বিয়ের আগেই শারীরিক মিলনের প্রথা ভারতের যে জাতির
ODD বাংলা ডেস্ক: গোন্ড উপজাতি। এই উপজাতির এক অংশের নাম বাইসন হর্ন মারিয়া। মাথার উপর বাইসন মোষ এর শিং দিয়ে সাজানোর জন্য এই উপজাতিকে এমন নাম দেওয়া হয়েছে। এখন অনেকে বন মহিষের বদলে হরিণ বা অন্য কোনো প্রাণীর শিং ব্যবহার করেন।
এই সম্প্রদায়ে ধার্মিক শিক্ষা প্রায় নেই বললেই চলে। জীবন যাপন খুব সহজ সরল ভাবে কাটান। পোশাকে তথাকথিত সভ্য সমাজের কোনো পরিচয় নেই, একটি আদিম সম্প্রদায়ের যেরকম হয়ে থাকে অনেকটা সেরকমই। তবে তারা তাদের মানসিকতার দিক দিয়ে বিচার করলে তথাকথিত সভ্য ও শিক্ষিত কোনো সমাজের থেকে অনেক এগিয়ে। ভারতের ছত্তীসগঢ়ের জগদলপুরের এই জনগোষ্ঠীর বিশ্বাস, বিয়ের আগে নারী এবং পুরুষের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক আবশ্যক। সেই সম্পর্কে কেউ খুশি না হলে তারা বিয়ে করেন না।
তারা বিশ্বাস করেন, বিয়ের আগে নারী এবং পুরুষের শারীরিক সম্পর্কই দাম্পত্যের বন্ধন অটুট করে। তাই একে অপরের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনে খুশি হলে তবে নারী ও পুরুষের বিয়ে দেওয়া হয়। বিয়ের পরও যদি কারও অন্য কোনো নারী বা পুরুষকে ভালো লাগে, তখন তারা বিনা বাধায় বর্তমান সম্পর্ক ছেদ করতে পারেন।
তারা মনে করেন, ভালোবাসা না থাকলে সেই সম্পর্ক ধরে রাখার কোনো অর্থ নেই। তাই এক সঙ্গীকে ছেড়ে অন্য সঙ্গী বেছে নেয়ার স্বাধীনতা উভয়েরই আছে। এ ছাড়া বিয়ের আগে কোনো নারীর সন্তান হলে, তাকেও খুব স্বাভাবিকভাবে আপন করে নেয় পুরো পরিবার। আবার কোনো নারীর স্বামীর মৃত্যু হলে শ্বশুরবাড়ির লোকেরাই তার জন্য পাত্র খোঁজেন। জমকালো বিধবাবিবাহের আয়োজন করা হয়। এক ধরনের বিশেষ উৎসবও রয়েছে তাদের। যেখানে ঊর্ধ্বাঙ্গ অনাবৃত অবস্থায় পুরুষ ও নারীরা উল্লাসে মাতেন।
আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৩৮ সালে প্রকাশিত ব্রিটিশ আমলা ডাব্লিউভি গ্রিগসনের বইয়ের সূত্র ধরে সম্প্রতি এই জনগোষ্ঠীকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে। গ্রিগসনের লেখা দ্য মারিয়া গোন্ডস অব বস্তার দীর্ঘ দিন ধরে বিশ্বের নামী বিশ্ববিদ্যালগুলোর পাঠ্যক্রমে রয়েছে। সেই বই যাচাই করে দেখা গেছে, এখনও সেইসব নিয়ম মেনে চলে এই জনগোষ্ঠী।
তবে এই জনগোষ্ঠীর কথা যত ছড়িয়েছে তাদের জীবনযাত্রা দেখতে ভিড় বেড়েছে পর্যটকদের। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, ক্রমশ শহুরে সভ্যতা ও বিদেশি পর্যটকদের ভিড় এই জনগোষ্ঠীর মানুষের মনে অন্য রকম প্রভাব ফেলতে পারে।
Post a Comment