জীবিত উদ্ধার ‘রেড কোরাল কুকরি’ ঠাকুরগাঁওয়ে বিরল প্রজাতির



 ODD বাংলা ডেস্ক: বাংলাদেশে ষষ্ঠবার ও ঠাকুরগাঁওয়ে প্রথমবারের মতো জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে বিরল প্রজাতির ‘রেড কোরাল কুকরি’ সাপ।


বৃহস্পতিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে সদর উপজেলা ভুল্লী বড় বালিয়া থেকে জয়নাল নামে এক ব্যক্তি সাপটিকে রাস্তা থেকে উদ্ধার করেন।


উদ্ধারকারী জয়নাল বলেন, ‘বাসার সামনের রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাবার সময় সাপটি দেখতে পাই। এর আগে বিভিন্ন সংবাদমাধম্যে দেখে জানতে পেরেছি এটা বিরল প্রজাতির একটি সাপ। তাই সঙ্গে সঙ্গে সাপটি আটক করে প্রশাসন ও সংবাদকর্মীদের খবর দিয়েছি।,


বন্যপ্রাণী সংরক্ষক ও উদ্ধারকারী সহিদুল ইসলাম (বিএসএস) ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘স্থানীয়রা সাপটিকে দেখতে পেয়ে না মেরে আটক করেন এবং আমাকে খবর দেন। আগামীকাল (শুক্রবার) সেখানে গিয়ে সাপটিকে উদ্ধার করব। এরই মধ্যে এই সাপটি বাংলাদেশে রেকর্ডসহ আন্তর্জাতিক গবেষণাপত্রে প্রকাশ পেয়েছে। মানুষ এখন মোটামুটিভাবে সচেতন হয়েছেন। সাপ দেখলে না মেরে উদ্ধারকারীকে ফোন দিচ্ছেন তারা।’


ঠাকুরগাঁও সদর উপজেরা নির্বাহী অফিসার আবু তাহের মোহাম্মদ সামসুজ্জামান বলেন, ‘সাপ উদ্ধারের খবর শুনেছি। বিরল প্রজাতির সাপটি সংরক্ষণের জন্য বন্য ও প্রাণী অধিদপতরকে দ্রুত বার্তা পাঠানো হবে।’


এর আগে, পুরো পৃথিবীতে মাত্র ২৫ বার এ সাপের দেখা মিলেছে বলে জানা গেছে। গত তিন মাসে দেশে পাঁচবার দেখে মিলেছে এ সাপের। পাঁচবারেই দেখা মিলেছে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে। গত ৭ ফেব্রুয়ারি পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার এক বাজারের কাছে একটি নির্মাণাধীন ভবন থেকে আহত অবস্থায় বাংলাদেশে প্রথমবার পঞ্চগড়ে উদ্ধার হয় এই সাপ। পরে ২৬ ফেব্রুয়ারি সদর উপজেলার চাকলাহাট এলাকা থেকে দ্বিতীয়বারের মতো মৃত অবস্থায়, ২০ এপ্রিল টুনিরহাট এলাকা থেকে তৃতীয়বার জীবিত এবং ১০ মে একই এলাকা থেকে চতুর্থবার মৃত অবস্থায় উদ্ধার হয় এই সাপ।


উল্লেখ্য, রেড কোরাল কুকরি বিরল প্রজাতির একটি সাপ। উজ্জ্বল কমলা ও প্রবাল লাল বর্ণের এই প্রজাতিটির বৈজ্ঞানিক নাম ওলিগোডন খেরেনসিস (Oligodon Kheriennsis)। ১৯৩৬ সালে উত্তর প্রদেশের খেরি বিভাগের উত্তরাঞ্চল থেকে এই সাপ আবিষ্কৃত হয়। এই সাপটি অত্যন্ত মোহনীয়। লাল প্রবাল সাপটি মৃদু বিষধারী ও অত্যন্ত নিরীহ। সাপটি পৃথিবীর দুর্লভ সাপদের একটি।


পৃথিবীতে হিমালয়ের পাদদেশের দক্ষিণে ৫৫ আর পূর্ব-পশ্চিমে ৭০ কিলোমিটার এলাকায় এটি দেখা যায়। সাপটি নিশাচর এবং বেশির ভাগ সময় মাটির নিচেই থাকে। সম্ভবত মাটির নিচে কেঁচো ও লার্ভা পিপড়ার ডিম ও উইপোকার ডিম খেয়ে জীবন ধারণ করে। নরম মাটি পেলে মাটি খুঁড়ে ভেতরে চলে যাওয়ার প্রবণতা রয়েছে এটির। মাটির ভেতরে থাকার জন্য রোসট্রাল স্কেল ব্যবহার করে এটি। রোসট্রাল স্কেল হলো সাপের মুখের সম্মুখ ভাগে অবস্থিত অঙ্গবিশেষ, যার সাহায্যে মাটি খনন করে। এ সাপটি পূর্ণ বিষধর হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।


কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.