জাদুঘর থেকে চিত্রশিল্পী ক্লদ মোনের ১.৪ মিলিয়ন ডলারের পেইন্টিং চুরির ব্যর্থ চেষ্টা

 


ODD বাংলা ডেস্ক:  গত রোববার নেদারল্যান্ডের একটি জাদুঘর থেকে চিত্রশিল্পী ক্লদ মোনের একটি মূল্যবান পেইন্টিং চুরি করার চেষ্টা চালায় দুই ব্যক্তি। তবে তাদের এ ডাকাতি ব্যর্থ হয়। এ ঘটনায় সন্দেহভাজনরা খালি হাতেই ফিরে গেছে বলে জানায় ডাচ পুলিশ।


আমস্টারডামের উত্তরে জান্দাম শহরে অবস্থিত জাঁস জাদুঘরে রোববার সকাল সাড়ে দশটার দিকে এ ডাকাতির চেষ্টা করা হয়। সিএনএন-এর অধিভুক্ত এনওএস জানায়, জাদুঘরের কর্মী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা এ অবস্থায় এগিয়ে এসে ডাকাতির প্রচেষ্টা ভণ্ডুল করে দেয়। সেসময় গুলি চালানো হলেও কেউ আহত হয়নি বলে জানানো হয় পুলিশের বিবৃতিতে।  


তারা আরও জানিয়েছে যে, ঘটনার পরপরই দুজন ব্যক্তি কালো স্কুটারে করে পালিয়ে যায়। তবে স্কুটার দুটি পরবর্তীতে উদ্ধার করেছে পুলিশ। কিন্তু ঐ দুজন ব্যক্তি এখনও পলাতক রয়েছেন। এ অবস্থায় সাক্ষীদেরকে তথ্য দেওয়ার জন্য ডাকা হচ্ছে। 


জাদুঘরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মারিয়েক ভারভেইজ সিএনএনকে ই-মেইলের মাধ্যমে বলেন, "এ ঘটনায় কেউ আঘাত পায়নি এবং ডাকাতেরা কিছু চুরি করতে পারেনি। এটি আমাদের জন্য স্বস্তির।"এ ঘটনায় জাদুঘরের কর্মীরা 'অত্যন্ত হতবাক' বলে জানান তিনি।


এ অবস্থায় সোমবার জাদুঘরটি সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়, কিন্তু মঙ্গলবারই দর্শনার্থীদের জন্য পুনরায় খুলে দেওয়া হয় এটি। তবে চুরি করতে আসা পেইন্টিংটি 'মনে ইন জান্দাম' প্রদর্শনী থেকে সরানো হয়েছে। জাদুঘর কর্তৃপক্ষ ই-মেইলে জানায় যে, মোনে'র তৈলচিত্র 'দ্য ভুরজান অ্যান্ড দ্য ওয়েস্টারহেম'-এ কোনো প্রকারের ক্ষতি হয়েছে কি না তা বর্তমানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে।


ভারভেইজ বলেন, "আমরা বর্তমানে তদন্ত করছি যে পেইন্টিংটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কি না। অর্থাৎ এ মুহূর্তে এটি প্রদর্শন করতে পারছি না আমরা"।


নেদারল্যান্ডের জান নদীর তীরে ভাসমান নৌকা সম্বলিত প্রাকৃতিক দৃশ্যের এ পেইন্টিং ২০১৫ সালে ১.১৫ মিলিয়ন ইউরো (১.৩৬ মিলিয়ন ডলার) মূল্যে কিনেছিল জাঁস জাদুঘর।


১৮৭১ সালে জান্দাম ভ্রমণের সময় নদীর এ দৃশ্যটি এঁকেছিলেন মনে। হোটেলের জেটি থেকে নদীর দৃশ্য দেখার মত করে আঁকা এ তৈলচিত্রটি মোনে তার স্ত্রী ও ছেলের সাথে চার মাস একটি হোটেলের জেটিতে বসবাসরত সময়েই এটি এঁকেছিলেন। জাদুঘরের মতে, মোনের জন্য জান্দাম শহর একটি অনুপ্রেরণার উৎস। শহরটি নিয়ে এ ফরাসি শিল্পীর ২৫টি পেইন্টিং ও ৯টি স্কেচই তা প্রমাণ করে বলে উল্লেখ করেন তারা।


তার সহশিল্পী এবং একজন ইম্প্রেশনিস্ট চিত্রশিল্পী ক্যামিল পিসারোকে লেখা একটি চিঠিতে জান্দামের কথা লিখেছিলেন ক্লদ মোনে। শহরটির উইন্ডমিল, রঙিন বাড়িঘর এবং 'আনন্দদায়ক নৌকা'র কথা উল্লেখ করে তিনি বলেছিলেন এখানে 'আজীবন পেইন্টিং তৈরির জন্য যথেষ্ট' কিছু রয়েছে। এমনকি তার 'দ্য ভুরজান অ্যান্ড দ্য ওয়েস্টারহেম' তৈলচিত্রেও লাল রঙের ছাদযুক্ত বাড়িগুলোর পেছনে দেখা যায় উঁচু উইন্ডমিল।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.