পিজ্জা-আইসক্রিম খেতে ঘরে ঢুকছে ভালুক, ধরতে গিয়ে হয়রান পুলিশ

 


ODD বাংলা ডেস্ক: প্রায় ৪০টি বাড়িতে হানা দেওয়া এক তস্করকে খুঁজছে ক্যালিফোর্নিয়া পুলিশ। তবে এই চোর মানুষ নয়, বিশালদেহী নাদুসনুদুস এক ভালুক। কালো ওই ভালুকটির নাম হ্যাঙ্ক দ্য ট্যাঙ্ক। গত ছয় মাস ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার নেভাডা সীমান্তে লেক তাহো অঞ্চলে ঘুরে বেড়াচ্ছে এই ভালুক।


হ্যাঙ্কের ওজন প্রায় ৫০০ পাউন্ড বা ২২৭ কেজি, যা স্বাভাবিক আকৃতির যেকোনো ভালুকের চেয়ে অনেক বেশি। খাবারের অভাব না হওয়ায় ভালুকটি এবছর শীতনিদ্রায় যায়নি বলেও ধারণা করা হচ্ছে।


কর্তৃপক্ষ বলছে ভালুকটিকে ইউথেনেশিয়ার মাধ্যমে যন্ত্রণাহীনভাবে চিরনিদ্রায় ঘুম পাড়িয়ে দিতে হবে, কেননা সে মানুষের আশেপাশে থেকে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে।


তবে, বন্যপ্রাণী সংগঠনগুলো হ্যাঙ্ককে নিরাপদে কোনো অভয়ারণ্যে পৌঁছে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।


তালাবদ্ধ ঘরসহ মানুষ বাস করে এমন সব বাড়িতে ঢুকে পড়ছে হ্যাঙ্ক। ক্যালিফোর্নিয়ার মৎস্য ও বন্যপ্রাণী বিভাগের মুখপাত্র পিটার টাইরা জানান, "ভালুকটি নিজের বিশাল শরীর ও শক্তির সাহায্যে বাড়িতে ঢোকা শিখে গেছে। গ্যারেজের দরজা, সামনের দরজা দিয়েও সে ঢুকে পড়ে। জানালা দিয়েও ঢুকতে পারে হ্যাঙ্ক।"


গণমাধ্যম তাকে 'কিং হেনরি' নামেও ডাকছে বলে জানিয়েছে সাউথ লেক তাহো পুলিশ বিভাগ। হ্যাঙ্ক যেন রাজা হেনরির মতোই বিশাল দেহ আর কালো পশমি কোট পরে ঘুরে বেড়াচ্ছে।


ভালুককে কাবু করতে সাধারণত বিন ব্যাগ মিউনিশন, সাইরেন এবং ড্রাই ফায়ারিং পুলিশ টিজার (ভালুক অপছন্দ করে এমন শব্দ তৈরি করে)  ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়। কিন্তু এসবের কোনোকিছুই হ্যাঙ্ককে আটকাতে পারেনি।


ভালুক নিয়ে কাজ করা স্থানীয় সংগঠন বিয়ার লীগ জানায়, মানুষের খাবারে অভ্যস্ত হয়ে পড়ায় হ্যাঙ্কের ওজন বেড়ে গেছে।


হ্যাঙ্ককে মেরে ফেলার পরিবর্তে নিরাপদে অভয়ারণ্যে পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছে তারা।


বিবিসিকে টাইরা বলেন, "অন্যান্য বন্য ভালুকের মতো হ্যাঙ্ক পিঁপড়া লিংবা বেরি ফলের ওপর নির্ভর করছে না। তাহোতে সারাবছরই পিজ্জা, আইসক্রিম কিংবা স্রেফ আবর্জনা ঘাটলেও উচ্চ ক্যালরিযুক্ত প্রচুর খাবার মিলবে। কয়েক ঘণ্টা গাছের গুঁড়ি খুটে খাওয়ার চেয়ে এই খাবারগুলো পাওয়া অনেক সহজ।"


পুলিশ ইতোমধ্যে হ্যাঙ্কের খবর নিয়ে ১৫০টিরও বেশি ফোনকল পেয়েছে। যে বাড়িগুলোতে হ্যাঙ্ক ঢুকেছে তার অনেকগুলোই সে তছনছ করে এসেছে।


স্থানীয় টিম জনসন নামের এক বাসিন্দা সিবিএস নিউজকে বলেন, "আমি ৪০ বছর ধরে এই শহরে থাকছি। আগে কখনো দরজা বন্ধ করে না রাখলেও এখন রাখতে হয়।"


গত শুক্রবার রাতে হ্যাঙ্কের সর্বশেষ হানা দেওয়ার খবর পাওয়া যায়। "আমরা তাদের যত কম খাওয়াব (মানুষের খাবার), এ ধরনের ঘটনা তত কম ঘটবে।"

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.