় এবং ক্যান্সারের জন্ম দেয়। এছাড়া ধূমপান হাড়ের ঘনত্ব এবং যৌনশক্তি কমিয়ে আনে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.