ঠাণ্ডা না গরম, শীতে শরীরের জন্য ভালো কোন জল?



 ODD বাংলা ডেস্ক:  শীতে অনেকে স্নান করতে ও হাত-মুখ ধুতে গরম জলের খোঁজ করেন। জানেন কি, ঠাণ্ডা জল ত্বকের জন্য বেশি উপকারী। জানালেন শোভন মেকওভার স্যালনের রূপ বিশেষজ্ঞ শোভন সাহা। লিখেছেন মোনালিসা মেহরিন।

বিজ্ঞাপনের সেই ‘বেসম্ভব ঠাণ্ডা’র ভয়ে শীতে প্রতিদিন স্নান করতে চান না এমন মানুষ কম নয়। কেউ কেউ হাত-মুখ ধোয়াও কমিয়ে দেন ঠাণ্ডা জলের অজুহাতে। তবে যতই শীত পড়ুক বা জল ঠাণ্ডা হোক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রতিদিনের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা খুবই জরুরি। যারা শীতল জলের অজুহাতে স্নান ও হাত-মুখ ধোয়া কমিয়ে দেন তাদের জানা দরকার, শীতল জলেরও অনেক উপকারিতা রয়েছে।


ব্যায়াম বা শরীরচর্চার পর শীতল জলে স্নান পেশির জন্য আরামদায়ক। ঠাণ্ডা জলের সংস্পর্শে শরীরের ক্লান্ত কোষগুলো সতেজ হয়ে ওঠে এবং ক্ষতিগ্রস্ত কোষগুলো পুনরায় মেরামত হয়। শরীরের রক্ত সঞ্চালন গতি বাড়ে। পেশির সক্ষমতা বাড়ে। রাতে ভালো ঘুম হয়। আমাদের স্নায়ুতন্ত্রে উদ্দীপনা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে ঠাণ্ডা জলের স্নান। শরীরে ঠাণ্ডা জলের স্পর্শ লাগা মাত্র সেই উদ্দীপনা বিদ্যুতের স্ফুরণের মতো সারা শরীরে পৌঁছে যায়। এ জন্য দেখা যায়, ঠাণ্ডা জলে স্নান কিছুটা কষ্টকর হলেও পরে শরীরে চনমনে ও ফুরফুরে ভাব অনুভূত হয়।


খুব সকালে ঠাণ্ডা জলে স্নান শরীরে সারা দিনের জন্য বুস্ট স্টার্ট এনে দেয়। সারা রাত ঘুমানোর পর দেহের কোষগুলো থাকে নির্জীব। কয়েক মিনিটের ব্যায়াম বা স্ট্রেচিংয়ের পর ঠাণ্ডা জলে স্নান ঘুমন্ত পেশিগুলো সতেজ করে তোলে। শরীরে রক্ত ও অক্সিজেনের প্রবাহ বাড়িয়ে তোলে। নিয়মিত ঠাণ্ডা জলে স্নানে শরীরের ভেতরে নানা পরিবর্তন হতে শুরু করে। এটা আমাদের শরীরকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন করে গড়ে তোলে। শুধু তাই নয়, শরীরের কর্মক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। ঠাণ্ডা জলে স্নান করার সময় আমাদের শরীর থেকে এন্ডোরফিন ও নোরাড্রেনালিন নামে কেমিক্যালের ক্ষরণ বাড়ে। এই দুটি কেমিক্যাল শরীর থেকে যত বেরিয়ে যেতে থাকে, তত আমাদের ক্লান্তি দূর হয়। শরীরের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে।


আমাদের ত্বক ও চুলের অন্দরে থাকা প্রাকৃতিক তেল যাতে বেশি মাত্রায় ক্ষরণ না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখে ঠাণ্ডা জল। ফলে ত্বক বা চুলের আর্দ্রতা কমে গিয়ে সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা কম থাকে। গরম জল শীতে আরামদায়ক এটা আমরা সবাই জানি। কিন্তু গরম জলে স্নান ও হাত-মুখ ধোয়ার অনেক বিরূপ প্রভাবও রয়েছে। গরম জল ত্বক ও চুলের আর্দ্রতা দ্রুত শুষে নেয়। এতে ভিতর-বাহির দুই দিক থেকেই শরীরের আর্দ্রতা কমে যায়। ত্বক ও চুল শুষ্ক হয়ে পড়ে। ঠাণ্ডা জলে স্নান বা হাত-মুখ ধুলে এমন আশঙ্কা নেই বললেই চলে।


কর্মব্যস্ত দিনের শেষে ক্লান্তি কাটাতেও জুড়ি নেই ঠাণ্ডা জলের। ঘরে ফিরে মুখে ঠাণ্ডা জলের ঝাপটা দিন। আরামবোধের পাশাপাশি ক্লান্তি কাটাতেও সাহায্য করবে। স্নানের পর শরীরের আর্দ্রতা ধরে রাখতে লোশন অথবা ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। একে তো ঠাণ্ডা জলে স্নান, তার ওপর ময়েশ্চারাইজারসমৃদ্ধ উপকারী লোশনের প্রলেপ দুই দিক থেকেই এই শীতে শরীর থাকবে সুরক্ষিত।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.