চুল রং করার আগে ও পরে যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেন
ODD বাংলা ডেস্ক: বান্ধবী তামান্না শারমিনের রঙিন চুলের প্রেমে পড়ে তাসফিয়া খন্দকার। তামান্নার কালো চুলে হঠাৎ স্বর্ণালি আভা দেখে সেও চুলের রং বদলের সিদ্ধান্ত নেয়। বাসার কাছের এক পার্লার থেকে চুল রং করে। প্রথম কিছুদিন সব ঠিকঠাক। এরপর হঠাৎ চুলের ভোল বদল। রং আগের মতো নেই। ফিকে হয়ে আসছে। শুধু তাই নয়, চুল আগের মতো স্বাভাবিক নেই। একটুতেই জট পাকিয়ে যায়। এরপর দক্ষ একজন রূপ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয় সে। জানতে পারে চুলের মর্জি না বুঝে রং করা হয়েছে। যে রং ব্যবহার করা হয়েছে সেটি খুব ভালো মানের ছিল না। এরপর রিবন্ডিং করে চুলকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনে তাসফিয়া। তার চুল রং করার সাধ সেই প্রথম, সেই শেষ।
তাসফিয়ার মতো যারা চুল রাঙাতে চান বা মনস্থির করেছেন তাদের দরকারি কিছু বিষয় মাথায় রাখা জরুরি। অনেকেই রঙিন চুলের এতই প্রেমে পড়েন যে প্রথমবারেই স্থায়ী রং করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন। এটা করা থেকে বিরত থাকুন। প্রথমে অস্থায়ী রং বেছে নিন। এই রং ধীরে ধীরে শেষ হয়ে চুল আগের অবস্থায় ফিরে আসে। যদি ভালো লাগে এবং নিজের সঙ্গে মানিয়ে যায় তাহলে স্থায়ী রঙের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
চুলের রং বদলে ন্যাচারাল ব্ল্যাক, জেট ব্ল্যাক, ব্রাউন, রেডিশ ব্রাউন, গ্রে, বার্গেন্ডি, লাইট হানি ব্রাউন, মিডিয়াম অ্যাশ ব্রাউন, মিডিয়াম গোল্ডেন ব্রাউন, ডার্ক অরবান, চেস্টনাটের মতো বিভিন্ন রং পাওয়া যায়। কোন রংটি আপনার ত্বক, মুখের গড়ন ও লুকের সঙ্গে মানায় সেটি আগে নিশ্চিত হয়ে নিন।
ভঙ্গুর চুলে রং করাতে যাবেন না। কারণ তা রং করার উপযোগী নয়। রং পুরোটাই রাসায়নিক উপাদান। এমন চুলে রং করলে ভালোর চেয়ে উল্টো ফল পাবেন। এ জন্য রং করার আগে চুলের স্বাস্থ্যের প্রতি নজর দিন। চুল যত স্বাস্থ্যকর ও ঝলমলে হয় তত ভালো রং ফোটে। রঙের স্থায়িত্ব বেশি হয়। রুক্ষ চুলে রং করাতে চাইলে আগে চুলের যত্ন নিন। প্রোটিন ট্রিটমেন্ট চুলের স্বাস্থ্য ফেরাতে বেশ কার্যকর। চাইলে হেয়ার স্পাও করিয়ে নিতে পারেন।
চুল রং করার আগে অবশ্যই একজন দক্ষ রূপ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। অনেকেই পাড়ার অলিগলির পার্লারে গিয়ে চুল রং করান। ছেলেদের অনেকেই সেলুন থেকে রং করান বা নিজে নিজে রং করেন। এমনটা করতে যাবেন না। আপনার ভাবনার চুলের রং চেহারার সঙ্গে নাও মিলতে পারে। এতে কিন্তু বুমেরাং হবে। এ ক্ষেত্রে একজন দক্ষ বিউটিশিয়ানই আপনাকে সবচেয়ে ভালো সাহায্য করতে পারবেন।
চুল রঙের ক্ষেত্রে সঠিক শেডটি বেছে নেওয়াও জরুরি। কারণ চুলের রঙের ক্ষেত্রে একই রঙের অনেক শেড পাওয়া যায়। দক্ষ না হলে কোন শেডটি কেমন চুলে ভালো মানাবে তা ভালো বোঝা যায় না।
এ তো গেল চুল রং করার আগের কথা। এবার আসুন পরের করণীয় নিয়ে। চুল রং করার পর অ্যালার্জি সমস্যায় পড়া অস্বাভাবিক নয়। কারণ রংগুলো নানা রাসায়নিক উপাদান দিয়ে তৈরি। এগুলো মাথার ত্বকের সংস্পর্শে এসে চুলকানি ও খোস-পাঁচড়ার সমস্যা তৈরি করতে পারে। কারণ ভালো মানের রঙের ক্ষেত্রেও ত্বকে অ্যালার্জি হতে পারে। এ জন্য আগে থেকে এ বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে নিন। চুল রং করার সময় এর গন্ধ থেকে শ্বাস-প্রশ্বাসেও সমস্যা হতে পারে। আবার রং করার সময় চোখে যাতে না লাগে সেদিকেও নজর রাখুন। কৃত্রিম রং চুলের স্বাভাবিক স্বাস্থ্যের ওপর বিরূপ প্রভাব সৃষ্টি করতে পারে। রং করা চুলের শুষ্কতার হারও বেশি। এ জন্য চুল রং করার পর বিউটিশিয়ানের দেওয়া পরামর্শ মেনে চলুন। পুষ্টিকর খাবার খাওয়া, নিয়মিত চুলের যত্ন নেওয়া ও রোদ-ধুলাবালি থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করুন।
Post a Comment