বিলিয়নেয়ার স্ত্রীদের ক্লাব! যারা সম্পদ বিলাচ্ছেন জনহিতকর কাজে

 


ODD বাংলা ডেস্ক: সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিলিয়নেয়ারদের বিচ্ছেদ ট্রেন্ড হয়ে গেছে। এই ট্রেন্ডের শুরু ২০১৯ সালে জেফ বেজোস ও ম্যাকেনজি স্কটের বিবাহবিচ্ছেদের মধ্য দিয়ে। তাদের অনুসরণ করে ২০২১ সালে এ পথে হাঁটেন বিল গেটস ও মেলিন্ডা ফ্রেঞ্চ গেটস।


সাবেক স্বামীরা যখন বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি হওয়ার ইঁদুর-দৌড়ে মশগুল, ম্যাকেনজি স্কট ও মেলিন্ডা গেটস তখন ব্যস্ত বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার দান করায়।


চলুন দেখে নেয়া যাক এই ক্ষমতাধর, ধনকুবের নারীরা কীভাবে বিভিন্ন সংস্থা ও মানুষের সাহায্যে এগিয়ে এসেছেন—এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে তাদের প্রাক্তন স্বামীদের চেয়েও এগিয়ে গেছেন।


ম্যাকেনজি স্কট


আমেরিকান ঔপন্যাসিক ও বিলিয়নেয়ার মানবদরদী ম্যাকেনজি স্কটের সঙ্গে অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী চেয়ারম্যান জেফ বেজোসের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায় ২০১৯ সালে। ২৫ বছরের দাম্পত্যজীবনের পর ছাড়াছাড়ি হয় তাদের। বিচ্ছেদের পর অ্যামাজনের ৪ শতাংশ শেয়ার পান ম্যাকেনজি—সে সময় এ শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ৩৫ বিলিয়ন ডলার।


বিশাল এই সম্পত্তি পাওয়ার পর থেকে ম্যাকেনজি ইতিমধ্যে সাড়ে ৮ বিলিয়ন ডলার দান করে দিয়েছেন বিভিন্ন সংস্থায়। এসব সংস্থা লিঙ্গ সমতা, বর্ণবাদের ন্যায়বিচার, জনস্বাস্থ্য ও অন্যান্য জনহিতকর কাজের সঙ্গে যুক্ত।


২০২২ সালেও দু-হাতে দান করে যাচ্ছেন ম্যাকেনজি। 'ভান্ডার যতক্ষণ খালি না হবে' ততক্ষণ দান করে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি। সেই প্রতিশ্রুতি অক্ষরে অক্ষরে পালনের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছেন এই মানবদরদী।


দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের তথ্যানুসারে, চলতি মাসেও ম্যাকেনজি একটি শিক্ষামূলক অলাভজনক সংগঠনে ১৩৩ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার দান করেছেন।


মেলিন্ডা ফ্রেঞ্চ গেটস


হাই-প্রোফাইল বিচ্ছেদের তালিকায় সাম্প্রতিকতম সংযোজন হলেন মেলিন্ডা ফ্রেঞ্চ গেটস। ১৯৯৪ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটসের সঙ্গে সংসার করেছেন তিনি। 


বিনিয়োগ কোম্পানি পিভটাল ভেনচারস-এর মাধ্যমে মেলিন্ডা গেটস চারটি সংস্থাকে ২০২১ সালে ৪০ মিলিয়ন ডলার দান করেন। সিএনবিসি জানিয়েছে, এই সংস্থাগুলো লিঙ্গ সমতা নিয়ে কাজ করে।


ইলেইন ওয়াইন


ওয়াইন রিজর্টস ও মিরেজ রিজর্টস নামক ক্যাসিনোর সহপ্রতিষ্ঠাতা, ধনকুবের স্টিভ ওয়াইনের প্রাক্তন স্ত্রী 'কুইন অভ লাশ ভেগাস' নামে খ্যাত ইলেইন ওয়াইন। ২০১০ সালে দ্বিতীয়বারের মতো এই যুগলের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। বিচ্ছেদের পর প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার নগদ অর্থ ও কোম্পানি শেয়ার পান ইলেইন।


গত বিশ বছরে বিলিয়নেয়ার ইলেইন শিক্ষা ও শিল্পের জন্য বিস্তর অনুদান দিয়েছেন। লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টি মিউজিয়াম অভ আর্ট-এ ৫০ মিলিয়ন ডলার অনুদান দিয়েছেন নতুন শিল্প সংগ্রহ গড়ে তোলার জন্য। নিউ ইয়র্কের অ্যালভিন এইলি আমেরিকান ড্যান্স থিয়েটারে ২৫ মিলিয়ন ডলার দিয়েছেন নাচের স্টুডিও ও ক্লাসরুম বানানোর জন্যে।


স্যু অ্যান আর্নাল


ম্যাকেনজি ও মেলিন্ডার মতোই স্যু অ্যান আর্নালও 'গিভিং প্লেজ'-এর সদস্য। ২০১৫ সালে তেল সম্রাট ও কন্টিনেন্টাল রিসোর্সেস-এর চেয়ারম্যান হ্যারল্ড হ্যামের সঙ্গে ২৬ বছরের বিবাহিত জীবনের ইতি টানেন স্যু। বিচ্ছেদকালে পান প্রায় ১ বিলিয়ন ডলারের একটি চেক।


দি ওকলাহোমান-এর প্রতিবেদন বলছে, ২০২১ সালে শিশুকল্যাণ ও ক্রিমিনাল জাস্টিস রিফর্মের জন্য স্যু ৮৫ মিলিয়ন ডলার দান করেন। 


স্যু তার 'গিভিং প্লেজ' চিঠিতে লিখেছিলেন: 


টাকায় সুখ কেনা যায় না, তবে মুক্তি কেনা যায়—আপনার নিজের, কিংবা আপনার সন্তানের, কল্যাণ বা খাবারের দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি; কিংবা স্রেফ আরও একটা দিন বেঁচে থাকার দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি। তাই আমি এই সম্পদ অত্যন্ত বিনয় ও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে গ্রহণ করছি। আর আমি চেষ্টা করব দারিদ্র্য, অবহেলা কিংবা পরিস্থিতির শিকার ভাগ্যাহতদের মুক্তি কেনার জন্য এই অর্থ ব্যবহার করতে।


কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.